পুটিনের ‘তুরুপ' বাশার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫নিউ ইয়র্কে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন ভাষণ দেবেন৷ সাক্ষাৎ হবে দু'জনের৷ দু'বছরের মধ্যে এই প্রথম মুখোমুখি হবেন তাঁরা৷
তাঁদের বক্তব্যে যে মধ্যপ্রাচ্য সংকট, জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএস এবং বাশার আল-আসাদ প্রসঙ্গ আসবে তা মোটামুটি নিশ্চিত৷ এ সব প্রসঙ্গে নিজের অবস্থান আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন পুটিন৷ ইউক্রেন সংকট জটিল রূপ ধারণ করার পর থেকে পাশ্চাত্যের দেশগুলোর সমালোচনার মুখে এতদিন একরকম কোণঠাসাই ছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট৷ ইউরোপে অনেকটা ‘একঘরে' হয়ে পড়েছিল রাশিয়া৷ নাটকীয়ভাবে অবস্থা বেশ পাল্টে দিয়েছেন পুটিন৷
সিবিএস নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পুটিন বলেছেন, আইএস বিরোধী যুদ্ধে জয় পেতে হলে সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতায় রাখতেই হবে৷ এদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানিও বলেছেন, সিরিয়ায় শাসক পর্যায়ে পরিবর্তনের দরকার আছে, তবে এখনই তা আবশ্যক নয়৷ রোহানিও মনে করেন, আইএসকে পরাস্ত না করা পর্যন্ত বাশার আল-আসাদের প্রয়োজন অনস্বীকার্য৷
এদিকে সিবিএস নিউজ চ্যানেলের ‘সিক্সটি মিনিটস' নামের এক অনুষ্ঠানে পুটিন জানিয়েছেন, আইএস বিরোধী যুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বিত একটি প্রয়াস চালাতে যাচ্ছে তাঁর দেশ৷
প্রয়াসটি কেমন সে সম্পর্কে পুটিন সরাসরি কিছু বলেননি৷ তবে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভারভ জানিয়েছেন, তথ্য বিনিময়ের জন্য রাশিয়া মধ্যপ্রাচ্যের তিন দেশ সিরিয়া, ইরান এবং ইরাকের গোয়েন্দাদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ চার দেশের গোয়েন্দা প্রতিনিধিরা এখন থেকে সামরিক তথ্য বিনিময় করে জঙ্গিবাদ বিরোধী যুদ্ধে সাফল্য লাভের চেষ্টা করবেন৷ ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-আবাদির এক মুখপাত্রও চার দেশীয় এই আন্তঃসমঝোতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন৷
সম্প্রতি জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলও শরণার্থী সংকট প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে বাশার আল-আসাদের গুরুত্বের বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন৷ ম্যার্কেল মনে করেন, বাশার আল-আসাদকে আলোচনার বাইরে রেখে সিরিয়া সংকট নিরসন কখনোই সম্ভব নয়৷ এখন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনও মনে করেন, আইএস-কে নিশ্চিহ্ন না করা পর্যন্ত সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের শাসন দরকার৷
সিরিয়া সংকটের শুরু থেকে রাশিয়া এবং চীন বাশার আল-আসাদের পাশে থাকলেও পাশ্চাত্যের সব দেশই ছিল বিপক্ষে৷ দেশগুলো তখন বিদ্রোহীদের সহায়তা দিয়ে আসাদকে হঠাতেই মরিয়া ছিল৷ ম্যার্কেল এবং ক্যামেরনের বক্তব্যে ইউরোপের পরিস্থিতি পাল্টানোর ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে বলেই বিশ্লেষকরা মনে করেন৷
তবে ইউরোপে শাসকদের মধ্যে বাশার আল-আসাদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়লেও যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেনে পুটিনবিরোধীতা এখনো আছে৷ জাতিসংঘে পুটিনের উপস্থিতিও মানতে পারছেন না ইউক্রেনীয়রা৷
এসিবি/ডিজি (এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স, এপি)