পার্লামেন্টের বিষয়েও বিচার করা যায়: পাক সুপ্রিম কোর্ট
৭ এপ্রিল ২০২২গত তিনদিন ধরে শুনানি চলার সময় বারবার এই প্রশ্নটি সামনে এসেছে। পার্লামেন্টের কোনো বিষয়ে, ডেপুটি স্পিকারের রায় নিয়ে আদালত কি বিচার করতে পারে? এই প্রশ্নের উপরই দাঁড়িয়ে আছে আরেকটি প্রশ্নের জবাব, সুপ্রিম কোর্ট কি আদৌ ডেপুটি স্পিকারের রায় খতিয়ে দেখতে পারে? বুধবারও প্রেসিডেন্ট আলভির তরফে আইনজীবী আলি জাফর এবং ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ(পিটিআই)-এর আইনজীবী বাবর আওয়ান একই প্রশ্ন তোলেন।
তারই জবাবে প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, যদি সংবিধান ভঙ্গ হয়, তাহলে পার্লামেন্ট বা ডেপুটি স্পিকারের নির্দেশের বিচার করতে পারবে সুপ্রিম কোর্ট। তাদের সেই অধিকার আছে।
পাকিস্তানের সংবাদপত্র ডন জানাচ্ছে, প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, স্পিকার কোনো তথ্য না দিয়ে কি এভাবে রুলিং দিতে পারেন? তিনি বাবর আওয়ানকে জানাতে বলেন, স্পিকার কি সভার কর্মসূচির বাইরে গিয়ে কোনো রুলিং দিতে পারেন? এটা কি সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ ভঙ্গ করা নয়?
সুপ্রিম কোর্ট বুধবার ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের বৈঠকের মিনিটস চেয়ে পাঠিয়েছে। বিচারপতিরা দেখতে চান, যে বিদেশি শক্তির চক্রান্তের কথা বলে ডেপুটি স্পিকার অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছেন, সেই চক্রান্ত নিয়ে ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে? ইমরান খানের সিদ্ধান্তের ভবিষ্যৎ এখন সুপ্রিম কোর্টের হাতে।
ডেপুটি স্পিকার ও সরকারের তরফে দুই আইনজীবী এখনো তাদের কথা আদালতে বলেননি। তারা বলার পর সম্ভবত শুনানি শেষ হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রায় যদি ইমরানের পক্ষে যায়, তাহলে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হবে, আর রায় তার বিপক্ষে গেলে আবার অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ও ভোটাভুটি হবে।
কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী নিয়ে
কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়েও বিরোধ তুঙ্গে। যতক্ষণ কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ না হচ্ছে, ততদিন ইমরান খান প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। এরপর কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রীর অধীনে ভোট হবে।
পাকিস্তানের সংবাদপত্র এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে সূত্র জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি বিষয়টি নিয়ে আইনজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। সেই বৈঠকে অ্যাটর্নি জেনারেল সহ অনেক আইনজ্ঞ উপস্থিত ছিলেন। বিরোধীদের কাছ থেকে নাম জানতে চাওয়া হয়েছিল। তারা সাবেক বিচারপতি মকবুল বাকিরকে চায় বলে সূত্র জানিয়েছে।
পাঞ্জাবেও নাটক
পাকিস্তানের পাঞ্জাবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচন ছিল গতকাল। কিন্তু সেখানেও ডেপুটি স্পিকারের নির্দেশে অ্যাসেম্বলি বন্ধ করে রাখা হয়। বাইরে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ভিতরে ঢুকতে না পেরে বিরোধী সদস্যরা একটি হোটেলে গিয়ে হামজা শেহবাজকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নির্বাচিত করেছেন।
কিন্তু আইনসভার বাইরে একটি হোটেলে শুধুমাত্র বিরোধী সদস্যদের উপস্থিতিতে এই নির্বাচন সংবিধানসম্মত কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে।
জিএইচ/এসজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স, দ্য ডন)