ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলার ৭৫ বছর
বইপ্রেমীদের কাছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মিলনমেলা হিসেবে পরিচিত ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা এবছর ৭৫-এ পা দিচ্ছে৷
এক অভিন্ন পৃথিবীর স্বপ্ন
স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ইস্টার্ন ব্লকের বিভিন্ন দেশ যেমন সোভিয়েত ইউনিয়ন, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, চেকোস্লোভাকিয়া ও যুগোস্লাভিয়ার মতো দেশগুলো ১৯৫৫ সালের বইমেলার আসরটিতে অংশগ্রহণ করেছিল৷ একই বছর পূর্ব জার্মানিও ‘বুক ফ্রম ইনার জার্মান কমার্স’, অর্থাৎ দুই জার্মানির অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের একটি যৌথ পরিবেশনাতে অংশগ্রহণ করে৷
উগ্র ডানপন্থিদের সঙ্গে সংঘাত
জার্মানির প্রকাশনা সংস্থাগুলোর মধ্যেও বিভাজন ছিল৷ মেলার শুরু দিকের আসরগুলোতে নব্য নাৎসি আদর্শে অনুপ্রাণিত প্রকাশকদের মেলায় অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছিল৷ কিন্তু আয়োজকরা সিদ্ধান্ত নেন, যতক্ষণ না প্রকাশকরা জার্মানির আইন ভঙ্গ করছেন, ততক্ষণ তাদের মেলায় অংশ নিতে কোন বাধা নেই৷ এই বিষয়টি নিয়ে এখনও বিবাদ চলমান আছে৷
প্রতিবাদের আন্তর্জাতিক মঞ্চ
১৯৬৬ সালে ক্রোয়েশিয়ার নির্বাসিত বাসিন্দারা যুগোস্লাভিয়ার তৎকালীন শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলার সামনে প্রতিবাদ করার মধ্য দিয়ে বইমেলাটি প্রতিবাদকারীদের আন্তর্জাতিক মঞ্চ হিসেবেও পরিচিতি পায়৷ তার এক বছর পর ১৯৬৭ সালে গ্রিসের স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র ও প্রকাশকরা বিক্ষোভ করেন৷
সালমান রুশদিকে হত্যার নির্দেশের কারণে আমন্ত্রণ বঞ্চিত ইরান
অন্যান্য অনেক বামপন্থির মতো ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ-অ্যামেরিকান ঔপন্যাসিক সালমান রুশদি ইরানের শাহ এর সমালোচনা করেছিলেন৷ সালমান রুশদি শুরুতে ইরানের ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের সমর্থক ছিলেন৷ কিন্তু ১০ বছর পরে লেখক ইরানের সর্বোচ্চ নেতা রুহুল্লাহ খোমেনির লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন৷ ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ উপন্যাসের কারণে রুশদিকে হত্যার আদেশ দিয়ে ফতোয়া জারি করা হয়েছিল৷
‘গেস্ট অফ অনার’ নিয়ে বিতর্ক
১৯৮৬ সালে ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় ভারতীয় বইয়ের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে ‘গেস্ট অফ অনার কান্ট্রি’ ধারণাটি আনুষ্ঠানিকভাবে দুই বছর পর চালু করা হয়েছিল৷ প্রথম অতিথি ছিল ইটালি৷ ২০০৮ সালে তুরস্ককে আমন্ত্রণের পর বেশ কিছু বিতর্কের জন্ম নেয়৷