মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশংকা
১২ নভেম্বর ২০১৩সুপারস্টর্ম হাইয়ানের আঘাতে লন্ডভন্ড টাকলোবানে এখনো নেই বিদ্যুৎ, নেই পানি৷ প্রবল বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় উদ্ধার কাজ যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি শরণার্থীদেরও ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে৷ বেশিরভাগ শরণার্থী পুরো রাত বৃষ্টিতে ভিজে কাটিয়েছেন৷ ৮১ বছর বয়সী বৃদ্ধ অ্যারিস্টোন এপি-কে বলেছেন, তাদের সাহায্যের প্রয়োজন৷ প্রায় দুদিন না খেয়ে রয়েছেন তিনি৷
বাড়তে পারে মৃতের সংখ্যা
ঘূর্ণিঝড়ে যেসব এলাকা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, সেসব গ্রামে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে উদ্ধারকর্মীরা৷ প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে পৌঁছালে এবং উদ্ধার তৎপরতা শুরু হলে ধ্বংসের আসল চেহারাটা বোঝা যাবে বলে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ৷ জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার হলেও মৃতের সংখ্যা আরো বেশি বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ এদিকে সরকারি হিসেব অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা ১,৭৪৪ এবং আহতের সংখ্যা ২৪৮৭ বলে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে৷
জরুরি অবস্থা জারি
টাকলোবানে লুটপাট বন্ধ করতে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে স্থানীয় সময় রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত কারফিউ ঘোষণা করেছে স্থানীয় সরকার৷ লুটপাট বন্ধ করতে এর মধ্যে সাঁজোয়া যান এবং তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিপাইন্স সরকার৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মানুয়েল রোক্সাস জানিয়েছেন, ঝড়ে অনেক কর্মকর্তা মারা গেছেন এবং অনেকেই নিখোঁজ৷ তাই ২৯৩ জন পুলিশের মধ্যে কর্মক্ষম মাত্র ২০ জন৷
মার্কিন ও ব্রিটিশ যুদ্ধ জাহাজ ফিলিপাইন্সে
ত্রাণকাজে সহায়তা করতে সোমবারই মার্কিন সেনাবাহিনীর একটা দল ফিলিপাইন্সে পৌঁছেছে৷ মঙ্গলবার মার্কিন ত্রাণবাহী বিমানবহর ফিলিপাইন্সের উদ্দেশে রওনা হয়েছে৷ ৮০টি বিমান এবং ৫ হাজার সেনা রয়েছে সেই বহরে৷ এছাড়া মার্কিন নৌবাহিনীর চারটি জাহাজ দুর্যোগপূর্ণ উপকূলের উদ্দেশে রওনা হয়েছে৷
ত্রাণ সামগ্রীসহ একটি যুদ্ধ জাহাজ ফিলিপাইন্সের উপকূলের উদ্দেশে পাঠিয়েছে ব্রিটেন৷ এতে আছে উদ্ধার কাজের সামগ্রী এবং লবণাক্ত পানি থেকে সুপেয় পানির বের করার যন্ত্র৷
জেল ভেঙে পালিয়েছে কয়েদিরা
ফিলিপাইন্সের সেনা প্রধান মঙ্গলবার জানিয়েছেন, টাকলোবানের একটি জেলখানা থেকে বেশ কিছু কয়েদি পালিয়ে গেছে৷ কারারক্ষী ফাঁকা গুলি ছুড়লে কয়েকজন ফিরে এলেও বাকিরা আর ফেরেনি বলে জানিয়েছেন তিনি৷ ঐ জেলখানায় অন্তত ৬০০ কয়েদি ছিল৷ তবে ঠিক কতজন পালিয়েছে সেই সংখ্যাটা তার জানা নেই৷
ত্রাণের ঘোষণা
জার্মানি মঙ্গলবার জানিয়েছে, ফিলিপাইন্সে সাহায্যের পরিমাণ বাড়িয়ে ১০ লাখ ইউরো করা হবে৷ এর আগে ৫ লাখ ইউরো অর্থ সাহায্যের ঘোষণা দিয়েছিল জার্মানি৷ জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে জানিয়েছেন, অতিরিক্ত অর্থ গৃহহীন ও আহতদের চিকিৎসায় ব্যয় হবে৷
জাতিসংঘ ত্রাণ কার্যক্রমের প্রধান ভ্যালেরি আমোস সোমবার ফিলিপাইন্সের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে জাতিসংঘ কেন্দ্রীয় জরুরি তহবিল থেকে ২৫ মিলিয়ন ডলার আর্থিক সাহায্য দিয়েছেন৷
এপিবি/এসবি (এপি, এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)