গাছ দেখাশোনার লোক লাগে
২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩ট্র্যাক্টরের বদলে ঘোড়ায় টেনে কাঠের গুঁড়ি সরানো হয়, কেননা গাড়ির ভারী চাকায় মাটির ক্ষতি হয়, বনের ক্ষতি হয়৷ বনবিভাগের কর্মীরা সব গাছ কেটে ফেলছেন না – শুধুমাত্র রুগ্ন গাছ আর ঝোপঝাড় কেটে বনটাকে সুস্থ, সাফসুতরো রাখছেন৷ বিগত ৪০ বছরে জার্মানিতে জঙ্গল বেড়েছে দশ লাখ হেক্টর৷ জার্মানরা আজ যতো না গাছ কাটেন, তার চেয়ে বেশি গাছ লাগান৷
কোলোন পৌর বনানি প্রশাসনের মার্কুস বৌমান বলেন: ‘‘জার্মানিতে আসল ব্যাপারটা হলো, এখানে সংরক্ষণের কড়া নিয়মকানুন আছে; পরিবেশের সুরক্ষা সংক্রান্ত ভালো আইন আছে৷ যেখানে বনানি সত্যিই কাজের, সেখানে আরো বেশি বনজঙ্গল যোগ করা হয়৷''
কোলোন শহরে পার্কের মধ্যে এই জঙ্গলটির মালিক হলেন পৌর কর্তৃপক্ষ স্বয়ং৷ কাছের বন শহরের সবুজ অংশটা আরো বড়৷ রাইনের উপত্যকা ছেড়ে বাঁ তীরে উঠলেই কটেনফর্স্ট বলে যে জঙ্গল আছে, তার আয়তন মোট এক হাজার বর্গকিলোমিটার৷ সে জঙ্গলের দেখাশোনা করার দায়িত্ব মালিকের, যেমন এখানে শহর কোলোনের৷
জার্মানিতে যে কেউ জঙ্গলের মালিক হতে পারেন: ফেডারেল সরকার কিংবা কোনো রাজ্য সরকার, কোনো শহর কিংবা কোনো ব্যক্তি৷ কিন্তু সকলকেই জার্মান পরিবেশ আইন মেনে চলতে হবে৷ বৌমানের ভাষায়: ‘‘জঙ্গলের ব্যাপারে জার্মানিতে আইন খুবই কড়া৷ ফেডারেল এবং রাজ্য আইনে পরিষ্কার করে বলে দেওয়া আছে, জঙ্গলের মালিক কী করতে পারে অথবা পারে না৷ ব্যাপকভাবে গাছ কাটা, একবারে সব কাঠ কেটে নেওয়া চলবে না৷ জঙ্গলের কতোটা একবারে কাটা চলবে, তা বলে দেওয়া আছে৷ কাঠ কাটা চলবে, কিন্তু টেকসই ভাবে: ঠিক ততোটাই কাটা চলবে, যতোটা আবার গজাবে৷''
জার্মানির জঙ্গলগুলির প্রায় অর্ধেক আসলে ব্যক্তিগত, বেসরকারি মালিকানায়৷ বহু জঙ্গল এলাকা বহু প্রজন্ম ধরে একই পরিবারে রয়েছে৷ বেসরকারি ব্যক্তি হিসেবে আজও জঙ্গল কেনা সম্ভব৷
জার্মান বনানি সুরক্ষা সমিতির কার্যনির্বাহী পরিচালক ক্রিস্টফ রুলমান বলেন: ‘‘ক্রমেই আরো বেশি পৌর প্রশাসন তাদের নিজস্ব মালিকানার জঙ্গল বেচে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, বিশেষ করে তা যদি আয়তনে ছোট হয়৷ জঙ্গলের ঠিকমতো দেখভাল হওয়ার জন্য, তার কাঠ কাটা ও বেচার জন্য জঙ্গলের আয়তন একটা বিশেষ মাপের হওয়া চাই৷ নয়তো পরিচর্যার খরচ পোষায় না৷''