ফুকুশিমার শরণার্থীরা...
১২ নভেম্বর ২০১৩২০১১ সালের মার্চে জাপানে ভূমিকম্প ও তার ফলে সৃষ্ট সুনামির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্র৷ ক্ষতিগ্রস্ত চুল্লির ছিদ্র থেকে তেজস্ক্রিয় পানি বের হওয়ায় ঐ এলাকার আশপাশ থেকে অনেক মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়৷ ভূতের শহরে পরিণত হয় ঐ এলাকাটি৷ এমনই এক শরণার্থী ৬১ বছরের ইশিরো কাজাওয়া বললেন, এমন ভাসমান অবস্থায় পুরো জীবন কাটানো তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়৷
গত আড়াই বছর ধরে ঐ এলাকার হাজারো মানুষ অস্থায়ীভাবে বসবাস করছেন বিভিন্ন এলাকায়৷ জাপান সরকার পারমাণবিক চুল্লির আশপাশের এলাকা পরিষ্কারের জন্য যে লক্ষ্য ঠিক করেছিল, তাতে এখনো পৌঁছাতে সমর্থ হয়নি৷ পারমাণবিক চুল্লিটি সারাতে এবং তেজস্ক্রিয়তা যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য কয়েকশ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ের পরিকল্পনা করছে জাপান সরকার৷ জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে-র জোটের পার্লামেন্ট সদস্যরা সোমবার পরামর্শ দিয়েছেন, শরনার্থীদের জানাতে হবে যে আগের সরকার ৩০ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ফুকুশিমার সমস্যা সমাধানের যে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিলেন, তা অর্জন সম্ভব নয়৷ নতুন নীতি অনুযায়ী, এই লক্ষ্যে পৌঁছানো গেলে শরনার্থীদের বাড়ি ফিরতে আর বাধা থাকবে না৷ তখন বন্ধ করে দেয়া হবে ক্ষতিপূরণ৷
সমাজ র্মীদের রিপোর্ট অনুযায়ী, আগস্টে শরণার্থীদের মধ্যে ১৫৩৯ জন মারা গেছেন অসুস্থতায়, সংখ্যাটা সুনামিতে নিহতদের কাছাকাছি৷ যাঁরা বেঁচে আছেন তাঁদের বেশিরভাগই হতাশাগ্রস্ত৷ খালি করে ফেলা এলাকাটুকু হংকং-এর চেয়ে একটু বড়৷ তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা অনুযায়ী, ঐ এলাকাটিকে ১১টি জোনে ভাগ করা হয়েছে৷ পরিবেশমন্ত্রী জানিয়েছেন, ১১টি জোনের মধ্যে ৭টি জোনের কাজ এরই মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, তা সম্ভব না হওয়ায় নতুন তারিখ ঠিক করা হয়েছে৷
সবচেয়ে তেজস্ক্রিয় এলাকা তোমিওকা, সেখানকার অধিবাসী কিকো সিওই জানালেন, যতক্ষণ না তেজস্ক্রিয়তা পুরোপুরি সারানো যাচ্ছে, তাঁদের যত ইচ্ছেই থাকুক সেখানে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়৷ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট থেকে দেখা গেছে, ঐ এলাকার শরণার্থীদের মধ্যে মাত্র ১২ ভাগ তাঁদের পুরোনো বাড়িতে ফেরার আগ্রহ দেখিয়েছেন৷ কেননা ঐসব এলাকার স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, অফিস আদালত কিছুই আর সচল নেই৷
এপিবি/ডিজি (এপি/রয়টার্স)