রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ১৩ লাখ কোটি টাকার মামলা
৭ ডিসেম্বর ২০২১এডেলসন পিসি ও ফিল্ডস পিএলএলসি নামের দুটি আইনি সংস্থা মামলাটি দায়ের করে৷ এতে অভিযোগ করা হয়, ফেসবুক ঘৃণা মেশানো বার্তা না সরানোয় রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে সহিংসতার শিকার হয়েছেন৷
২০১৭ সালের আগস্টে সামরিক অভিযানের পর সাত লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে যায়৷ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা সাধারণ মানুষকে হত্যা ও গ্রাম পুড়িয়ে দেয়ার তথ্য নথিবদ্ধ করেছে৷
মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা বিদ্রোহীদের মোকাবিলা করেছে৷ নৃশংসতা চালানোর অভিযোগও অস্বীকার করেছে তারা৷
২০১৮ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক তদন্তকারীরা বলেছিলেন, ‘হেট স্পিচ’ ছড়িয়ে সহিংসতা সৃষ্টিতে ফেসবুকের ব্যবহার মূল ভূমিকা পালন করেছে৷
একই বছর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তদন্তে রোহিঙ্গাসহ অন্য মুসলিমদের আক্রমণ করে ফেসবুকে পোস্ট করা এক হাজারের বেশি পোস্ট, মন্তব্য ও ছবির কথা উঠে এসেছিল৷ ক্যালিফোর্নিয়ার আদালতে করা মামলায় রয়টার্সের এই তদন্ত উল্লেখ করা হয়েছে৷
মামলার বিষয়ে ফেসবুক এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি৷
তবে ফেসবুক বলেছে, সেকশন ২৩০ নামে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারনেট আইন অনুযায়ী, ব্যবহারকারীদের পোস্ট করা কন্টেন্টের জন্য ফেসবুক দায়ী নয়৷
এই আইনের অস্তিত্ব থাকায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের করা মামলায় প্রয়োজনে মিয়ানমারের আইন প্রয়োগ করার কথা বলা হয়েছে৷
অন্য কোনো দেশে সংঘটিত অপরাধের বিচারে যুক্তরাষ্ট্রের আদালত বিদেশি আইন প্রয়োগ করতে পারে৷ তবে দুজন আইন বিশেষজ্ঞ রয়টার্সকে বলেছেন, সামাজিক মাধ্যমের বিরুদ্ধে করা কোনো মামলায় এখন পর্যন্ত বিদেশি আইন প্রয়োগ করা হয়েছে বলে তারা জানেন না৷
যুক্তরাজ্যের ফেসবুক কার্যালয়ে চিঠি
আইনি প্রতিষ্ঠান ম্যাককিউ জুরি অ্যাণ্ড পার্টনার্সের পাঠানো ঐ চিঠিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের শাসকগোষ্ঠী ও বেসামরিক সন্ত্রাসীদের চালানো গণহত্যা অভিযানের অংশ হিসেবে তাদের মক্কেল ও পরিবারের সদস্যরা ‘মারাত্মক সহিংসতা, হত্যা এবং/বা অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার’ হয়েছেন৷
যুক্তরাজ্যের রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে বসবাসরত শরণার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে নতুন বছরে যুক্তরাজ্যের হাইকোর্টে অভিযোগ দায়েরের আশা করছেন আইনজীবীরা৷
ম্যাককিউ ছাড়াও আরেক আইনি প্রতিষ্ঠান মিশকন ডে রেয়াও যুক্তরাজ্যে মামলা করতে কাজ করছে৷ এই মামলায় এখন পর্যন্ত ২০ জন দাবিদার আছেন৷ কোম্পানি দুটি বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে বাস করা রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে আরও দাবিদার নিয়োগের আশা করছে৷
জেডএইচ/এসিবি (রয়টার্স, গার্ডিয়ান)