উত্তাল উত্তর পূর্ব ভারত
১২ ডিসেম্বর ২০১৯নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে উত্তাল উত্তর পূর্ব ভারত৷ বুধবার রাজ্যসভায় বিলটি পাশ হয়ে যাওয়ার পরে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে৷ রাজধানী গুয়াহাটিতে সেনা বাহিনী রুট মার্চ শুরু করেছে৷ একই পরিস্থিতি ত্রিপুরাতেও৷ বুধবার রাতে সেখানেও সেনা এবং আধা সেনা মোতায়েন করা হয়েছে৷
গত সোমবার লোকসভায় পাশ হয় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল৷ তার পর থেকেই উত্তেজনা ছড়াতে শুরু করে অসম, ত্রিপুরা এবং মণিপুরে৷ অসমের প্রায় সবকটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের ছাত্ররা মশাল হাতে নেমে পড়ে রাস্তায়৷ তাদের বক্তব্য, কোনও ভাবেই এই আইন তারা মেনে নেবে না৷ তাদের আশঙ্কা, এই আইন চালু হলে উত্তর পূর্ব ভারতের জাতি এবং উপজাতিগুলি সংকটে পড়বে৷ এনআরসি-র পরে সেই সমস্যা বাড়বে বলে তারা মনে করেছে৷
যদিও বৃহস্পতিবার টুইট করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেন, 'নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কোনও ভাবেই উত্তর পূর্বের জাতি উপজাতিগুলির অধিকারে হস্তক্ষেপ করবে না৷'
কিন্তু সে কথা মানতে নারাজ আন্দোলনকারীরা৷ প্রতিদিন বিশাল বিশাল মিছিল বের হচ্ছে৷ বিভিন্ন সরকারি দফতরে হামলা চালানো হচ্ছে, লাগানো হচ্ছে আগুন৷ পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত বহু৷ কিন্তু আন্দোলনের তীব্রতা কমার কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না৷ ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামানো হয়েছে সেনা৷ জায়গায় জায়গায় কারফিউ জারি করা হয়েছে৷ কিন্তু তাতেও দমছে না আন্দোলনকারীরা৷ কারফিউ ভেঙেও মিছিল হচ্ছে৷
আসামের প্রবীণ সাংবাদিক আশিস গুপ্ত ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''আন্দোলন কমার কোনও লক্ষ্ণণ নেই, বরং উত্তরোত্তর বাড়ছে৷ উত্তর পূর্বের মানুষ কোনও ভাবেই যে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল মেনে নেবেন না, তার আভাস আগেই পাওয়া গিয়েছিল৷ কিন্তু সেখানকার মানুষকে না বুঝিয়েই সরকার বিলটি পাশ করিয়ে নিল৷ এর ফলে পরিস্থিতি কার্যত হাতের বাইরে চলে গিয়েছে৷''
''আসামের ১০টি জেলায় পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ৷ সেনা এবং আধা সেনা মিলিয়ে প্রায় ৫০০০ সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে৷ ত্রিপুরাতে গুলি চলেছে বলেও শোনা যাচ্ছে৷''
এরই মধ্যে অসমে এক অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের৷ সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক হওয়ার কথা৷ বৃহস্পতিবার সেই অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি মঞ্চেও আগুন লাগিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা৷
এসজি/জিএইচ (পিটিআই/এএনআই/এনডিটিভি/ইন্ডিয়া টুডে)