‘ফার্গুসন ফুটবলকে এশিয়ায় নিয়ে আসেন’
১০ মে ২০১৩বাংলাদেশেও এক দশকের বেশি সময় ধরে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের খেলা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে৷ সেই অনুপাতে ম্যান ইউ-এর ফ্যান সেদেশেও কম নয়৷ কিন্তু জাপান কি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, এমনকি চীনের ক্ষেত্রে এই ম্যান ইউ ম্যানিয়া মাত্রা ছাড়িয়েছে৷ তার একটি কারণ ক্লাবটি জেনে-বুঝে বেঁধে-সেধে এশিয়া জয়ের নীতি অনুসরণ করেছে, যে নীতির স্থপতিদের মধ্যে অবশ্যই অ্যালেক্স ফার্গুসনের নাম করতে হয়৷
এশিয়া বিজয়
গত বছরে করা একটি জরিপ অনুযায়ী, সারা বিশ্বে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের প্রায় ৬৬ কোটি ফ্যান আছে, তাদের মধ্যে ৩২ কোটির উপর এশিয়ায়৷ শুধুমাত্র বিদেশে টেলিভিশন সম্প্রচারের স্বত্ব থেকে ম্যান ইউ ২০১০ সালে রোজগার করে ২২০ কোটি ডলার৷ এবার নাকি তা আরো ৩০ শতাংশ বাড়বে৷ এক কথায়, ইউনাইটেডের এশিয়ায় সম্প্রসারণের পরিকল্পনা পুরোপুরি সফল হয়েছে৷ একটা গোটা প্রজন্মের ফুটবল ফ্যানরা অ্যালেক্স ফার্গুসনকে চিউয়িং গাম চিবোতে দেখে বড় হয়েছে৷ সর্বত্র যে ‘স্পোর্টস বার'-গুলি গজিয়ে উঠেছে, সেখানে এশীয় ফ্যানরা ম্যান ইউনাইটেডের শার্ট পরে বসে ভিড় করে খেলা দেখে৷ ফার্গুসন স্বয়ং সিজন শুরু হবার আগে দলকে নিয়ে একবার অন্তত এশিয়ায় যাবেনই৷ এবারও ম্যান ইউ আগামী জুলাইতে যাচ্ছে থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও হংকং-এ৷ সাধে কি টোশিবা কিংবা সিংঘা বিয়ারের মতো কোম্পানি ম্যান ইউ-এর স্পন্সরদের তালিকায় নাম লেখায়৷
ওদের মাঠে আমাদের প্লেয়ার
তবে এশিয়ার চোখে ফার্গুসনের সবচেয়ে বড় গুণ হলো, তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার পার্ক জি-সুং কিংবা জাপানের শিনজি কাগাওয়ার মতো প্লেয়ারদের ইউনাইটেডের ক্যাডারে এনেছেন৷ পার্ক যখন প্রথম এশীয় হিসেবে ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতেন, কিংবা প্রথম এশীয় হিসেবে ইউনাইটেডের ক্যাপ্টেনের আর্মব্যান্ড পরেন, তখন এশীয়দের গর্ব হওয়াটা স্বাভাবিক৷ ফার্গুসন কিন্তু এশিয়ায় ম্যান ইউ-এর ফ্যান বাড়ানোর উদ্দেশ্যে এই সব এশীয় প্লেয়ারদের স্বাক্ষর করাননি; তারা ভালো খেলে বলেই তাদের দলে নিয়েছেন স্যার অ্যালেক্স – এশিয়ার মানুষ মনেপ্রাণে এই বিশ্বাস করে৷ কাগাওয়ার কাছ থেকে তাই তাদের প্রত্যাশাও অনেক৷
কাছের মানুষ দূরে চলে গেলে
সেই অ্যালেক্স ফার্গুসন চলে যাচ্ছেন৷ কাজেই ইউনাইটেড ও স্যার অ্যালেক্সের এশীয় ফ্যানরা মর্মাহত৷ ‘‘উনি আর যা কিছু করে থাকুন বা না থাকুন, উনি ফুটবলকে এশিয়ায় নিয়ে এসেছেন, এশিয়ার মানুষের কাছে নিয়ে এসেছেন, কেননা এখানকার মানুষ তো আর ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে যেতে পারে না,'' বলেছেন মালয়েশিয়ায় সরকারি ম্যান ইউ ফ্যান ক্লাবের সম্পাদক লরেন্স হাও৷ শাংহাই-এ ম্যান ইউ ফ্যান ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ডেভিড ফ্যান বলেছেন, ‘‘অধিকাংশ সাপোর্টাররাই (স্যার অ্যালেক্সের যাওয়ার খবর শুনে) বিধ্বস্ত৷'' ওদিকে চীনের ম্যান ইউ সাপোর্টাররা তাদের টুইটার সেবা ওয়েবো ভাসিয়ে দিচ্ছে বার্তার পর বার্তায়৷
এরই নাম ম্যান ইউ, এরই নাম আলেক্স ফার্গুসন৷
এসি/ডিজি (এএফপি)