1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পৃথিবীর ৬৫ কোটি মানুষ প্রতিবন্ধী

Golan Mostofa Sarowar১৭ সেপ্টেম্বর ২০০৯

প্রতিবন্ধী অবস্থা নিয়ে বেঁচে থাকা... কি এক কষ্টের মধ্যে এই বেঁচে থাকা, তা যারা প্রতিবন্ধী তারাই বোঝেন৷ সারা বিশ্বে প্রতিবন্ধী মানুষের নানা ধরণের সমস্যা৷ সমস্যা যে কেবল নিজের চলা ফেরায় তাই নয়, জীবন যাপনেও নানা সমস্যা৷

https://p.dw.com/p/JijD
ফাইল ফটোছবি: AP

সমস্যা রয়েছে চাকুরির ক্ষেত্রেও৷

এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, পৃথিবীর আনুমানিক ৬৫ কোটি লোক, যাদের মধ্যে ২০ কোটি শিশু, এরা কোন না কোনভাবে পঙ্গু বা প্রতিবন্ধী৷ এসব অসহায় মানুষের ৮০ শতাংশের বাস দরিদ্র দেশগুলোতে, যারা স্বাস্থ্য ও পুনর্বাসন পরিচর্যা থেকে বঞ্চিত বলা চলে৷ বিকলাঙ্গ, প্রতিবন্ধী মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়ার কথা আবার জোরালো করে বলার সময় এল৷ পৃথিবী জুড়ে নানা দেশে এ ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য আয়োজন চলছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ নানা সংস্থা নানা দেশে এ আয়োজনে শামিল হয়েছে৷ কিন্তু এ থেকে কি কোন উন্নতি এসেছে?

উদাহরণ হিসাবে আসতে পারে আফ্রিকার কথা৷ সেখান পঙ্গুত্ব বা প্রতিবন্ধী অবস্থাটাকে রোগ কিংবা অন্য কোন কিছু হিসাবে দেখা হয়না৷ দেখা হয় সৃষ্টিকর্তার শাস্তি হিসাবে৷ আর শারীরিক প্রতিবন্ধী অবস্থা নিয়ে বাঁচার জন্য তাদের বেছে নিতে হয় ভিক্ষাবৃত্তি৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে সেখানকার মোট জনসংখ্যার শতকরা দশ শতাংশ মানুষ শারীরিক বা মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী৷ তবে বিশ্ব ব্যাংক জানাচ্ছে, এই সংখ্যা হতে পারে দ্বিগুনেরও বেশি৷

আসুন এ ক্ষেত্রে তানজানিয়ার অবস্থা কি তা শুনি৷ তানজানিয়ার রেডিও মিলিমানির সম্পাদক টুমা ডান্ডি৷ যিনি নিজেও চলাফেরা করেন হুইল চেয়ারে৷ বললেন, আমাদের দেশের পঙ্গু এবং প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য বেকারত্ব এবং কোন আয় না থাকাটা সবচেয়ে বড় হুমকি৷ চাকুরিদাতারা আমাদের চাকুরি দিতে উৎসায়ী নয়৷ কারণ তারা মনে করে পঙ্গু মানুষের মেধাটাও পঙ্গু৷ রাস্তা থাকে ভাঙ্গা, পাবলিক বাসেও উঠা যায় না৷ আমাদের বাসে নিতে চায়না বাস চালকরা৷ কারণ তারা প্রতিবন্ধীদের মনে করে বোঝা!

শারীরিক ও মানসিকভাবে অক্ষম এসব মানুষের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে৷ কারণ বাড়ছে পৃথিবীর জনসংখ্যা, বৃদ্ধ লোকের সংখ্যাও বাড়ছে৷ এসব কারণে স্বাস্থ্য ও পুনর্বাসন ব্যবস্থার ওপর ক্রমেই বাড়ছে চাপ৷ পঙ্গু মানুষের প্রতি সমাজের দৃষ্টি ও বিবেচনা তাদের জীবনকে আরও কঠিন করে তুলেছে৷ বলঅ হচ্ছে, এ জন্য সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিরও পরিবর্তন প্রয়োজন৷

পঙ্গুত্ব হতে পারে দারিদ্র্যের কারণ ও পরিণতি, দুটোই৷ বিশ্বের ৮০ শতাংশ পঙ্গু মানুষ থাকে দরিদ্র দেশগুলোতে৷ তারা সামাজিক ও অর্থনৈতিক সব ধরনের অসুবিধার হয় মুখোমুখি, অধিকার থেকে হয় বঞ্চিত৷ দারিদ্র্যের কারণেই তারা স্বাস্থ্য ও পুনর্বাসন ব্যবস্থার আওতার বাইরেই থেকে গেছে৷ ওয়াইট গ্যাব্রিয়েল৷ এসোসিয়েশন অফ ডিসএবিলিটি এন্ড ডেভলপমেন্ট কোঅপারেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক৷ বললেন,আফ্রিকার প্রতিবন্ধী মানুষ প্রচন্ডভাবে দারিদ্র্যের কষাঘাতের শিকার৷ এক হিসাবে দেখা যাচ্ছে, অন্তত ৮২ ভাগ প্রতিবন্ধী মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করছে৷

সরকারি বেসরকারি উন্নয়নমুখী উদ্যোগগুলোও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী মানুষের কথা বিবেচনায় আনে না৷ পঙ্গু এসব মানুষের অধিকার সম্পর্কে তাই জাতিসংঘ কনভেনশন দেশের ক্রম-অগ্রসরমাণ উন্নতির জন্য পঙ্গুত্বের ইস্যুকে কেন্দ্রে রাখার ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করেছে৷ স্বাস্থ্য ও সামাজিক নির্ণায়কগুলোর দিকে নজর দিতে গেলে পঙ্গু মানুষের অধিকার ও স্বাস্থ্য রক্ষা প্রয়োজন, তাহলে মানবাধিকারও পরিপূর্ণ সফল রূপ পেতে পারে বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন৷

প্রতিবেদক: সাগর সরওয়ার

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক