1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফেসবুকে লাইক, ধর্ম অবমাননা এবং নতুন সাইবার আইন

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৩১ মে ২০১৬

শিক্ষককে কান ধরে উঠ-বস করানোর রেশ কাটতে-না- কাটতেই ফেসবুকে ‘লাইক' দিয়ে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে বগুড়ায় এক হিন্দু শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে৷ স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/1Ixil
ফেসবুক লাইক, প্রতীকী ছবি
ছবি: Getty Images

জানা গেছে, গত সোমবার বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের কল্যাণী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিপ্লব কুমার রায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলে স্কুল প্রাঙ্গনে জড়ো হন স্থানীয় কিছু মানুষ৷ তাদের অভিযোগ অনুযায়ী, ওই শিক্ষক ফেসবুকে ইসলাম ধর্ম নিয়ে অবমাননাকর একটি লেখায় ‘লাইক' দিয়েছেন৷

অভিযোগ জানাতে এবং প্রতিকার চাইতে আসা স্থানীয়রা জানান, ইসলাম ধর্ম নিয়ে লেখা ওই লেখাটিতে ‘কৃষ্ণ কুমার' নামের একটি আইডি থেকে ‘লাইক' দেওয়া হয়৷ তাদের ধারণা, ‘কৃষ্ণ কুমার' আসলে বিপ্লব কুমারেরই আইডি৷

সুদেব কুমার পাল

অভিযোগ তুলে শাস্তির দাবি জানানোর পর স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনো তদন্ত ছাড়াই শিক্ষক বিপ্লব কুমারকে সাময়িক বরখাসস্ত করে৷ স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুদেব কুমার পাল ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘স্থানীয় উত্তেজিত লোকজনকে শান্ত করতেই তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে৷ তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি অভিযোগ তদন্ত করে দেখছে৷ তাঁদের প্রতিবেদন পেলেই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে৷''

প্রধান শিক্ষক আরো বলেন, ‘‘আমি ফেসবুক বুঝিনা৷ তবে শুনেছি তিনি ফেসবুকে ট্যাগ না লাইক কী যেন দিয়েছেন৷''

তাহলে না বুঝে, তদন্ত না করেই ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত কেন করা হলো- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ‘‘আমার কিছু করার ছিলনা, ব্যবস্থাপনা কমিটি উত্তেজিত লোকজনকে সামলাতে যা করেছেন আমি তাতে সায় দিয়েছি৷''

সাময়িক বরখাস্তের পর থেকে শিক্ষক বিপ্লব কুমার রায়কে আর পাওয়া যাচ্ছেনা৷ তাঁর নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘তিনি বাসায় নেই, মোবাইল ফোনও বন্ধ৷ কোথায় গিয়েছেন কেউ জানেনা৷ নিরাপত্তা দেব কীভাবে!''' ডয়চে ভেলের পক্ষ থেকেও ওই শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হয়েছে, তবে মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি৷

নূর খান

এদিকে বাংলাদেশ সরকার আইসিটি অ্যাক্ট-এর পরিবর্তে নতুন সাইবার আইন করতে যাচ্ছে৷ আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এই আইনে সাইবার অপরাধের ব্যাখ্যা স্পষ্ট থাকবে৷ আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারায় অপরাধের ব্যাখ্যায় যে অস্পষ্টতা আছে, তা দূর হবে৷ আর নতুন আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি হবে ১৪ বছরের কারাদন্ড৷ এখনকার আইনে তা সাত বছর৷

এ নিয়ে মানবাধিকার কর্মী এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নতুন সাইবার আইনের কোনো প্রয়োজন দেখছিনা৷ পুরনো আইনের অপপ্রয়োগ বন্ধ করলেই আইন ঠিকমতো কাজ করবে৷ নতুন আইনে বরং আরো জটিলতা বাড়বে৷''

তিনি বলেন, ‘‘বরং এখন প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা৷ শিক্ষক শ্যামল কান্তির ঘটনার পর বগুড়ায় আরেক শিক্ষককে যে অজুহাতে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মেনে নেয়া যায়না৷ সমাজ অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে৷ আর একশ্রেণির মতলববাজ কথিত ধর্ম অবমাননার বিষয়টিকে ব্যবহার করছে৷ সরকারের এদিকে নজর দেয়া উচিত্‍৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান