1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে আলোচনার ঘোষণা করলেন নেতানিয়াহু

২৮ আগস্ট ২০০৯

মার্চ মাসে ক্ষমতায় আসার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বিনইয়ামিন নেতানিয়াহু এই প্রথম জার্মানি সফরে এলেন৷ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলকে তিনি ইসরায়েলের প্রকৃত বন্ধু হিসেবে বর্ণনা করেছেন৷

https://p.dw.com/p/JJii
প্রথম জার্মানি সফরে নেতানিয়াহুছবি: AP

শান্তি প্রক্রিয়া

বৃহস্পতিবার বার্লিনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বিনইয়ামিন নেতানিয়াহু ও জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের মধ্যে প্রায় ২ ঘন্টার বৈঠকের মূল বিষয় ছিল মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া৷ নেতানিয়াহু আশ্বাস দিয়েছেন, যে আগামী ২ মাসের মধ্যেই ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা শুরু হবে৷ কোন পূর্ব শর্ত ছাড়াই তিনি আলোচনা শুরু করতে আগ্রহী, বলেন নেতানিয়াহু৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘আমি জার্মান চ্যান্সেলরের সঙ্গে আলোচনায় এই সঙ্কট বন্ধ করার বিষয়ে আমার উদ্দেশ্য জানিয়ে দিয়েছি৷ এক্ষেত্রে আমাদের সমাধানসূত্র আমি তাঁকে জানিয়েছি – আর তা হল সামরিক বাহিনী বিহীন এক ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র, যা ইসরায়েলকে ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে৷’’

বসতি নীতির সমালোচনা

ইসরায়েল ফিলিস্তিনি এলাকায় ইহুদি বসতি নির্মাণ চালিয়ে যাওয়ার ফলে আন্তর্জাতিক স্তরে যে সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছে, তার জবাবে মুখে কার্যত কুলুপ এঁটে ছিলেন নেতানিয়াহু৷ মধ্যপ্রাচ্যে বিশেষ মার্কিন দূত জর্জ মিচেলের সঙ্গে লন্ডনে সাম্প্রতিক আলোচনায় বসতির প্রশ্নে কিছু অগ্রগতি হয়েছে বলে জানান তিনি৷ তবে এবিষয়ে কোনো বিস্তারিত তথ্য জানাতে তিনি এদিন প্রস্তুত ছিলেন না৷

Israelischer Siedlungsbau in Har Homa
ফিলিস্তিনি এলাকায় ইহুদি বসতি নীতির বিরুদ্ধে সমালোচনা বেড়েই চলেছেছবি: picture-alliance/ dpa

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক শক্তির মত জার্মানিও যে ফিলিস্তিনি এলাকায় ইহুদি বসতি নির্মাণ বন্ধ করাকে শান্তি প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত হিসেবে মনে করে, জার্মান চ্যান্সেলর ম্যার্কেল তা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন৷ ম্যার্কেল বলেন, ‘‘ইহুদি বসতি নির্মাণ চালিয়ে যাওয়ার নীতি যাতে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের এই সম্ভাবনার পথে কাঁটা হয়ে না দাঁড়ায়, সেবিষয়ে আরও সচেতন হতে হবে৷’’

ম্যার্কেল’এর মতে, এই প্রশ্নে ইসরায়েলি নেতৃত্বকে এক মৌলিক পরিবর্তনের পথে এগোতে হবে৷ সাম্প্রতিক কালে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া কার্যত স্তব্ধ হয়ে গেলেও অদূর ভবিষ্যতে এক স্থায়ী শান্তির সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন ম্যার্কেল৷ বর্তমানে সাফল্যের সম্ভাবনা অত্যন্ত উজ্জ্বল, বলেন তিনি৷

‘ইরান এক হুমকি’

আলোচনার অন্যান্য বিষয়ের ক্ষেত্রে অবশ্য দুই পক্ষই ঐক্যমতে আসতে পেরেছে৷ ইসরায়েলের অস্তিত্বের প্রশ্নে ইরানের নেতৃত্বের খোলামেলা হুমকি ও সেদেশের বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচি যে এক বিশাল বিপদ, এবিষয়ে নেতানিয়াহু ও ম্যার্কেল একমত৷ ইসরায়েলের অস্তিত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে জার্মান রাষ্ট্রের বিশেষ ঐতিহাসিক দায়িত্বের কথাও স্মরণ করেন ম্যার্কেল৷

ম্যার্কেল ইরানের উপর আরও চাপ সৃষ্টি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷ উল্লেখ্য, এই সঙ্কটের সমাধানসূত্র হিসেবে আন্তর্জাতিক সমাজের একগুচ্ছ প্রস্তাবের জবাব দেওয়ার জন্য ইরানকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে৷ ইরান যদি তার মধ্যে সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হয়, সেক্ষেত্রে জ্বালানি ও আর্থিক ক্ষেত্রে ইরানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হতে পারে, বলেন ম্যার্কেল৷

Der israelische Ministerpraesident Benjamin Netanjahu und Bild-Chefredakteur Kai Diekmann
আউশভিৎস কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের মূল নকশা দেখছেন নেতানিয়াহুছবি: AP

হলোকাস্ট সংগ্রহশালার নথি

বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহু বার্লিনের উপকণ্ঠে ভানসে হ্রদের ধারে এক ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন করেন, যেখানে ১৯৪২ সালে নাৎসিরা ইউরোপের ইহুদি সমাজ ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল৷ জার্মানির ‘বিল্ট’ সংবাদপত্রের সম্পাদক নেতানিয়াহুর হাতে আউশভিৎস কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের মূল নকশা তুলে দেন৷ জেরুজালেম শহরে ইহুদি নিধন যজ্ঞের স্মৃতিসৌধ ‘ইয়াদ ভাশেম’এর সংগ্রহশালায় সেটি সংরক্ষিত থাকবে৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন, সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম