প্রথম দিনেই ট্রাম্পের বহু সিদ্ধান্ত বদল বাইডেনের
২১ জানুয়ারি ২০২১প্রথম দিনই ৪৬তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুঝিয়ে দিলেন, তিনি বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের রাস্তায় হাঁটবেন না। ট্রাম্পের নীতি প্রয়োজনে রাতারাতি বদলে ফেলতেও তাঁর অসুবিধা নেই। এবং সে কারণেই, শপথগ্রহণের দিনে ১৫টি প্রসাসনিক নির্দেশে সই করলেন জো বাইডেন। যার মধ্যে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে নতুন করে যোগ দেওয়ার অর্ডার আছে। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আছে। অভিবাসন সংক্রান্ত বিষয় আছে এবং সীমান্তে দেওয়াল নির্মাণ সংক্রান্ত বাজেটের উপর স্থগিতাদেশ রয়েছে।
প্যারিস জলবায়ু চুক্তি
২০১৫ সালের এই চুক্তিতে বিশ্বের বহু দেশ সই করেছিল। এই মুহূর্তে ১৮৯টি দেশ এই চুক্তির অন্তর্ভুক্ত। ২০১৭ সালে ডনাল্ড ট্রাম্প গুরুত্বপূর্ণ এই জলবায়ু চুক্তি থেকে অ্যামেরিকাকে সরিয়ে নেন। প্রতিটি দেশে ফসিল ফুয়েল বা খনিজ জ্বালানির ব্যবহারের উপর বিধিনিষেধ তৈরি করেছিল এই চুক্তি। চুক্তির মূল লক্ষ্য ছিল, দূষণ হয় না, এমন জ্বালানির দিকে পৃথিবীকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। রিনিউএবেল শক্তি ব্যবহারে সচেষ্ট হওয়া। প্যারিস চুক্তি মার্কিন অর্থনীতিকে দুর্বল করে দিচ্ছে, অ্যামেরিকার প্রতি অন্যায় করা হচ্ছে, এই অভিযোগে ২০১৭ সালে চুক্তি থেকে সরে আসেন ট্রাম্প। যা নিয়ে বিশ্ব জুড়ে রীতিমতো আলোড়ন হয়েছিল। ক্ষমতায় এসেই সেই চুক্তিতে ফের যোগ দেওয়ার ঘোষণা করেছেন বাইডেন। শুধু তাই নয়, বাইডেন জানিয়েছেন, পরিবেশ নিয়ে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেবে অ্যামেরিকা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং করোনা
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ, করোনাকে প্রথম দিকে গুরুত্ব দেননি তিনি। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। বাইডেন জানিয়েছেন, করোনার সঙ্গে মোকাবিলার জন্য একটি অর্ডারে সই করেছেন তিনি। দেশের সমস্ত মানুষকে আগামী ১০০ দিন মাস্ক পরতে হবে। যে কোনো পাবলিক প্লেসে মাস্ক পরা বাধ্য়তামূলক করা হচ্ছে। বাইডেনের বক্তব্য, চার লাখ মানুষকে হারিয়েছে অ্যামেরিকা। আর কাউকে দেশ হারাতে চায় না। সাধারণ কিছু নিয়ম তাই পালন করতেই হবে। হোয়াইট হাউসে করোনার জন্য একটি বিশেষ অফিস তৈরি করেছেন তিনি। যে অফিস গোটা দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে খবর রাখবে এবং প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে। বাইডেন জানিয়েছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাতেও ফের অংশিদার হবে অ্যামেরিকা। ট্রাম্প ডাব্লিউএইচও-র ফান্ড বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
অভিবাসন আইন
১৩টি মুসলিম দেশের উপর ট্র্যাভেল ব্যান জারি করেছিলেন ডনাল্ড ট্রাম্প। অর্থাৎ, ওই দেশের নাগরিকরা অ্যামেরিকায় আসতে পারবেন না। ট্রাম্পের বক্তব্য ছিল, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্যই তাঁর এই পদক্ষেপ। বাইডেন জানিয়েছেন, ওই নিয়ম বন্ধ করার অর্ডারে তিনি সই করেছেন। অভিবাসন নীতি ট্রাম্পপূর্ব সময়ে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। বস্তুত, ট্রাম্পের পদক্ষেপ দেশের ভিতরে এবং বাইরে চূড়ান্ত বিতর্ক শেষ করেছিল। নির্বাচনী প্রচারে বাইডেন জানিয়েছিলেন, ক্ষমতায় এলে তিনি বিতর্কের অবসান ঘটাবেন।
মেক্সিকোর দেওয়াল
মেক্সিকোর সীমান্তে দেওয়াল তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের অন্যতম স্বপ্নের প্রকল্প ছিল সীমান্তে দেওয়াল। সে জন্য এমার্জেন্সি ডিক্লেরশন দিয়েছিলেন ট্রাম্প। যাতে পাঁচিল তোলার বাজেট আটকে না থাকে। বাইডেন সেই ডিক্লেরশন বাতিল করেছেন। সীমান্তে পাঁচিলের প্রকল্প বাইডেনের আমলে আদৌ কার্যকরী হয় কি না, সেটাও দেখার।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)