প্রথমেই যা করতে চাইলেন ট্রাম্প
২৩ জানুয়ারি ২০১৭বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে দিনটি শুরু করবেন বলে ট্রাম্প নিজেই টুইট করে জানিয়েছেন৷ তাঁর টুইট থেকে জানা যাচ্ছে, নতুন চাকরি সৃষ্টি আর জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি তাঁর প্রথম সপ্তাহের কাজগুলোর মধ্যে বেশি অগ্রাধিকার পাবে৷
তবে প্রার্থী থাকার সময় প্রেসিডেন্ট হলে প্রথম কার্যদিবসে কী কী করবেন তা বিভিন্ন সময়ে জানিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো:
- বারাক ওবামার স্বাস্থ্য বিষয়ক আইন (যেটি ‘ওবামাকেয়ার' নামে পরিচিত) বাতিল করা
- ওবামা সরকার যেসব আইন বাতিল করেছে তার মধ্যে কয়েকটি পুনরায় ফিরিয়ে আনা
- জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক প্রকল্পে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া তহবিল বন্ধ করা এবং সেই অর্থ যুক্তরাষ্ট্রের পানি ও পরিবেশ বিষয়ক অবকাঠামোর উন্নয়নে কাজে লাগানো
- যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী নীতি সংস্কার
- দক্ষিণ সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের কাজ শুরু
- সিরীয় শরণার্থীদের জন্য নেয়া প্রকল্প স্থগিত
- তথাকথিত ইসলামিক স্টেটকে পরাজিত করতে ৩০ দিনের মধ্যে নতুন পরিকল্পনা প্রস্তাব করতে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রদান
- অপরাধের সঙ্গে জড়িত ২০ লক্ষেরও বেশি (ট্রাম্পের হিসেবে) অবৈধ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানোর কাজ শুরু
- যেসব দেশ এইসব অবৈধ অভিবাসীকে ফেরত নিতে রাজি হবে না সে সব দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল
এই সব কাজের মধ্যে কয়েকটি নির্বাহী আদেশে করা সম্ভব হলেও বাকিগুলোর জন্য প্রয়োজন কংগ্রেসের অনুমোদন৷ এছাড়া আইনগত কিছু বাধাও রয়েছে৷
ফলে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রথম কর্মদিবসে ট্রাম্প অঙ্গীকার করা সব কাজই করবেন বলে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে আভাস পাওয়া যায়নি৷
সোমবার ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করা ছাড়াও ‘হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস'-এর স্পিকার পল রায়ানের সঙ্গে ট্রাম্পের আলোচনায় বসার কথা রয়েছে৷ সেই সময় ‘ওবামাকেয়ার' নিয়েও কথা বলতে পারেন তারা৷ রিপাবলিকানরা এই আইন বাতিলের পক্ষে থাকলেও এর পরিবর্তে কী চালু করা হবে সেই বিষয়ে একমত হতে পারছেন না তাঁরা৷
ট্রাম্পের প্রথমদিনের কাজের অঙ্গীকারের মধ্যে একটি ছিল মেক্সিকো আর ক্যানাডার সঙ্গে নাফটা চুক্তি হয় বাতিল কিংবা আলোচনা পুনরায় শুরুর ব্যাপারে ঘোষণা দেয়া৷ সেটি অবশ্য করেছেন ট্রাম্প৷ রবিবার তিনি আলোচনা পুনরায় শুরুর উপর জোর দিয়েছেন৷
শুরুতে বিক্ষোভের মুখোমুখি
প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহর সহ বিশ্বের অনেক শহরে নারীরা ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে৷ শুরুতে ট্রাম্প এই বিক্ষোভের কড়া সমালোচনা করে টুইট করলেও পরে আরেক টুইটে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের একটি বৈশিষ্ট্য বলে মন্তব্য করেন৷
গণমাধ্যমকে আক্রমণ
শপথ অনুষ্ঠানে মানুষের উপস্থিতি নিয়ে ভুল তথ্য প্রচারের জন্য গণমাধ্যমের প্রতিও একহাত নেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প৷ তিনি বলেন, গণমাধ্যমের সঙ্গে তাঁর যুদ্ধ চলছে৷ সাংবাদিকরা ‘সবচেয়ে অসৎ মানুষ' বলেও মন্তব্য করেন ট্রাম্প৷
ট্রাম্পের মতো একই মন্তব্য করেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব শন স্পাইসার৷ তাঁর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে স্পাইসার বলেন, ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানেই আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে সবচেয়ে বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন৷ এছাড়া সেদিন তিনি সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন করতে দেননি৷
জেডএইচ/ডিজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)
এ বিষয়ে আপনার কোনো বক্তব্য থাকলে, লিখুন নীচের ঘরে৷