1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পাকিস্তানে স্তন ক্যানসার

২৩ জানুয়ারি ২০১৪

এশিয়ার মধ্যে স্তন ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি পাকিস্তানে৷ অথচ দেশটিতে চিকিৎসার সুব্যবস্থা নেই, ‘স্তন' শব্দটি প্রকাশ্যে উচ্চারণ করাও সেখানে কঠিন৷ কিছুদিন ধরে অবশ্য অবস্থা বদলানোর চেষ্টা শুরু হয়েছে দেশটিতে৷

https://p.dw.com/p/1AvNb
Symbolbild Brustkrebsvorsorge
ছবি: picture alliance/CHROMORANGE

পাকিস্তানে প্রতি বছর স্তন ক্যানসারে কতজন নারী আক্রান্ত হন – এর সঠিক হিসাব কারোই জানা নেই৷ জানার উপায়ও নেই, কেননা, সরকারিভাবে এ বিষয়ে কোনো তথ্য সংগ্রহ করা হয় না৷ তথ্য সংগ্রহ করাটাও কঠিন৷ পাকিস্তানে ‘স্তন' শব্দটিকে দেখা হয় যৌনতা সংশ্লিষ্ট শব্দ হিসেবে৷ প্রকাশ্যে কেউ এ শব্দ উচ্চারণ করতে চায় না৷ স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হলে লোকলজ্জার ভয়ে কেউ চিকিৎসা নিতে হাসপাতালেও যেতে চান না৷ ফলে দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশে স্তন ক্যানসারের রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে৷ প্রতি বছর দেশটিতে গড়ে অন্তত ৪০ হাজার নারী স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হন বলে ধারণা করা হয়৷

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও প্রতি বছর ৪০ হাজারের মতো নারী স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হন৷ তবে পাকিস্তানের জনসংখ্যা যেখানে ১৮ কোটি, সেখানে যুক্তরাষ্ট্রে এ মুহূর্তে কমপক্ষে ৩১ কোটি মানুষের বাস৷ যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে সর্বাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা, সাধারণ নারীরা এ রোগের বিষয়ে বেশ সচেতন, অথচ পাকিস্তানে ঠিক উল্টো চিত্র৷ সরকারি-বেসরকারি কোনো হাসপাতালেই চিকিৎসার সুব্যবস্থা নেই৷ রোগটি সম্পর্কে সচেতনতা এখনো প্রায় শূন্যের কোঠায়৷ রাওয়ালপিন্ডি জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৬০০ নারীকে সাধারণ কিছু প্রশ্ন করে দেখেছে, স্তন ক্যানসার হয়েছে কিনা তা যে নিজে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন তা শতকরা ৮৮ ভাগ নারীই জানেন না আর ৭০ ভাগ নারীর স্তন ক্যানসার কেমন রোগ সেই ধারণাই নেই!

Gesundheit Gesundheitswesen Medizin Früherkennung Brustkrebs
পাকিস্তানে ‘স্তন' শব্দটিকে দেখা হয় যৌনতা সংশ্লিষ্ট শব্দ হিসেবেছবি: Fotolia/Forgiss

সচেতনতা বাড়ানোর কিছু উদ্যোগ এখন শুরু হয়েছে পাকিস্তানে৷ তবে ‘পিংক রিবন' নামের একটি সংস্থা কাজ করতে নেমে দেখেছে কুসংস্কারের কারণে সচেতনতা বাড়ানোও অনেক ক্ষেত্রে প্রায় অসম্ভব৷ মেয়েরা এখনো প্রকাশ্যে স্তন বা স্তন ক্যানসার নিয়ে আলোচনায় অংশ নিতেই প্রস্তুত নয়৷ কখনো অংশ নিলে স্তন শব্দটি উচ্চারণ না করে তাঁরা রোগটিকে বলেন ‘মেয়েদের ক্যানসার'৷ পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে শহরের ছাত্রীরা অংশ নিয়েছিল৷ তবে আলোচনা শুরুর আগে হলরুম থেকে পুরুষদের বের করে দেয়ার দাবি তোলেন তাঁরা৷ পুরুষের সামনে স্তন ক্যানসার নিয়ে কথা বলাকে এখনো স্বাভাবিক হিসেবে মানতে না পারার কারণেই এ দাবি তুলেছিলেন তাঁরা৷

তবে সম্প্রতি পাকিস্তানে স্তন ক্যানসার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজে এগিয়ে এসেছে বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা৷ ‘পিংক রিবন'-ও করছে এ কাজ৷ স্তন ক্যানসারের সঙ্গে লড়ছেন এমন কয়েকজন নারীও এগিয়ে এসেছেন৷ সামিরা রাজা তাঁদেরই একজন৷২০০২ সালে স্তন ক্যানসার ধরা পড়ে তাঁর৷ তারপর থেকে চিকিৎসা নিতে শুরু করায় এখন তিনি প্রায় সুস্থ৷ নিজে সুস্থ হয়েই নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকেননি৷ কেমোথেরাপি নেয়ার সময় তিনি নির্বাচনে অংশ নেন৷ নির্বাচিত হওয়ার পর সাংসদ হয়ে স্তন ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছেন৷ নারীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ তো চলছেই, পাশাপাশি পাকিস্তানের সব নারীর জন্য বছরে অন্তত একবার স্তন ক্যানসার হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখা বাধ্যতামূলক করার আইন প্রণয়নেরও চেষ্টা করছেন তিনি৷

এসিবি/ডিজি (এপি, এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য