অভিবাসন ও অনুপ্রবেশ
২ নভেম্বর ২০১৮২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচার অভিযানে ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিবাসন ও অনুপ্রবেশের বিষয়টিকে হাতিয়ার করে নিজের ভোটারদের সমর্থন আদায় করতে পেরেছিলেন৷ তিনি দক্ষিণে মেক্সিকো সীমান্তে মেক্সিকোরই অর্থে প্রাচীর তৈরি করে বেআইনি অনুপ্রবেশ বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ সংসদের উভয় কক্ষে রিপাবলিকান দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা সত্ত্বেও আজও সেই প্রাচীর তৈরি হয়নি৷ মেক্সিকোও তার অর্থায়ন করতে এগিয়ে আসেনি৷
এবার ‘মিড টার্ম' নির্বাচনে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্ন কক্ষ হাউস অফ রিপ্রেসেন্টেটিভের সব আসন ও উচ্চ কক্ষ সেনেটের এক-তৃতীয়াংশ আসনের জন্য লড়াই চলছে৷ আগামী ৬ই নভেম্বর ভোটাররা কোনো একটি কক্ষেও বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ফিরিয়ে আনলে প্রেসিডেন্টের পক্ষে বাকি দুই বছর নিজের অনেক সিদ্ধান্তের অনুমোদন করানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে উঠবে৷ তাই রিপাবলিকান সমর্থকদের উদ্বুদ্ধ করতে শেষ মুহূর্তে কিছু কড়া পদক্ষেপ নেবার চেষ্টা করছেন ট্রাম্প৷ নির্বাচনের কারণে সংসদের অধিবেশন না থাকায় নির্বাহী আদেশ জারি করে সেই সব সিদ্ধান্ত কার্যকর করার চেষ্টা করছেন তিনি৷ তবে সেই সব সিদ্ধান্তের ভিত্তি ভুলত্রুটি ভরা বলে বিভিন্ন সূত্র উল্লেখ করছে৷
মেক্সিকো সীমান্তে বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের দীর্ঘ সময়ের জন্য আটক রাখতে চান ট্রাম্প৷ তবে আগের নীতির পরিবর্তন করে পরিবারের সদস্যদের একসঙ্গে আটক রাখা হবে৷ কোনোভাবেই যাতে তারা অ্যামেরিকায় প্রবেশের আইনি অধিকার না পায়, তা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেছেন তিনি৷ এই মর্মে নির্বাহী আদেশ জারি করতে চলেছেন তিনি৷ মেক্সিকোর মধ্য দিয়ে দক্ষিণ অ্যামেরিকার শরণার্থীদের যে ‘ক্যারাভান' মার্কিন সীমান্তে পৌঁছাচ্ছে, সেই উদ্যোগকে অ্যামেরিকার উপর আক্রমণ হিসেবে তুলে ধরছেন ট্রাম্প৷ এই সব শরণার্থীর মধ্যে অপরাধী, হত্যাকারী, মধ্যপ্রাচ্যের সন্ত্রাসবাদী রয়েছে বলে তিনি দাবি করে আসছেন৷ এক হত্যাকারীকে নিয়ে তৈরি এক ভিডিও বিজ্ঞাপন দেখিয়ে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, ডেমোক্র্যাটরা এমন দুষ্কৃতিদের অ্যামেরিকায় প্রবেশ করতে দিয়েছে৷ তবে সংবাদ মাধ্যম সেই ভিডিও দেখে মনে করিয়ে দিয়েছে যে, ব্রাকামন্টেস নামের ওই হত্যাকারী রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিইউ বুশ-এর আমলে শেষবার অ্যামেরিকায় প্রবেশ করেছিল৷
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শরণার্থীদের বিরুদ্ধে যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছেন, তার পথে বাধাও দেখা যাচ্ছে৷ নেক্সাস সার্ভিসেস নামের এক কোম্পানি শরণার্থীদের পক্ষ থেকে আদালতে আপীল করেছে৷ শরণার্থীদের আটক করে অ্যামেরিকায় প্রবেশ বন্ধ করার পদক্ষেপকে তারা অসাংবিধানিক হিসেবে চ্যালেঞ্জ করেছে৷ প্রেসিডেন্ট নিজে রাজনৈতিক স্বার্থে ফেডারেল আইন লঙ্ঘন করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে৷
নির্বাচনের ঠিক আগে অ্যামেরিকার উপর আক্রমণের দোহাই দিয়ে মেক্সিকো সীমান্তে ১৫,০০০ সৈন্য মোতায়েনের সিদ্ধান্তও সমালোচনার মুখে পড়ছে৷ আইন অনুযায়ী সৈন্যরা সরাসরি সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দায়িত্ব পালন করতে পারেন না৷ ফলে বেআইনি শরণার্থীদের রুখতে গুলি চালানোর হুমকিও কতটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)