1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পাকিস্তানে রোহিঙ্গাদের দুর্দশা

২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

পাকিস্তান সরকার ও ইসলামি দলগুলো রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর অত্যাচারের তীব্র সমালোচনা করেছে৷ কিন্তু পাকিস্তান তাদের দেশের রোহিঙ্গাদের সাথে ঠিক কী ধরনের ব্যবহার করছে? এই রোহিঙ্গারা কয়েক দশক ধরে পাকিস্তানে বসবাস করছে৷ 

https://p.dw.com/p/2kexd
Pakistan Rohingyas in Karachi
ছবি: DW/S. Meer Baloch/Z. Musyani

করাচির আরাকানাবাদ এলাকায় থাকেন রোহিঙ্গা মুফিজুর রেহমান৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা হলেও বাংলায় কথা বলতে পারেন তিনি, এ কারণে স্থানীয়রা তাকে বাঙালি বলেই মনে করে৷ ‘‘তারা আমাকে পাকিস্তানি হিসেবে মেনে নেয় না৷'' জানালেন মুফিজুর৷ আরাকানাবাদের নাম হয়েছে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের নাম অনুসারে, যা বর্তমানে রাখাইন রাজ্য নামে পরিচিত৷ গত মাসের শেষের দিকে সেখানে সেনা অভিযানের কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ৪ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা৷

মিয়ানমার ও বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া এবং সৌদি আরবেও রোহিঙ্গারা বসবাস করছেন৷ পাকিস্তানে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা আড়াই লাখ হতে পারে বলে ধারণা করা হয়৷ সাম্প্রতিক সহিংসতা শুরুর পর পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে রোহিঙ্গা নিপীড়নের প্রতিবাদ জানিয়েছে৷ কিন্তু মুসলিম অধ্যুষিত পাকিস্তানে তাদের সাথে যে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়, তাতে এই প্রতিবাদ এক ধরনের ভণ্ডামি ছাড়া যেন কিছুই নয়!

Infografik Rohingya Bevölkerung ENG

নাসির আহমেদ আর একজন রোহিঙ্গা, যিনি আরাকানাবাদ বস্তিতে থাকেন৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে জানালেন, ‘‘আমরা বস্তিতে থাকি৷ এখানে জীবনযাপন ভয়াবহ৷'' একজন মানুষের যেসব মৌলিক সুযোগ-সুবিধা থাকা দরকার, তা এখানে নেই৷ আরাকানাবাদে নেই কোনো হাসপাতাল৷ ভাঙাচোরা বাড়িতে থাকেন তাঁরা, ছোট ছোট বাড়িতে অনেক মানুষ একসাথে থাকতে হয়৷ একটা ছোট্ট অ্যাপার্টমেন্টে মুফিজুর রেহমান আরো ২০ জন রোহিঙ্গার সঙ্গে থাকেন৷

বার্মিজ মুসলিম কল্যাণ সংস্থার সভাপতি নূর হুসাইন আরকানি জানালেন, আরাকানাবাদেই অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গার বাস৷ এদের বেশিরভাগই জেলে, কেউ কেউ পোশাক কারখানায় কাজ করে৷ মুফিজুর জানালেন, ‘‘আমি কখনো মিয়ানমারে ছিলামই না৷ আমার বাবা মিয়ানমার থেকে পাকিস্তানে এসেছিলেন৷ কিন্তু আমি টেলিভিশনে দেখেছি মিয়ানমারে কী ঘটছে৷''

রহমত আলী
‘পাকিস্তানিদের কাছে আমরা বাঙালি এবং শরণার্থী’ছবি: DW/S. Meer Baloch/Z. Musyani

অপর একজন রোহিঙ্গা রহমত আলীর বয়স ৭৫ বছর৷ ৭০ এর দশকে তিনি মিয়ানমার থেকে পাকিস্তানে এসেছিলেন৷ তিনি জানালেন এখনকার পরিস্থিতি সেসময়ের চেয়ে ভয়ংকর৷ তবে এও বললেন পাকিস্তানে থাকাটাও অনেক কষ্টকর৷ জানালেন, ‘‘আমি রাখাইনে থাকতাম, গণহত্যা শুরু হলে ৭০ এর দশকের শুরুতেই বাংলাদেশ হয়ে পাকিস্তানে পালিয়ে আসি৷ আমার এক মেয়ে জোহরা খাতুন এখনও ঢাকায় থাকে৷'' আলী বললেন, ‘‘আমি পাকিস্তানে আছি ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে, কিন্তু পাকিস্তান আমাকে নিজ দেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে নেয়নি৷ পাকিস্তানিদের কাছে আমরা বাঙালি এবং শরণার্থী৷''

তাঁর মতো আরও অনেক রোহিঙ্গা জানালেন যে পাকিস্তানে সরকারি চাকুরিতে আবেদন করার অনুমতিও তাঁদের নেই৷ এমনকি জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হয় না তাঁদের৷ করাচির এক রিকশাওয়ালাকে রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘পাকিস্তানে রোহিঙ্গাদের কোনো স্থান নেই৷ তারা ভারতের গুপ্তচর৷ আমাদের দেশ থেকে তাদের বের করে দেয়া উচিত৷ কর্তৃপক্ষ তাদের সাথে সঠিক আচরণই করছে৷ তারা তো পাকিস্তানি না৷''

শাহ মীর বালোচ/এপিবি

প্রতিবেদনটি কেমন লাগলো, লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান