পৃথিবী জুড়ে দিল্লি হিংসার প্রতিবাদ
২ মার্চ ২০২০দেশের ভিতর প্রতিবাদ হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা সহ সর্বত্র দিল্লি হিংসার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন সাধারণ মানুষ, ছাত্ররা। এ বার দিল্লির ঘটনা নিয়ে সরব হলেন গোটা পৃথিবীর ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা। তাঁদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন বিদেশি নাগরিকেরাও।
শনি এবং রবিবার শুধুমাত্র ইউরোপেই ১৮টি শহরে দিল্লি হিংসার প্রতিবাদে মিছিল-মিটিংয়ের আয়োজন হয়। ব্রাসেলস, বার্লিন, মিউনিখ, প্যারিস, স্টকহোম, হেগ, ডাবলিন, গ্লাসগো এবং লন্ডনে শয়ে শয়ে মানুষ রাস্তায় নামেন। অধিকাংশ জায়গাতেই ভারতীয় দূতাবাসের বাইরে গিয়ে প্রতিবাদ দেখান মূলত ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা। তবে প্যারিস, ডাবলিনে বহু অভারতীয়কেও প্রতিবাদে যোগ দিতে দেখা যায়। প্রতিবাদীরা কোথাও কালো জামা পরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। কোথাও আবার মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে তাঁরা গেয়েছেন 'হাম দেখেঙ্গে'। প্যারিসে মিছিল শেষে নীরবতা পালন করেছেন প্রতিবাদীরা। রাস্তার উপরে রেখেছেন সাদা গোলাপ। সাদা গোলাপ ইউরোপীয় প্রতিবাদের ইতিহাস ফ্যাসিবাদ বিরোধী প্রতীক। মিছিল থেকে আরএসএস এবং বিজেপির বিরুদ্ধেও স্লোগান ওঠে।
শুধু ইউরোপ নয়, অ্যামেরিকাতেও বহু শহরে দিল্লির ঘটনার প্রতিবাদ হয়েছে। নিউ ইয়র্ক, শিকাগোয় কার্যত ঘেরাও করে ফেলা হয় ভারতীয় দূতাবাস। দূতাবাসের কর্মীদের দেখলেই প্রতিবাদীরা 'শেম শেম' বলে স্লোগান দিতে থাকেন। প্রতিবাদীরা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতেও তাঁরা এই ঘটনার প্রতিবাদ করবেন। নিউ ইয়র্কের প্রতিবাদে যোগ দেওয়া আয়মান ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''দিল্লির ঘটনা গোটা বিশ্বের কাছে ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। গোটা বিশ্ব দেখেছে, পুলিশ কী ভাবে দাঁড়িয়ে থেকে হিংসা হতে দিয়েছে। কোনও সভ্য দেশে এমনটা ঘটতে পারে না।''
দিল্লি হিংসার প্রতিবাদ হয়েছে দেশেও। বস্তুত সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে গত কয়েকমাস ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ চলছে। প্রতিবাদকারীদের একটি বড় অংশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। বস্তুত, সেই আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন বিদেশ থেকে ভারতে পড়তে আসা ছাত্রছাত্রীরাও। আগেই এমন এক জার্মান ছাত্রকে দেশে ফিরে যেতে বলেছিল ভারতের বিদেশমন্ত্রক। গত শুক্রবার আরও দুই বিদেশি ছাত্রকে দেশে ফিরে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। একজন পোল্যান্ডের, অন্যজন বাংলাদেশের। যদিও নির্দেশ পাওয়ার পরে ওই দুই ছাত্রই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। তবে তাঁদের বন্ধুরা জানিয়েছেন, দু'জনেই দেশে ফিরে গিয়েছেন।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, পিটিআই)