প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিশ্বব্যপী কোটি কোটি মানুষ গৃহহীন
১৭ জুন ২০১১অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র বলেছে, দুর্যোগের কারণে উদ্বাস্তু হয়ে পড়ার শতকরা ৯০ ভাগ ঘটনাই ঘটে বন্যা এবং ঘূর্ণীঝড়ের মতো আবহাওয়াজনিত বিপদের কারণে৷ গত ৬-ই জুন অসলোতে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে জেনেভা ভিত্তিক কেন্দ্রটি এই সম্পর্কিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করে৷ ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত দুই দশকের মধ্যে বিশ্বে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা ২'শ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪'শ৷ অর্থাৎ দ্বিগুন হয়েছে৷
প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়েছে, গত বছরে এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হেনেছে সবচেয়ে বেশি৷ আর এর ফলে ভারত, ফিলিপাইন্স, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, চীন এবং পাকিস্তানে বিপুল সংখ্যক মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে৷
বাংলাদেশ দুর্যোগ প্রস্তুতি কেন্দ্রের পরিচালক মুহাম্মদ সাইদুর রহমানকে জিজ্ঞেস করেছিলাম বিশ্বব্যপী জলবায়ু পরিবর্তনই এর কারণ কী না? তিনি বলেছেন, ‘‘অবশ্যই এটি বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের ফল৷ বাংলাদেশে আগে সাইক্লোনের ফ্রিকোয়েন্সি ছিল, আট থেকে দশ বছর৷ এখন আমাদের ২০০৭ সালে হয়েছে সিডর, ২০০৯ সালে হয়েছে আইলা, এরপরে নার্গিস৷ সুতরাং, অবশ্যই এটা ক্লাইমেট চেঞ্জের একটা ইমপ্যাক্ট৷''
২০০৯ সালে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আইলা ও ২০০৭ সালে সিডর বয়ে যায় বাংলাদেশের ওপর দিয়ে৷ তছনছ করে দেয় উপকূলীয় অঞ্চল৷ সিডর সম্পর্কে টাইম ম্যাগাজিনের একটি প্রতিবেদনে সেই সময়ে বলা হয়েছিল, দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ বাংলাদেশে ১০০ মাইল বেগে বয়ে যাওয়া ঐ সাইক্লোনে ১হাজারেরও বেশি লোক মারা যায়৷ যা ছিলো ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড় থেকেও ভয়ঙ্কর এবং ভয়াবহ৷ প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বিপর্যয়ে টাইমের তালিকায় ২০০৭ সালে প্রথমে স্থান পেয়েছিল বাংলাদেশের সিডর৷ দ্বিতীয় স্থানে দক্ষিণ অ্যামেরিকার অনাবৃষ্টি এবং যথাক্রমে অন্যান্য দুর্যোগের মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে ছিল মেক্সিকোর বন্যা
প্রকৃতিক দুর্যোগে হাজার হাজার মানুষ বারবার বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়ছেন, এই অবস্থা প্রতিরোধে কী ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ সে সম্পর্কে মুহাম্মদ সাইদুর রহমান বললেন, ‘‘একমাত্র উপায় হচ্ছে, এটার ঝুঁকি কমাতে হবে৷ জরুরি ত্রাণ দরকার নেই আমি তা বলছি না৷ উপকূলীয় অঞ্চলে যারা বাস করছেন, তারা জানেন যে, এখানে ঝুঁকি আছে৷ তবু কেন বাস করছেন, কারণ তার কোন অল্টারনেটিভ নেই৷ শুধু তার জীবিকার জন্যে তিনি সেখানে আছেন৷ সুতরাং সত্যি তাদের জন্যে কিছু করতে হলে, স্থায়ী জীবিকার মাধ্যমে তার ঝুঁকিটাকে কমাতে হবে৷ তাকে সচেতন করতে হবে৷''
প্রতিবেদন: ফাহমিদা সুলতানা
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক