1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজআফ্রিকা

প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও দমার পাত্র নন আফ্রিকার অ্যাথলেটরা

২০ জুন ২০২৪

শারীরিক প্রতিবন্ধকতা যে মানুষকে দমিয়ে রাখতে পারে না, এমন অনেক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রয়েছে৷ আফ্রিকার এমনই কিছু মানুষ সমাজের সংশয় ও দ্বিধা অগ্রাহ্য করে খেলাধুলা ও শিল্পের ক্ষেত্রে অসাধারণ প্রত্যয় দেখাচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/4hHEU
Mosambik Menschen mit Behinderung in Manica
ছবি: DW/B. Jequete

বেনিনের হুইলচেয়ার বাস্কেটবলার, রুয়ান্ডার ব্রেকড্যান্সার অথবা ঘানার অ্যাম্পুটি ফুটবল টিম – এমন সব অ্যাথলিটের তিনটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে৷ খেলাই তাঁদের জীবনের মূলমন্ত্র, তাঁরা সবাই সমাজে বদ্ধমূল ধারণার শিকার৷ কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তাঁদের দমিয়ে রাখতে পারে না৷ যেমন ব়্যাপার ও বাস্কেটবল খেলোয়াড় মাস্তা এমসি বলেন, ‘‘আমি ২০ বছর ধরে খেলছি৷ নাইজেরিয়ায় খেলেছি, আইভরি কোস্ট ও সেনেগালেও খেলেছি৷ জানেন তো, আমি আসলে সিংহ৷'' রুয়ান্ডার কুবাশা ক্রিউয়ের সদস্য জঁ দামুর ওরফে বি-বয় স্নোর কণ্ঠেও একই রকম প্রত্যয় শোনা যায়৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি আত্মবিশ্বাস ও আত্মসম্মান অর্জন করেছি৷ আগে মানুষের সামনে পারফর্ম করতে লজ্জা করতো৷ কিন্তু নাচের কারণে সেই ভয় আর নেই৷''

স্থানীয় বা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তাঁরা যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন করেছেন এবং নিজেদের শরীর এমনভাবে কাজে লাগাচ্ছেন, যা সমাজ এবং এমনকি তাঁরা নিজেরাও কখনো ভাবতে পারেননি৷

দুই বছর বয়সে মাস্তা এমসি-র পোলিও হয়৷ ফলে তাঁর পা আংশিকভাবে অসাড় হয়ে যায়৷ তাঁর ও তাঁর টিমকে বাস্কেটবল কোর্টে স্থান পেতে বিশাল সংগ্রাম করতে হয়েছে৷ স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আগে আমাদের এখানে খেলার অধিকার ছিল না৷ আমাদের মানের উন্নতি হতে লাগলো৷ আমরা তাদের দেখালাম, যে এই হুইলচেয়ার নিয়ে বাস্কেটবল মোটেই শুধু আরামের জন্য নয়৷ তারা আমাদের খেলার মান দেখে ধীরে ধীরে আমাদের জায়গা ছেড়ে দিলো৷''

হুইলচেয়ার বাস্কেটবলের নিজস্ব নিয়ম রয়েছে৷ খেলোয়াড়রা ড্রিবলিংয়ের আগে দুই বার নিজেদের হুইলচেয়ার নিয়ে এগিয়ে যেতে পারেন৷ তৃতীয়বার করলে সেটা ‘ট্র্যাভেলিং' হিসেবে বিবেচনা করা হয়৷ আসলে যে কেউ হুইলচেয়ার বাস্কেটবল খেলতে পারেন৷ শুধু হুইলচেয়ারে বসে থাকলেই হবে৷ তবে হাতে করে হুইলচেয়ার চালানো এবং ড্রিবল করার ক্ষমতা আয়ত্ত করতে হবে৷

অ্যাম্পুটি ফুটবলের কাঠামো একেবারেই আলাদা৷ শুধু একটি পা না থাকলে সেই খেলার অনুমতি পাওয়া যায়৷ একমাত্র গোলকিপারের একটি হাত না থাকলেই চলবে৷ ঘানার জাতীয় অ্যাম্পুটি ফুটবল টিমের সদস্য সামুয়েল কোয়াকিয়ে ওফে বলেন, ‘‘একটি পা নিয়ে খেললে মনে রাখতে হবে, যে ইচ্ছা করে বল ক্রাচে লাগালে বা ক্রাচ ব্যবহার করে বলে ধাক্কা দিলে সেটা ফাউল হিসেবে গণ্য করা হবে৷ অথবা অ্যাম্পিউট করা পা দিয়ে বলে ধাক্কা দিলেও সেটা ফাউল ধরা হবে৷''

কিগালির বি-বয়েজ ও বি-গার্লসদের কাছে সেই সব নিয়মে কিছু এসে যায় না৷ ব্রেকডান্সিং এমন এক মুক্ত কাঠামো, যার আওতায় সবাই নিজেদের শক্তি উজাড় করেে দিতে পারে৷ যেমন প্রাক্তন ব্রেকডান্স বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফরাসি-কঙ্গোলিজ জুনিয়র বোসিলা বানিয়া নিজের পোলিও সত্ত্বেও শীর্ষে পৌঁছতে পেরেছেন৷ ক্রাচ নিয়ে হাঁটলে হাতের যে বাড়তি ক্ষমতা জন্মায়, তা এ ক্ষেত্রে সুবিধাজনক হতে পারে৷

সমাজবদ্ধ হওয়া, শক্তি বাড়ানো অথবা নিছক খেলার প্রতি ভালোবাসার তাগিদে এই অ্যাথলিটরা এগিয়ে চলেছেন৷ তাঁরা কী করতে পারেন বা পারেন না, সমাজ তা চাপিয়ে দেবে, এমনটা তাঁরা চান না৷ মাস্তা এমসি বলেন, ‘‘আমি সমাজে এক ধরনের ‘রোল মডেল' হতে চাই৷ প্রতিবন্ধী মানুষ যাতে বলতে পারেন, আমি যেন মাস্তার মতোই ফ্যাশন করতে পারি৷ তার মতোই গান গাইতে পারি৷ তার মতোই যেন বাস্কেটবল খেলতে পারি৷''

আদেলেকে, ফ্লাকার, সেলা/এসবি