‘পোশাক কারখানায় ৮০ হাজার নিরাপত্তা ত্রুটি’
১৪ অক্টোবর ২০১৪
‘দ্য অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশ' সংক্ষেপে অ্যাকর্ড বাংলাদেশের এক হাজার ১০৬টি কারখানা পরিদর্শন করে৷ এই পরিদর্শনে বাইরে থেকে নিরাপত্তা প্রতিনিধিদেরও নিয়োগ করা হয়৷ পরিদর্শন গ্রুপটিতে ‘এইচঅ্যান্ডএম' ও ‘কেয়ারফর'-এর ১৮৯ জন বাণিজ্যিক প্রতিনিধি ছিলেন ৷
অ্যাকর্ড-এর প্রধান নিরাপত্তা পরিদর্শক ব্র্যাড লোবেন বলেছেন, ‘‘আমরা কারখানা পরিদর্শন করে নিরাপত্তায় অনেক অরাজকতা দেখেছি৷ কারখানার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে খুবই কম পরিবর্তন হয়েছে৷'' পরিদর্শনের সময় কারখানার অগ্নি এবং বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা ও ভবনের কাঠামোগত অবস্থা দেখা হয়েছে৷ এখন এইসব বিষয় নিয়ে কারখানা মালিকদের সঙ্গে কাজ করছেন পরিদর্শকরা৷
অ্যাকর্ড জানায়, তাদের নিরাপত্তা পরিদর্শক দল নিরাপত্তা সমস্যায় জর্জরিত ১৭টি কারখানা এখনই বন্ধের জন্য বাংলাদেশ রিভিউ কমিটিকে বলেছে৷ এর কারণ, তাদের মতে এই ভবনগুলো যে কোনো সময় ধসে পরতে পারে৷ এছাড়া ১১০টি কারাখানা ভবন ত্রটিপূর্ণ হলেও তা চালু রেখেই নিরাপত্তা সমস্যার সমাধান করা যাবে জানিয়েছে তারা৷
অ্যাকর্ড মনে করে, সাধারণভাবে কোনো কোনো ভবনের ওপরের তলার জিনিস-পত্র সরিয়ে ফেলে নিরাপত্তা বাড়ানো যায়৷ তবে এর সঙ্গে ‘কলাম' শক্তিশালী করা এবং অনুমোদিত অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করতে হবে৷
অ্যাকর্ড প্রতিটি কারখানার নিরাপত্তা উন্নয়নে দুই লাখ ৫০ হাজার ডলার করে সহযোগিতা প্রদান করবে বলে জানিয়েছে৷ গ্রুপটির আন্তর্জাতিক অপারেশন বিভাগের নির্বাহী পরিচালক অ্যালান রবার্ট বলেন, ‘‘কিছু কিছু কারখানার ক্ষেত্রে এ ব্যয় দাঁড়াবে এক মিলিয়ন ডলার৷''
তিনি জানান, ‘‘পোশাক ত্রেতা এবং কারাখানার মালিকরা শ্রমিক নিরাপত্তার ব্যাপারে আগের চেয়ে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন৷ ৪০০টি কারখানার নিরাপত্তা ত্রুটি ঠিক করতে কাজ শুরুর ব্যাপারে তাঁরা একমত হয়েছেন৷''
অপরদিকে, অ্যামেরিকার নেতৃত্বাধীন ক্রেতা গ্রুপ ‘অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কাস সেফটি' সংক্ষেপে অ্যালয়েন্স জানিয়েছে যে, তারা বাংলাদেশে ৫৮৭টি কারাখানা ঘুরে দেখেছে৷ তাদের ২৬ বাণিজ্যিক প্রতিনিধির মধ্যে ‘ওয়ালমার্ট', ‘গ্যাপ' ও ‘টার্গেট'-এর মতো প্রতিষ্ঠান যুক্ত রয়েছে৷
গ্রুপটির সিনিয়র উপদেষ্টা ইয়ান স্পলদিং বলেন, ‘‘পরিদর্শন করার কাজটা তেমন কোনো কঠিন কাজ নয়৷ কিন্তু এর পরের কাজটাই সবচেয়ে কঠিন৷''
ইউরোপ ও অ্যামেরিকার বড় দুই ক্রেতা গ্রুপ অ্যাকর্ড এবং এবং অ্যালায়েন্স বাংলাদেশের এক হাজার ৭০০টি পোশাক কারখানা পরিদর্শন করেছে৷ তারা কারখানার নিরাপত্তা ও শ্রমিকদের আর্থিক সমৃদ্ধির জন্য কারখানা মালিকদের সঙ্গে কাজ করছে৷
গত বছরের এপ্রিল মাসে ঢাকার অদূরে সাভারে রানা প্লাজা ধসের পর, বাংলাদেশের পোশাক কাখানায় শ্রমিক নিরাপত্তা, শ্রমিকদের মজুরি এবং অধিকার নিয়ে সমালোচনা হয়৷ এরপরই ক্রেতাদের দুটি গ্রুপ পোশাক কারখানার নিরপত্তা উন্নয়নে কাজ শুরু করে৷