1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রধানমন্ত্রী মোদী কেন মিজোরামে প্রচারে গেলেন না?

গৌতম হোড় নয়াদিল্লি
৩০ অক্টোবর ২০২৩

ভোটপ্রচারে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু মিজোরামে যাচ্ছেন না প্রধানমন্ত্রী মোদী। কেন এই সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি?

https://p.dw.com/p/4YBcm
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মিজোরামে নির্বাচনী জনসভা বাতিল করলেন। ছবি: Adnan Abidi/REUTERS

ভারতের কোনো রাজ্যে নির্বাচন হলে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ একাধিকবার সেই রাজ্যে প্রচারে যান। ছোট রাজ্য হলে অন্তত একবার প্রধানমন্ত্রী মোদী নির্বাচনী প্রচার করে আসেন। মিজোরামের ক্ষোত্রে ঠিক ছিল মোদী সেখানে মামিত বলে একটা ছোট জনপদে যাবেন এবং নির্বাচনী জনসভা করবেন। কিন্তু সেই জনসভা বাতিল করা হয়েছে। 

সোমবার প্রধানমন্ত্রীর এই জনসভা করার কথা ছিল। কিন্তু মিজোরামের বিজেপি প্রধান ভানলালমউকা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী মিজোরাম যাচ্ছেন না। মামিতে অমিত শাহ জনসভা করবেন। তবে তিনি কবে আসবেন তা এখনো ঠিক হয়নি।

আগামী ৭ নভেম্বর মিজোরামে বিধানসভা নির্বাচন। ৫ নভেম্বর প্রচার শেষ হবে। ফলে তার মধ্যেই শাহকে মামিত যেতে হবে। 

অমিত শাহের জন্যও ভারতীয় বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারের আগে থেকে ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে। সেই হেলিকপ্টারে গিয়ে, সেটাতেই পিরে সোজা দিল্লি চলে আসবেন তিনি। আইজলে কোনো জনসভা বা থাকার পরিকল্পনা নেই বলে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট জানাচ্ছে। 

মিজোরামের আইজল শহর। এখান থেকে মামিত প্রায় একশ কিলোমিটার দূরে।
মিজোরামের আইজল শহর। এখান থেকে মামিত প্রায় একশ কিলোমিটার দূরে। ছবি: robertharding/IMAGO

কিন্তু মামিতের জনসভা কেন বাতিল করলেন প্রধানমন্ত্রী তার কোনো কারণ রাজ্য বিজেপি সভাপতি দেননি। দিল্লির একাধিক বিজেপি নেতাকে প্রশ্ন করেও কোনো উত্তর মেলেনি। তবে সপ্তাহখানেক আগে মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা জানিয়ে দিয়েছিলেন, তারা এবার ভোটে বিজেপি-র সঙ্গে কোনো জোটে যাচ্ছেন না। কারণ, মণিপুরে বিজেপি-র সরকার আছে। আর মণিপুরে যা হয়েছে তাতে মিজোরামের মানুষ ক্ষুব্ধ। এখন তাই বিজেপি-র সঙ্গে যাওয়া সম্ভব নয়। এমনকী মুখ্যমন্ত্রী এটাও জানিয়ে দিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী এসে মামিত যাবেন, সেখানে তিনি বা তার দলের কেউ থাকবেন না। 

মিজোরামে ৮৭ শতাংশ মানুষই ক্রিশ্চান। আর মিজোরাম হলো মণিপুরের প্রতিবেশী রাজ্য। ফলে মণিপুরের প্রতিক্রিয়া মিজোরামে স্বাভাবিকভাবেই পড়তে পারে। 

কিন্তু কংগ্রেস নেতা ও সাবেক মন্ত্রী জয়রাম রমেশ অন্য যুক্তি দিয়েছেন। তিনি এক্স-এ(সাবেক টুইটার) লিখেছেন, ''মণিপুর সংকট নিয়ে মোদী পুরোপুরি নীরব ছিলেন। মণিপুরে ১৮০ দিন ধরে টালমাটাল পরিস্থিতি চলেছে। সেখানে না গিয়ে প্রতিবেশী মিজোরামে কোন মুখে ভোটপ্রচারে যাবেন প্রধানমন্ত্রী?''

মণিপুর নিয়ে কংগ্রেস প্রথম থেকেই দুইটি প্রশ্ন করেছে। কেন প্রধানমন্ত্রী চুপ এবং কেন তিনি মণিপুরে যাচ্ছেন না

যুদ্ধক্ষেত্র আসাম-মিজোরাম সীমানা

মামিত কেন?

মামিত হলো মিজোরামের খুব সুন্দর কিন্তু খুবই ছোট জনপদ। তহশিলদারের অফিসকে কেন্দ্র করে এই জনপদ গড়ে উঠেছে। গোটা মামিত জেলায় সাত হাজার সাতশর মতো মানুষ বসবাস করেন।

বাইরে থেকে খুব বেশি মানুষ মামিত যান না। তবে ব্যতক্রম হলেন অমিতাভ রায়। যোজনা কমিশনের এই প্রাক্তন আমলা এবং সাহিত্যিক অমিতাভ রায় মামিত গেছিলেন কর্ণফুলী নদীর উৎস দেখতে। মামিত থেকে কিছুটা দূরে গেলে দেখা যায় কর্ণফুলী নদীর এই উৎস। ডয়চে ভেলেকে অমিতাভ রায় বলেছেন, ''মামিতে মিজোদের তুলনায়  ব্রু রিয়াং,  চাকমারা সংখ্যায় বেশি। সম্ভবত সে কারণেই গতবার এখান থেকে বিজেপি ভালো ফল করে। সেজন্যই সম্ভবত প্রধানমন্ত্রীর জনসভা এখানেই হওয়ার কথা ছিল। তবে ব্রু রিয়াং ও চাকমারা এখন কী ভাবছেন, তা বোঝা যাচ্ছে না বলেও তিনি জনসভা বাতিল করতে পারেন।''

এমনও হতে পারে প্রধানমন্ত্রীর কাজ পড়ে গেছিল। কিন্তু সেক্ষেত্রে তিনি পরেও যেতে পারতেন। প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তার মতে, ''প্রধানমন্ত্রী মণিপুরে যাননি। এখন মিজোরামে গেলে নানান প্রশ্ন উঠত। মিজোরামেও কুকিরা আছে। বাকি জনজাতিরাও আছে। ফলে বর্তমান পরিস্থিতিতে সেখানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।''

শরদ বলেছেন, ''তাছাড়া মণিপুরে বিজেপি যে হইহই করে জিতবে তা নয়। গতবার একটা আসনে জিতেছিল। এবার সেটাও পাবে কি না সন্দেহ। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী সেখানে গিয়ে কেনই বা বিপক্ষকে রাজনৈতিক সুবিধা পাইয়ে দেবেন? প্রশ্ন তোলার সুযোগ দেবেন ?''

শরদ মনে করেন, অমিত শাহ গেলেও সেটা টোকেন ভিজিট হিসাবেই থাকবে।

ডয়চে ভেলের দিল্লি প্রতিনিধি গৌতম হোড়৷
গৌতম হোড় ডয়চে ভেলের দিল্লি প্রতিনিধি৷