পাকিস্তান
২২ ডিসেম্বর ২০১২মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ কোরান পুড়িয়ে একদিকে ধর্মের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে উগ্রতার পরিচয় দিয়েছে এক ব্যক্তি৷ আর তার জবাবে উত্তেজিত জনতা সেই ব্যক্তিকে বিচারের মুখোমুখী না করে বরং নিজ হাতে আইন তুলে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার মধ্য দিয়ে উগ্রতার পরিচয় দিল৷ স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে জার্মান বার্তা সংস্থা ডিপিএ জানিয়েছে, কোরান পোড়ানোর কারণে অজ্ঞাত এক ব্যক্তিকে স্থানীয় জনতা প্রথমে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে৷ কিন্তু পরে এক ধর্মীয় নেতার উপস্থিতিতে সেই পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালায় প্রায় দুইশ' মানুষের একটি দল৷ তারা পুলিশের হেফাজত থেকে ঐ ব্যক্তিকে বের করে এনে জনসম্মুখে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে৷
সিন্ধ এক্সপ্রেস নামক পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় ধর্মীয় নেতা উসমান মেমুন জানিয়েছেন, ঐ ব্যক্তি সফরকারী সেজে বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় একটি মসজিদে অবস্থান করেন৷ রাতের বেলা তিনি মসজিদে থাকা বেশ কিছু কোরানের কপি পুড়িয়ে ফেলে৷ সকালে স্থানীয় মানুষ এটি জানার পর তাকে ধরে পুলিশের কাছে দেয়৷ স্থানীয় পুলিশ প্রধান গুলাম মুস্তফা তুনিও জানিয়েছেন, ঐ ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে ইতিমধ্যে কয়েক ডজন মানুষকে আটক করা হয়েছে এবং পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বে থাকা সদস্যদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷
পাকিস্তানে অবশ্য এমন ঘটনা নতুন নয়৷ গত জুলাই মাসে বাহাওয়ালপুরে এক ব্যক্তি কোরানের অবমাননা করায় তাকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল৷ এছাড়া বেসরকারি হিসাবে, ১৯৮৬ সালে ধর্মীয় অবমাননার অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তির বিধান করে আইন প্রণয়নের পর থেকে এখন পর্যন্ত এমন ঘটনায় অন্তত ৪০ জন খুন হয়েছে৷
এদিকে, শনিবার রাতে অপর এক ঘটনায় ইরানের সীমান্তবর্তী পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশে বন্দুকধারীদের গুলিতে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছে৷ প্রাদেশিক সচিব আকবর দুররানি জানিয়েছেন, ‘‘তিনটি মটর সাইকেলে চড়ে ছয় জন অস্ত্রধারী গাদার জেলার সুন্তসার দোস্ত এলাকায় অবৈধ অভিবাসীদের একটি দলের উপর হামলা চালায়৷ আমরা ঘটনাস্থল থেকে ১১টি মরদেহ উদ্ধার করেছি৷ অভিবাসীরা তিনটি গাড়িতে করে ঐ পথ দিয়ে যাচ্ছিল৷''
গাদার জেলার প্রশাসনিক প্রধান সোহেল রহমান জানিয়েছেন, ‘‘নিহতদের মধ্যে সাত জন পাকিস্তানি এবং চার জন আফগান বলে ধারণা করা হচ্ছে৷'' জানা গেছে, ইরানের সারাবান প্রদেশ এবং পাকিস্তানের গাদার জেলার ঐ পথ দিয়ে মানবপাচারকারীরা ইরান ও তুরস্ক হয়ে ইউরোপে অবৈধ অভিবাসী পাচার করে থাকে৷ এখন পর্যন্ত কোন গোষ্ঠী এই হত্যাকাণ্ডের দায়িত্ব স্বীকার করেনি৷
এএইচ / আরআই (ডিপিএ, এএফপি)