ফুল ফুটেছে, চেরির আলোয় মন

জাপানিজ ভাষায় চেরি ফুলের নাম ‘সাকুরা’৷ এটি হলো ‘প্রুনুস সেরাসুস’ জাতের গাছের ফুল৷ মূলত উত্তর গোলার্ধে এর বাস৷ পূর্ব এশিয়ায়, বিশেষ করে জাপানে, সবচেয়ে বেশি দেখা যায়৷ এটি দেশটির জাতীয় ফুল৷ সেখানে নানান জাতের চেরি ফুলের চাষ হয়৷

চেরি ফুল ফোটার পর তার নিচে ভোজ বা উৎসবের আয়োজনকে বলা হয় হানামি৷ এটি জাপানের কয়েক শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্য৷ বলা হয়, এই ঐহিত্যের শুরু ৭১০ থেকে ৭৯৪ খ্রিস্টাব্দে নারা আমলের কোনো এক সময়৷

চেরি ফুল থেকে ভ্যানিলার মতো সুগন্ধ বের হয়৷ এই ফুলে তৈরি হওয়া কুমারিন নামক এক কেমিকেলের কারণে এ সুঘ্রাণ পাওয়া যায়৷

কখনো কখনো ফেব্রুয়ারি, বিশেষ করে মার্চ ও এপ্রিলে টোকিওর পার্ক আর রাস্তাগুলো ছেঁয়ে যায় চেরি ফুলে৷ সাদা, গোলাপি নানান রংয়ের এই ফুলগুলো এক নিদারুণ সৌন্দর্যের চাদরে ঢেকে ফেলে টোকিওকে৷

পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশেও এ সময়টা একটা উৎসবমুখর সময়৷ আর সেই উৎসবের মূল আকর্ষণ চেরি ব্লসম৷ ছবিতে দক্ষিণ কোরিয়ার দুই তরুণীকে সেলফি তুলতে দেখা যাচ্ছে৷

পূর্ব এশিয়া থেকে ইউরোপে চেরি ফুল আসে বিশ শতকের শুরুর দিকে৷ এরপর এর বিভিন্ন জাতের চাষ হয়৷ ব্রিটিশ গাছ সংগ্রাহক কলিংউড ইনগ্রাম চেরি ফুলের গবেষণার জন্য বিখ্যাত৷

জার্মানির বন শহরে আলস্টাড বা পুরোনো শহরের এই রাস্তাটি চেরি ফুলের জন্য বিখ্যাত৷ এখানে চেরি ফুলে পুরো রাস্তা ঢেকে যায়৷ বার্লিনেও চেরি ফুলকে ঘিরে মানুষের উৎসাহ অনেক৷

ইউরোপের অন্যান্য দেশেও চেরি ফুল তার জায়গা করে নিয়েছে৷ ফ্রান্সের প্যারিস থেকে শুরু করে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ ডেনমার্কেও ফোটে এই ফুল৷

১৯১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে বন্ধুত্বের নিদর্শনস্বরূপ জাপান চেরি গাছ উপহার দেয়৷ এরপর সেখানেও এই ফুল ছড়িয়ে পড়ে৷ ছবিতে মার্কিন নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের স্মৃতিস্তম্ভের সামনে চেরি ফুল ফোটার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে৷

ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল হিল প্রাঙ্গনও সয়লাব চেরি ফুলে৷ তাই এ সময়টায় দর্শনার্থীদের ভিড় অনেক৷

বসন্ত এসে গেছে - অথচ কেউ যদি তার ছোঁয়া না পান, তাহলে চলে যান কোনো চেরি ফুলের বাগানে৷ সারি সারি চেরি ফুলে ছেয়ে থাকা পার্কে, বা রাস্তায় হেঁটে বেড়ালেই মন খুশিতে ভরে উঠবে৷