প্রেসিডেন্ট সালেহ সরে দাঁড়াতে রাজি
২৪ এপ্রিল ২০১১তিউনিশিয়ার পর মিশর, তার পরই ইয়েমেন৷ উত্তাল আরব বিশ্বে তৃতীয় নেতা হিসেব গদি ছাড়তে চলেছেন আলি আবদুল্লাহ সালেহ৷ মাত্র দু'কোটি ত্রিশ লক্ষ মানুষের দেশ ইয়েমেন হল আরব বিশ্বে দরিদ্রতম৷ ৩৩ বছর ধরে এখানে শাসন চালিয়েছেন সালেহ৷ ক্ষমতায় এসেছিলেন ১৯৭৮ সালে৷ ১৯৯০ সালে উত্তর এবং দক্ষিণ ইয়েমেনের একীকরণের হোতাও ছিলেন তিনি৷ সম্প্রতি কয়েক বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হয়ে উঠেছিলেন আল-কায়েদার বিরুদ্ধে সংগ্রামে৷ অপরদিকে দেশের উত্তরে শিয়া বিদ্রোহী এবং দেশের দক্ষিণে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ চালিয়ে গেছেন৷ কিন্তু তিউনিশিয়া থেকে মিশর হয়ে বিক্ষোভের ঢেউ ইয়েমেনের তরুণ সমাজকেও উদ্বুদ্ধ করে৷ এখানেও মাসের পর মাস ধরে আন্দোলন চলছে, প্রাণ হারিয়েছে ১৩০ জনের বেশী বিক্ষোভকারী৷
সালেহ বস্তুত ক্ষমতা ছাড়লেন শক্তিশালী প্রতিবেশী সৌদি আরব এবং সুদূর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপে৷ তবে উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদকেও সংশ্লিষ্ট করা হয়েছে৷ সালেহ বিরোধীদের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করার এক মাস পরে তাঁর উপ-রাষ্ট্রপ্রধানের হাতে ক্ষমতা তুলে দেবেন, এই পরিকল্পনা এসেছে উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ জিসিসি'র তরফ থেকে৷ পরিবর্তে সালেহ, তাঁর পরিবার এবং সহযোগীরা বিচারের হাত থেকে মুক্তি পাবেন৷ প্রেসিডেন্ট এবং শাসক জিপিসি দল পরিকল্পনাটি পুরোপুরি মেনে নিয়েছে৷ বিরোধী জোট বলছে, তারা পরিকল্পনাকে স্বাগত জানাচ্ছে - কিন্তু তারা কোনো জাতীয় ঐক্যের সরকারে যোগ দিতে রাজি নয়৷
অপরদিকে হোয়াইট হাউস ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে যে, তারা দ্রুত শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর দেখতে চায়৷ সে লক্ষ্য অর্জিত হবে কি না, এই মুহূর্তে বলা যায় না৷ বিরোধীরা এখনও সন্দেহ করছে, ক্ষমতা হস্তান্তরের অর্থ সালেহ'র পদত্যাগ নয়৷ এই শনিবারেও সালেহ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেছেন, তিনি নির্বাচনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন, কোনো অভ্যুত্থানের কারণে নয়, ইত্যাদি৷ বস্তুত চব্বিশ ঘণ্টা আগেও তিনি ২০১৩ সালে তাঁর কর্মকাল শেষ হবার পরেই বিদায় নেওয়ার কথা বলছিলেন৷ এখন শোনা যাচ্ছে ৬০ দিনের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার কথা৷ মোট কথা, ইয়েমেন জুড়ে বিক্ষোভ এবং অসহযোগ অব্যাহত রয়েছে: এডেন বন্দরে অথবা আবিয়ান কি লাহজ প্রদেশে৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম