প্রথম মুখোমুখি বৈঠকে বসবেন বাইডেন ও শি জিনপিং
১১ নভেম্বর ২০২২২০২১ সালে বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথমবার দুই নেতা মুখোমুখি বৈঠকে বসবেন৷ এর আগে ভার্চুয়াল বৈঠক হলেও সামনাসামনি বৈঠক হয়নি৷
দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক এখনো বরাবরের মতোই তিক্ত৷ এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, বালিতে আগামী ১৪ নভেম্বর বৈঠক করবেন বাইডেন ও শি৷ বৈঠকের উদ্দেশ্য হলো, দুই দেশের মধ্যে আলোচনা ও যোগায়োগের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া ও তা আরো জোরদার করা৷
এছাড়াও নিজেদের স্বার্থ বজায় রেখে কীভাবে দুই দেশের সম্পর্ক আরো ভালো করা যায়, সহযোগিতা বাড়ানো যায় তা নিয়েও বাইডেন ও শি আলোচনা করবেন বলে জানানো হয়েছে৷ বিশেষ করে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, আলোচনায় সেগুলোও গুরুত্ব পাবে৷
এখন বাণিজ্য নীতি, রাশিয়ার ইউক্রেনে আগ্রাসন, তাইওয়ান সম্পর্কে চীনের মনোভাব নিয়ে দুই দেশের তীব্র মতবিরোধ রয়েছে৷
সংবাদসংস্থা এপি জানাচ্ছে, এই শীর্ষবৈঠক নিয়ে হোয়াইট হাউস ও চীনের কর্মকর্তারা বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে আলোচনা করেছেন৷
শি জিনপিং কয়েক সপ্তাহ আগে তৃতীয় মেয়াদের জন্য কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন৷ তিনি চীনের সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন৷ তারপরেই তিনি বাইডেনকে চিঠি লিখে বলেছিলেন, পরিবর্তিত সময়ের চাহিদা মেনে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র যেন আরো কাছাকাছি আসার চেষ্টা করে৷ বাইডেনও বলেছিলেন, অ্যামেরিকা চীনকে প্রতিযোগী হিসাবে দেখে৷ তারাও বিরোধ চায় না৷
কিন্তু দুই দেশের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রটাও বিশাল৷ চীন মনে করে, তাইওয়ান তাদের অংশ এবং তারা তাইওয়ানকে মূল চীনের অংশ করতে চায়৷ কিন্তু বাইডেন বেশ কয়েকবার বলেছেন, চীন যদি জোর করে তাইওয়ান দখল করতে চায়, তাহলে অ্যামেরিকা চুপ করে বসে থাকবে না৷ চীনের আপত্তি সত্বেও মার্কিন হাউসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফর করেছেন৷ তারপর তাইওয়ান ঘিরে চীন সামরিক মহড়া করেছে৷ সম্প্রতি চীনে উইগুর মুসলিমদের উপর নির্যাতন নিয়ে অ্যামেরিকা সহ পশ্চিমা দেশগুলি আবার সোচ্চার হয়েছে৷ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধেও চীন পুটিনের পাশে আছে৷ অ্যামেরিকা তা ভালো চোখে দেখছে না৷
বাইডেন যা চান
বাইডেন গত বুধবার বলেছেন, তিনি তাইওয়ান প্রসঙ্গ নিয়ে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে কথা বলবেন৷ এর পাশাপাশি রাশিয়ার সঙ্গে চীনের সম্পর্ক ও বাণিজ্যনীতি নিয়েও কথা হবে৷
বাইডেন জানিয়েছেন, ''আমি যখন শি জিনপিংয়ের সঙ্গে কথা বলবো, সেখানে দুই দেশের জন্য একটা রেড লাইন তৈরির চেষ্টা করবো৷ চীনের জাতীয় স্বার্থ বলতে শি জিনপিং ঠিক কী বোঝাতে চান, সেটাও জানার চেষ্টা করবো৷ অ্যামেরিকার জাতীয় স্বার্থর কথাও বলবো৷ এটাও দেখার চেষ্টা করো, দুই দেশের স্বার্থ পরষ্পরবিরোধী কিনা৷''
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন প্রশাসনিক কর্তা জানিয়েছেন, এই বৈঠক থেকে খুব বেশি কিছু প্রত্যাশা না করাই ভালো৷ বৈঠকের পর কোনো যৌথ বিবৃতি থাকবে না৷ বলা যেতে পারে, বাইডেন এখন চীনের সঙ্গে একটা সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে চান৷
জিএইচ/এসি (এপি, রয়টার্স)