প্রেসিডেন্টের পাউরুটি বলে কথা!
১০ আগস্ট ২০১০জার্মানির রাজধানী বার্লিন৷ সেই শহরে কি পাউরুটি পাওয়া যায় না? না, সমস্যাটা তা নয়৷ আসলে হানোফারে থাকতে পছন্দের এক বেকারি থেকে তাজা পাউরুটি খেতেন ক্রিস্টিয়ান উল্ফ৷ সেই অভ্যাস এখনো যেন পেছন ছাড়ছে না৷ প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে রাজধানীর প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে প্রাতরাশ টেবিলে বসে চাই সেই পাউরুটি৷ কোনো সমস্যা নয়৷ হানোফারের বেকারির মালিক দিব্যি রোজ ভোরে পাঠিয়ে দিচ্ছেন প্রেসিডেন্টের পছন্দের পাউরুটি৷
আসলে জার্মানদের পাউরুটি খাওয়ার ব্যাপারটা একটু অন্যরকম৷ রোজ ভোরে – এমনকি রবিবারও বেকারি খুলে যায়৷ গোল মচমচে নানা ধরণের পাউরুটি বিক্রি শুরু হয়ে যায়৷ বাইরেটা শক্ত, ভেতরটা নরম৷ বেশিক্ষণ ফেলে রাখলে শক্ত হয়ে যায়৷ তাই পাউরুটি তাজা খাওয়া চাই৷
ফিরে আসি প্রেসিডেন্টের প্রসঙ্গে৷ তাঁর এই ‘স্বদেশ' প্রীতির বিষয়টা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় চারিদিকে তুমুল সমালোচনার ঝড় উঠেছে৷ ক্ষেপে গেছে বার্লিনের বেকারিগুলি৷ বলছে, ‘‘আমরাও কম কীসের! কী এমন পাউরুটি, যা শুধু ওরা বানাতে পারে?'' পরিবেশবাদীরা বলছেন, অত দূর থেকে খাবার আনানো শুধু খামখেয়ালিপনার পরিচয় নয়, এর ফলে পরিবেশেরও ক্ষতি হচ্ছে৷
তবে প্রেসিডেন্টকে শুধু দোষ দিলে চলবে না৷ কারণ হানোফার শহরের ঐ বেকারি বহু বছর ধরেই বার্লিনের নামি এক হোটেল এবং প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে পাউরুটি সরবরাহ করে আসছে৷ ক্রিস্টিয়ান উল্ফ'এর পূর্বসূরি হর্স্ট ক্যোলারও সেই পাউরুটি খেয়েছেন৷ তবে তাঁর আমলে মাসে দু'বার হানোফার থেকে পাউরুটি আসতো৷
প্রশ্ন উঠতে পারে, হঠাৎ এখনই কেন এই পাউরুটি কাণ্ড নিয়ে হইচই শুরু হচ্ছে? উত্তরটা সহজ৷ জার্মানিতে গ্রীষ্মকালীন ছুটি চলছে৷ খোদ চ্যান্সেলার থেকে শুরু করে মন্ত্রী, সাংসদ – সবাই বেপাত্তা৷ ফলে খবরও তেমন নেই৷ সংবাদ মাধ্যমের মাথায় হাত! গ্রীষ্মের এই শূন্যতা পূরণ করতে তারা হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে খবর৷ তাই প্রেসিডেন্টের পাউরুটি এখন শিরোনামে৷ এখন দেখা যাক, এত হই-হট্টগোলে পাউরুটিতে তাঁর অরুচি আসে কি না৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই