ফরাসি পাটিসাপটার কদরও কম নয়!
২৫ অক্টোবর ২০১৮ফ্রান্সের উত্তর-পশ্চিমে ব্রিটানি অঞ্চলের উপকূল উঁচু-নীচু টিলা ও খানাখন্দে ভরা৷ সেখানে বেশিরভাগ মানুষ পেশায় জেলে অথবা চাষি৷ বিশেষ করে গম চাষের কারণে সেখানে ফ্রান্সের বিখ্যাত ‘ক্রেপ’ বা পাটিসাপটার বেশ চল রয়েছে৷ মধ্যযুগীয় ক্যাঁপেয়ার শহরে এমন দোকানে ভিড় লেগেই রয়েছে৷
শহরের অন্যতম পুরানো দোকানের নাম ‘ক্রেপারি দ্যু ফ্রুজি’৷ ওড্রে গিয়াডের ও তাঁর সহকর্মীরা সেই দোকান চালান৷ সেখানে পাটিসাপটা তৈরি করতে নানা ধরনের গম ব্যবহার করা হয়৷ সাধারণ সাদা ময়দা ছাড়াও বজরার মতো শস্যও ব্যবহার করা হয়৷ ‘ব্লে নোয়ার’ বা কালো গমের আটা দিয়ে ‘গালেৎ’ বা ওয়েফার তৈরি হয়৷ ক্রেপ রাঁধুনী ওড্রে গিয়াডের বলেন, ‘‘এখানে লবণ দিয়েছি৷ আমার কাছে নানা রকম আটা-ময়দা রয়েছে৷ ভালো করে মেশাতে হয়৷ তারপর ডিম আর পানি দিতে হয়৷ ভালো করে মাখতে হয়৷ তারপর ক্রেপ তৈরির লোহার পাতের উপর ছড়িয়ে দিতে হয়৷ সেই লোহার তাপমাত্রা ২০০ ডিগ্রি হতে হবে৷ তার আগে তেল বা মাখনের বদলে ডিমের হলুদ অংশ দিয়ে মাখিয়ে নিতে হবে৷’’
ব্রিটানি অঞ্চলে লবণাক্ত মাখনের ব্যবহার বেশি৷ মাঝে ডিমের পোচ, তারপর চিজ ও হ্যাম৷ তারপর ভাঁজ করে উপরে লবণাক্ত মাখন দিলেই রান্না শেষ৷ ছাগলের দুধ অথবা শেওলা ধরা চিজ, সসেজ, বেকন অথবা শুকরের মাংস – ব্রিটানি অঞ্চলের পাটিসাপটা ও ওয়েফারের মধ্যে নানা রকম স্থানীয় উপকরণ যোগ করা হয়৷ এমন রসালো খাবারের সঙ্গে স্থানীয় মানুষ আপেলের ওয়াইন পান করেন৷
মধ্যযুগেই এই অঞ্চলে বজরা খাওয়া হতো৷ চীন থেকে এই শস্য ফ্রান্সে এসেছিল৷ চাষিরা খুশিমনে তা গ্রহণ করে৷ ব্রিটানি অঞ্চলের রুক্ষ মাটিতে তার ফলনও ভালো হয়৷ ওড্রে গিয়াডের বলেন, ‘‘বজরা বেড়ে উঠতে মাত্র ৩ মাস সময় লাগে৷ এত দ্রুত ফসলের কারণে সেটি বেশ জনপ্রিয় শস্য৷ কাউন্টেস আন দ্য ব্রতাইঁ নিজের উদ্যোগে এই শস্যের ব্যাপক ব্যবহার সম্ভব করেছিলেন৷ তিনি এই অঞ্চলকে উত্তর ও দক্ষিণে বিভক্তও করেছিলেন৷ উত্তরে ক্রেপ ও দক্ষিণে গালেৎ পাওয়া যেতো৷’’
শুধু পর্যটক নয়, ব্রিটানির মানুষও তাঁদের ক্রেপ ও গালেৎ খেতে ভালবাসেন৷ ‘ক্রেপারি দ্যু ফ্রুজি’ দোকানে এসে তাঁরা পছন্দমতো উপকরণ বেছে নিতে পারেন৷ এই পদের দাম কম হওয়ায় অনেকেই একাধিক পাটিসাপটা খেয়ে থাকেন৷ যেমন, শেষ পাতে মিষ্টি ক্রেপ৷ এই দোকানের আবার চকোলেট ও জ্যামের মতো একাধিক স্বাদের নিজস্ব ক্যারামেল সস আছে৷ আছে আরও বেশ কিছু সুস্বাদু পদ৷
এসবি/এসিবি