প্যানেলে নাম নেই, ইন্টারভিউ হয়নি, তাও চাকরি ৫৮ শিক্ষকের
১৫ জানুয়ারি ২০২৪সিবিআই ও ইডির তদন্তে এই ভয়ংকর ঘটনা উঠে আসেনি। বরং আদালতে হলফনামা দিয়ে এই তথ্য দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি। বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে এসএসসি-র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার এই হলফনামা পেশ করেছেন।
সেখানে বলা হয়েছে নবম ও দশম শ্রেণির ৪০ জন শিক্ষক এবং একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ১৮ জন শিক্ষকের নাম প্যানেলে বা ওয়েটিং লিস্টে নেই। তাদের কোনো পার্সোনালিটি টেস্ট হয়নি। কিন্তু তারা চাকরি করছেন।
তাহলে তারা কী করে চাকরি পেলেন? কীভাবে এটা সম্ভব হলো? এর জবাব হলফনামায় পাওয়া যায়নি। ২০১৬ সালে যে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, তাতেই এই ৫৮ জনের চাকরি হয়েছে। এসএসসি কারো চাকরি বাতিল করেনি। তাদের বক্তব্য, তাদের কাছে তো কোনো নথি নেই। তাই কীসের ভিত্তিতে চাকরি বাতিল করা হবে? তাদের এই অবস্থানের কথা হলফনামায় এসএসসি স্পষ্ট করে দিয়েছে।
বিচারপতি বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ এখন এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
টিভি৯ মালদহে এমনই এক শিক্ষকের উদাহরণ সামনে এনেছে। এই শিক্ষকের নাম প্যানেলে ছিল না। কিন্তু ২০১৯ সালে তিনি নিয়োগপত্র পান। ২০২১ সালে তিনি কাজে যোগ দেন। সেই শিক্ষকের খোঁজ স্কুলে গিয়ে পওয়া যায়নি। তিনি ফোনও ধরেননি।
এতদিন শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যে দুর্নীতি উঠে এসেছিল, তাতে দেখা যাচ্ছিল, ওএমআর শিটে জালিয়াতি করা হয়েছে। কম নম্বর পাওয়াদের চাকরি দেয়া হয়েছে। যারা বেশি নম্বর পেয়েছিলেন তারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। লিখিত পরীক্ষায় খুব নম্বর পেলেও ইন্টারভিউতে প্রচুর নম্বর পেয়ে অনেকে চাকরি পেয়েছেন। তখনই অভিযোগ ওঠে, টাকার বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে।
কিন্তু এখন এসএসসি বলছে, কোনোরকম ইন্টারভিউ হয়নি, প্যানেলে নাম ছিল না, ওয়েটিং লিস্টে নাম ছিল না, কোথাও নাম না থাকা ৫৮ জন চাকরি পেয়েছে। কী করে পেল? কে তাদের নিয়োগপত্র দিলো? কোন পদ্ধতি অনুসরণ করা হলো?এসএসসি এতদিন কী করছিল? এসব কোনো প্রশ্নেরই জবাব নেই।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সদ্য অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষক ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''শিক্ষক নিয়োগ, পুর নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির নানা উদাহরণ আমাদের সামনে এসেছে। কিন্তু এসএসসির হলফনামা থেকে এই যে দুর্নীতির নতুন রূপের দেখা পাওয়া গেল, তা ভয়ংকর। শিক্ষা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে।''
জিএইচ/এসজি(পিটিআই, টিভি৯)