প্রধানমন্ত্রীর জনসভার জায়গা বাড়াতে ভাঙা হলো দেয়াল
২৩ নভেম্বর ২০২২এভাবে স্টেডিয়ামের দেয়াল ভেঙে পাশের কলেজ মাঠ এক করা হয়েছে। সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে পৌর পার্কের সঙ্গেও। এসবের মূল উদ্দেশ্য বেশি মানুষের জন্য জায়গা করে রাখা৷
শেখ হাসিনা ভাষণ দেবেন জনসভাস্থল যশোরের খরকি এলাকার শামসুল হুদা স্টেডিয়াম মাঠে। মাঠের জায়গা বাড়াতে উত্তর পাশের দেয়াল ভেঙে ডাক্তার আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপাল কলেজ মাঠের সাথে একীভূত করা হয়েছে। পৌর পার্কের একাংশের সঙ্গেও সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে।
যশোর জেলা আওয়ামী লীগেরসভাপতি শহীদুল ইসলাম মিলন জানান, যশোরে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সমাবেশের উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। তিনি বলেন, "শুধু যশোর নয়, পুরো খুলনা বিভাগের সব জেলা থেকে নেতা-কর্মীরা এই সমাবেশে যোগ দেবেন। খুলনা থেকে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্যান্য জেলা থেকে বাস ও ট্রাকে করে লোকজন আসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শহরে মাইকিং করা হচ্ছে। গ্রামে গ্রামেও মাইকিং করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি কমপক্ষে ১০ লাখ লোক হবে সমাবেশে। পুরো যশোর শহরই লোকে লোকারণ্য হয়ে যাবে। তাই স্টেডিয়ামের সঙ্গে পাশের কলেজের মাঠকে এক করা হয়েছে।”
তার কথা, "স্টেডিয়ামের ওই পাশে কোনো গ্যালারি ছিল না। পুরনো দেয়াল ছিল। পিডাব্লিউডি ওটা রাখার পক্ষে মত দেয়নি। সেটা ভাঙা হয়েছে। স্টেডিয়ামের উন্নয়নে এরমধ্যেই বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সমাবেশের পর কাজ শুরু হবে। তখন নতুন করে গ্যালারি বানানো হবে। যে দেয়াল ভাঙা হয়েছে সেখানেও গ্যালারি হবে।”
করোনা মহামারি শুরুর পর এই প্রথম ঢাকার বাইরে কোনো জনসমাবেশে উপস্থিত হচ্ছেন শেখ হাসিনা। তিনি এখানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেবেন। ঢাকার বাইরে এটাই হবে প্রথম বড় ধরনের কোনো শো-ডাউন। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় নেতা ও কয়েকজন মন্ত্রী মাঠ পরিদর্শন করেছেন। তারা সমাবেশের সর্বশেষ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছেন। ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পুরো শহরকে সাজানো হচ্ছে। অনেক বড় মঞ্চ করা হচ্ছে নৌকার আদলে। এলইডি লাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানান স্থানীয় আয়ামী লীগ নেতারা।
যশোর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি ফারাজি আহমেদ সাঈদ বুলবুল জানান,"এর আগে শেখ হাসিনা যশোরঈদগাঁ মাঠে সমাবেশ করেছেন। কিন্তু এবার যে ধরনের বড় সমাবেশের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে অতীতে আর তা কখনোই হয়নি। তাই স্টেয়িয়ামে সমাবেশ হবে। স্টেডিয়াম ঈদগাঁ মাঠের চেয়ে বড়। তারপরও বড় মঞ্চ করা হবে, নিরাপত্তার বিষয় আছে সেজন্য স্টেডিয়াম ও কলেজ মাঠকে দেয়াল ভেঙে একীভ‚ত করা হয়েছে। দুটি মাঠ প্রায় একই সমান। আর স্টেডিয়ামের প্রবেশ পথেই পৌর পার্ক, সেটাও বড়। সেখানে জনসভার লোকজন অবস্থান করতে পারবেন।”
তিনি জানান, " যশোর টাউন হল মাঠ এবং ঈদগাঁ মাঠেও বড় পর্দা দেয়া হবে। ওই মাঠ দুইটিও প্রস্তুত করা হয়েছে। আসলে পুরো যশোর শহরই জনসভার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।”
যশোর জেলা ক্রীড়া পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক এ বি এম আখতার হোসেন বলেন, লাখ লাখ লোক হবে, তাই স্টেডিয়াম ও কলেজ মাঠকে এক করা হয়েছে। তিনি বলেন, "স্টেডিয়ামের গ্যালারি পুরনো ছিল, গ্যালারি নয় আসলে পুরনো দেয়াল ছিল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তা ও মন্ত্রী মহোদয় এসে তাই ভাঙার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। আমরা জেলা ক্রীড়া পরিষদ এর সঙ্গে যুক্ত নই। প্রকৌশলীরা এখনো কাজ করছেন। আমাদের ১০ টাকার ক্ষতি হলেও ১০০ টাকার কাজ করে লাভ করে দেয়া হচ্ছে। স্টেডিয়ামের ভবন তিন তলা হবে। আমাদের টিনের কিছু দেয়াল ছিল তা ঠিক করে দেয়া হয়েছে। এরপর স্টেডিয়ামের উন্নয়নমূলক কাজও হবে।”
তবে যশোর জেলাবিএনপিরসভাপতি দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, "তারা এখন জনগণের টাকায় দেয়াল ভেঙে যখন যা খুশি তখন তা করতে পারে। তারা এখন রাষ্ট্র ক্ষমতায়, যা ইচ্ছা করতেই পারে। কিন্তু আমরা আমাদের প্রাপ্য অধিকারটুকুও পাই না। আমরা ছোটখাটো অনুষ্ঠান করতে গেলেও নানা বিপত্তি।”
তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, "না, আমরা রাষ্ট্রের সম্পত্তি নষ্ট করে এরমকম সুবিধা চাই না। আমরা আইনগতভাবে আমাদের যা প্রাপ্য তা যেন পাই।”