1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফুকুশিমার অবস্থা বুঝতে রোবটের সহায়তা

২৬ জুলাই ২০২১

পরমাণু বিদ্যুৎ পরিবেশবান্ধব হলেও সেই জ্বালানির ঝুঁকি কত মারাত্মক হতে পারে, এক দশক আগে জাপানের ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিপর্যয় তা স্পষ্ট করে দিয়েছে৷ রোবটের সাহায্যে এখনো চুল্লিগুলির অবস্থা বোঝার চেষ্টা চলছে৷

https://p.dw.com/p/3y3WS
রোজমেরি রোবটছবি: Kyodo/picture alliance

অনেক সময় ধরে মানুষ তেজস্ক্রিয় বিকিরণের শিকার হলে ত্বকে রেডিওডার্মাটাইটিস দেখা যায়৷ কিন্তু বিকিরণের কারণে এমন রোগের আরো অনেক দিক রয়েছে৷ ক্র্যাম্প, অনিয়ন্ত্রিত রক্তপাত, ত্বকের উপর ফোসকা, অস্থিমজ্জার ক্ষতিও হয়৷ ফুকুশিমার চুল্লির মূল অংশের কাছে গেলে বেশিদিন বাঁচা সম্ভব নয়৷

দুর্ঘটনার দশ বছর পরেও বিকিরণের মাত্রা যথেষ্ট বেশি৷ ধ্বংস হয়ে যাওয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিকে স্থিতিশীল করতে বর্তমানে প্রায় সাত হাজার মানুষ কাজ করছেন৷ বিকিরণের কারণে অনেকের পক্ষে মাসে মাত্র কয়েক দিন সেখানে কাজ করা সম্ভব৷

২০১১ সালের ১১ই মার্চ ভয়াবহ ভূমিকম্প ও সুনামির কারণে চুল্লির পারমাণবিক কেন্দ্রস্থল গলে যায়৷ সেই ধ্বংসস্তূপ কি আদৌ সংস্কার করা সম্ভব?

একমাত্র রোবট কাজে লাগিয়ে সেটা করা যেতে পারে, যদিও পুরোপুরি তা সম্ভব নয়৷ কারণ তেজস্ক্রিয় বিকিরণের কারণে কিছু রোবটেরও মৃত্যু ঘটে৷

পরমাণু চুল্লি পরীক্ষায় রোবট

টেপকোর মতো জ্বালানি কোম্পানি এবং তোশিবার মতে প্রযুক্তি কোম্পানি এমন রোবট তৈরি করছে, যেগুলি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংস্কারের কাজে সহায়তা করবে৷ কিন্তু কাজটা মোটেই সহজ নয়৷ কারণ অত্যন্ত কঠিন শর্ত পূরণ করতে হয়৷ ফুকুশিমার তিন সেরা রোবটের মধ্যে প্রথম দুটি হলো রোজমেরি ও সাকুরা৷

ফুকুশিমার ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারের কাজের ক্ষেত্রে এখনো পর্যন্ত অন্যতম প্রধান প্রশ্ন হলো, কোথায় কাজ শুরু করা উচিত?

কারণ বিভিন্ন চুল্লিতে বিস্ফোরণের ফলে ভবনগুলির অংশ ভেঙে পড়ছে৷ দেওয়াল ও সিঁড়ি ধসে পড়ছে, যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেছে৷ প্রত্যেকটি চুল্লির ভবনের পরিস্থিতি ভিন্ন৷ তবে দুর্ঘটনার কারণে তেজস্ক্রিয় উপকরণ যে আধার থেকে বেরিয়ে ভবনের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়েছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷

সাকুরা ও রোজমেরি এমন অবস্থা সত্ত্বেও হস্তক্ষেপ করতে পারে৷ একাধিক তলার ভবন পরীক্ষা করতে ২০১৫ সালে এই দুই রোবট তৈরি করা হয়৷ সেটা একেবারেই সহজ নয়, কারণ অত্যন্ত সরু ও খাড়া সিঁড়ি বেয়ে কয়েকটি তলায় পৌঁছানো সম্ভব৷ রোবটের পক্ষে কাজটা দুরূহ হলেও রোজমেরি ও সাকুরাকে ঠিক সেই দায়িত্বের জন্যই প্রস্তুত করা হয়েছে৷

রোজমেরির শরীরে সেই সঙ্গে এক গামা ক্যামেরাও বসানো হয়েছে, যেটির মাধ্যমে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ শনাক্ত করে দৃশ্যমান করে তোলা সম্ভব৷ ছবিতে বিশেষ রং সেই অংশগুলি চিহ্নিত করছে৷ বিশেষ ওয়্যারলেস সিস্টেমের মাধ্যমে সেই সব ছবি পাঠানোর ব্যবস্থা রয়েছে৷ কিন্তু সেখানেও সমস্যা রয়েছে৷

কড়া নিরাপত্তা বিধি মেনে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি তৈরি করা হয়৷ ভবনগুলির সহ্যশক্তি যথেষ্ট হতে হয়৷ চুল্লির ভবনের পুরু সিমেন্টের দেওয়াল ভেদ করে ওয়্যারলেস সিগন্যাল চলাচল করে না বললেই চলে৷

সেই অসাধ্যসাধন করতে সাকুরা এগিয়ে এসেছে৷ এই রোবট সিগন্যাল ট্রান্সমিটার হিসেবে কাজ করে রোজমেরিকে বহির্জগতে ছবি পাঠাতে সাহায্য করেছে৷

আংশিক এই সাফল্যের মাধ্যমে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা চুল্লির ভেতরের অবস্থা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পেয়েছেন৷

ডরোটে গ্যুন্টার/এসবি