প্রক্সি যুদ্ধ চালাচ্ছে ন্যাটো: রাশিয়া
২৬ এপ্রিল ২০২২মঙ্গলবার জার্মানির রামস্টেইন এয়ারবেসে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন একটি বৈঠকের করছেন। সম্প্রতি কিয়েভ থেকে ঘুরে এসেছেন তিনি। রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইউক্রেনের কৌশল স্থির করতেই এই বৈঠক বলে জানানো হয়েছে। বস্তুত, প্রতিরক্ষার জন্য ইউক্রেনের কী কী অস্ত্র প্রয়োজন, তা নিয়েই মূলত আলোচনা হওয়ার কথা। জার্মানিতে অ্যামেরিকার এই বৈঠক নিয়ে সরব রাশিয়া। তাদের বক্তব্য, ন্যাটো প্রক্সি যুদ্ধ চালানোর চেষ্টা করছে।
জার্মান এয়ারবেসের এই বৈঠকে অন্তত ৪০টি দেশের যোগ দেওয়ার কথা। তার মধ্যে ন্যাটোর দেশগুলিও আছে। ন্যাটো প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গও বৈঠকে যোগ দেবেন। সোমবারই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী কথা দিয়ে এসেছিলেন যে, আরো অস্ত্র সরবরাহ করা হবে তাদের।
মার্কিন সেনা বাহিনীর জয়েন্ট চিফ অফ স্টাফ বলেছেন, রাশিয়ার সেনাকে এমনভাবে ঘিরে ধরতে হবে, যাতে তারা ইউক্রেন দখলের ভাবনা থেকেই পিছিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভ দেশের জাতীয় টেলিভিশনে বলেছেন, ইউক্রেনকে অস্ত্রসাহায্য করে ন্যাটো রাশিয়ার সঙ্গে প্রক্সি যুদ্ধে নেমেছে। এই অস্ত্রের সাহায্যেই রাশিয়ার সেনার উপর আক্রমণ চালাচ্ছে ইউক্রেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রশ্ন, ইউক্রেনে একাধিকবার অস্ত্র সম্ভার ধ্বংস করেছে রাশিয়া। তারপরেও সেখানে অস্ত্র যাচ্ছে কী করে? এর থেকেই স্পষ্ট, ন্যাটো তাদের অস্ত্রের জোগান অব্যাহত রেখেছে।
লাভরভ জানিয়েছেন, বাইরে থেকে পরমাণু লড়াইয়ের একটি আবহ তৈরির চেষ্টা চলছে। রাশিয়া তার মধ্যে ঢুকতে চায় না। শুধু তা-ই নয়, তার বক্তব্য, একটি চুক্তি সইয়ের মধ্য দিয়ে এই যুদ্ধ শেষ হতে পারে। দুই দেশ শান্তি আলোচনা অব্যাহত রেখেছে। তবে চুক্তি সইয়ের সময় দেখতে হবে, কোন দেশের সেনা কোথায় অবস্থানরত।
ইউক্রেনের প্রতিক্রিয়া
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পর মুখ খুলেছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা। তার বক্তব্য, রাশিয়ার কথা থেকেই পরিষ্কার, তারা এই যুদ্ধে হার স্বীকার করে নিচ্ছে। তারা পরাজিত হয়েছে।
জাতিসংঘের চেষ্টা
এদিকে মঙ্গলবারই মস্কো যাওয়ার কথা জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেসের। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার বৈঠক করার কথা। যুদ্ধ শেষ করে শান্তি বৈঠকের পরামর্শ নিয়েই মস্কো যাচ্ছেন গুতেরেস। ইউক্রেন জানিয়েছে, তারা এই সফর নিয়ে আশাবাদী। তাদের আশা, গুতেরেস মারিউপলে আটকে থাকা বেসামরিক মানুষদের উদ্ধারের বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন।
এদিকে অ্যাজোবস্টাল স্টিল প্লান্ট অঞ্চল ঘিরে ফেলেছে রাশিয়ার সেনা। সেখানে বড় সংখ্যায় ইউক্রেনীয় যোদ্ধা আটকে পড়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ইউক্রেনের দাবি, ওই শহরে প্রায় এক লাখ বেসামরিক মানুষ আটকে আছেন। তাদের উদ্ধারের বিষয়েও জাতিসংঘ হস্তক্ষেপ করবে বলে ইউক্রেনের আশা।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি, ডিপিএ)