পোশাক শিল্পের সংকট কাটাতে উদ্যোগ
১০ মে ২০১৩
সাভারের রানা প্লাজায় মোট পাঁচটি পোশাক কারখানা ছিল৷ এসব কারখানায় সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি পোশাক শ্রমিক কাজ করতেন৷ বিজিএমইএ যে তালিকা তৈরি করেছে তাতে শ্রমিকের সংখ্যা ৩,৬১৯ জন৷ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ধ্বংসস্তূপ থেকে মোট ৯৭৬টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে৷ আর এসব লাশের অধিকাংশই পোশাক শ্রমিকদের৷
ভবন ধস বা আগুন লেগে পোশাক শ্রমিকদের মৃত্যু নিয়ে অনেক কথা হলেও এ পর্যন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়নি৷ গত ১১ বছরে রানা প্লাজার হিসেব ধরে বাংলাদেশে ১,৭০০ পোশাক শ্রমিক নিহত হয়েছেন আগুন অথবা ভবন ধসে৷ রানা প্লাজার আগে তাজরীন ফ্যাশানস-এ আগুন, ফিনিক্স ভবন ধসেও গার্মেন্টম শ্রমিক নিহত হন৷ কিন্তু পরে এর বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি৷
তবে এবার আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়েছে বাংলাদেশ৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন যত দ্রুত সম্ভব আন্তর্জাতিক শ্রম আইন মেনে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানার ভবনসহ কাজের পরিবেশ এবং শ্রমিক নিরাপত্তার মান উন্নয়নের তাগিদ দিয়েছে৷ শুধু তাই নয়, ইন্ডাস্ট্রি গ্লোবাল ইউনিয়ন আগামী ১৫ই মে'র মধ্যে বাংলাদেশের পোশাক কারখানার ভবনসহ মান উন্নয়নের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার জন্য বলেছে৷ এদিকে আন্তর্জাতিক পোশাক ক্রেতা ওয়াল্ট ডিজনি বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ তারা বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর ৪০ কোটি ডলারের পোশাক কিনতো৷ যা বাংলাদেশি টাকায় ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা৷
এই অবস্থা মোকাবেলায় সরকার, বিজিএমইএ কাজ শুরু করেছে৷ পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী জানিয়েছেন যে, তারা ইতিমধ্যেই ঢাকায় ১৬টি এবং চট্টগ্রামে দুটি সহ মোট ১৮টি পোশাক কারখানার ভবনে ত্রুটি পেয়েছেন৷ এই কারাখানাগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে৷ তিনি জানান, আগামী ৩ মাসের মধ্যে সরকারের গঠিত টাস্কফোর্স দেশের সব পোশাক কারখানা পরিদর্শন করে রিপোর্ট চূড়ান্ত করবে৷ আর তাতে যেসব ত্রুটিপূর্ণ ভবন পাওয়া যাবে সেসব ভবনকে সংক্ষিপ্ত সময় দেয়া হবে৷ সেই সময়ের মধ্যে যদি তারা ত্রুটি দূর করতে না পারেন তাহলে সেই পোশাক কারখানা বন্ধ করে দেয়া হবে৷
বিজিএমইএ-র সভাপতি আতিকুল ইসলাম জানান, তাদের টাস্কফোর্সও কাজ শুরু করেছে৷ সারা দেশের পোশাক কারখানার ভবনসহ শ্রমিক নিরাপত্তা এবং কাজের পরিবেশ দেখবেন তারা৷ এই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে৷ তিনি জানান, রানা প্লাজার পাঁচটি পোশাক কারাখানার শ্রমিকদেরও বেতন দেয়া শুরু করেছেন তারা৷ আর নিহত শ্রমিকদের পরিবার মোট ৭ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ পাবে৷ এছাড়া, পোশাক কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন কিভাবে চালু করা যায়, তা নিয়েও কাজ চলছে বলে জানা গেছে৷