ফুডব্যাংকে ‘নাৎসি’ আতঙ্ক
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮আবার ফিরে এলো ‘নাৎসি’ শব্দের প্রয়োগ, যা নিয়ে উত্তাল জার্মানির সমাজ-রাজনীতি৷
ঘটনার সূত্রপাত এসেন শহরে৷ সেখানে উপার্জনহীন মানুষদের জন্য বিনামূল্যে খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা আছে৷ একটি এনজিও'র মাধ্যমে সেই কাজটি করা হয়৷ সাধারণত রেস্তোরাঁ এবং দোকানগুলি থেকে মেয়াদ শেষের তারিখের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া খাবার নিয়ে আসা হয় ওই সংস্থায়৷ তারপর প্রতি সপ্তাহে সেই খাবার বিলি করা হয় সাধারণ মানুষের মধ্যে৷ লক্ষ্য করা গিয়েছে, অধিকাংশ ক্রেতাই সেখানে বয়স্ক জার্মান মানুষেরা৷ বিনামূল্যে খাবার নিয়ে যাঁরা দিন নির্বাহ করেন৷
সমস্যা অন্যত্র৷ গত কয়েকবছরে জার্মানিতে শরণার্থীর সংখ্যা বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে৷ অভিযোগ, শরণার্থীরাও বিনামূল্যের খাবারের জন্য লাইন দিতে শুরু করেছেন৷ এবং সংখ্যায় তাঁরা এতই বেশি যে, বৃদ্ধ জার্মানরা নাকি তাঁদের ভয় পাচ্ছেন এবং সে কারণে তাঁরা আর বিনামূল্যের খাবারের দপ্তরে যেতে চাইছেন না৷
এসব দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত হয়েছে, জার্মান পাসপোর্ট না থাকলে কাউকে আর ওই সংস্থা থেকে খাদ্য দেওয়া হবে না৷ আর তার ফলেই দাবানল লেগে গিয়েছে৷ সম্প্রতি ওই সংস্থার দপ্তর এবং গাড়িগুলিতে কে বা কারা লিখে দিয়ে গিয়েছে, ‘নাৎসি’ শব্দটি৷ খাবার না পাওয়ার কারণেই ক্ষোভের এই বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করা হচ্ছে৷ এবং তারপর থেকে সন্ত্রস্ত হয়ে আছে সব পক্ষই৷ সংস্থাটির অন্যতম আধিকারিক জর্জ সারতর জানিয়েছেন, সংস্থার কর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে তিনি চিন্তিত৷ কারণ, তাঁদের অনেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন৷ প্রতিবাদীরা এরপর আরো বড় ঘটনা ঘটাতে পারেন, এমন আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ তবে তাঁদের সংস্থার সঙ্গে ‘নাৎসি’ শব্দটিকে জড়িয়ে দেওয়া নেহাতই বালখিল্য বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি৷
এসেন-এর ঘটনার তাপ গোটা জার্মানিতেই লাগছে৷ বামমনস্ক রাজনীতিবিদেরা বলছেন, যে প্রক্রিয়ায় সংস্থাটি শরণার্থীদের বাতিল করেছেন, তা মেনে নেওয়া যায় না৷ বস্তুত, সময় আলাদা করে কিংবা দিন আলাদা করেও সমস্যার মোকাবিলা করা যেতো৷ এর ফলে জার্মান মানুষের সঙ্গে শরণার্থীদের দূরত্ব বাড়বে বলেই তাঁদের বিশ্বাস৷ সব মিলিয়ে নতুন করে ‘নাৎসি' জ্বরে ভুগতে শুরু করেছে জার্মানি৷
এলিজাবেথ শুমাখার/এসজি