1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফ্রান্সে আবার তাণ্ডব, চাপের মুখে সরকার

৭ জানুয়ারি ২০১৯

অপ্রিয় সংস্কার কর্মসূচির মুখে আবার হিংসাত্মক বিক্ষোভের মুখে পড়লো প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁর প্রশাসন৷ এবার ছাড়ের বদলে আরো কড়া অবস্থানের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার৷ তবে সংলাপের জন্য চাপ বাড়ছে৷

https://p.dw.com/p/3B7yP
Frankreich Demo der Frauen der Gelbwesten
ছবি: picture-alliance/dpa/MAXPPP/C. Petit Tesson

অপ্রিয় সংস্কার কর্মসূচির মুখে আবার হিংসাত্মক বিক্ষোভের মুখে পড়লো প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁর প্রশাসন৷ এবার ছাড়ের বদলে আরো কড়া অবস্থানের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার৷ তবে সংলাপের জন্য চাপ বাড়ছে৷

কিছুতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ৷ হলুদ জ্যাকেটধারী ‘অসংগঠিত' বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সরাসরি সংলাপের সুযোগও তিনি পাচ্ছেন না৷ গত বছর তাদের তাণ্ডবের ফলে রাজধানী প্যারিস-সহ দেশের অনেক অংশ কার্যত অচল হয়ে পড়ে৷ তারপর সেই আন্দোলন কিছুটা স্তিমিত হয়ে পড়লেও নতুন বছরে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে৷ সপ্তাহান্তে প্যারিস শহরের অভিজাত এলাকায় আবার গাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে৷ বিক্ষোভকারীরা পুলিশের বেষ্টনি ভেঙে এক মন্ত্রণালয় ভবনের উপর হামলা চালিয়েছে৷ এমনকি পুলিশকর্মীদের উপর সরাসরি হামলার ঘটনাও ঘটেছে৷ পুলিশ ৩৪ জনকে গ্রেফতার করেছে৷

নববর্ষের ভাষণে মাক্রোঁ এই আন্দোলনের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়ে তাঁদের শক্তি কমানোর চেষ্টা করেছিলেন৷ তিনি বলেছিলেন, জনবিরোধী এই আন্দোলনের মাধ্যমে প্রজাতন্ত্রের ভিত্তির উপর হামলা চালানো হচ্ছে৷ রবিবার সন্ধ্যায় এক টুইট বার্তায় তিনি লেখেন, ‘‘ফরাসি প্রজাতন্ত্রের উপর আরো একবার চরম হিংসাসহ হামলা চালানো হলো৷ রাষ্ট্রের অভিভাবক, তার প্রতিনিধি, তার প্রতীক হামলার শিকার হলো৷''

এমন পরিস্থিতিতে সরকার ও প্রশাসনের কর্তৃত্ব প্রশ্নের মুখে পড়ছে৷ বিক্ষোভ সামলাতে প্রশাসনিক ব্যর্থতার অভিযোগও উঠছে৷ তবে প্রতিবাদের মুখেও প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ তাঁর অপ্রিয় সংস্কার কর্মসূচি চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর৷ বেকার ভাতার শর্ত আরো কড়া করতে ও কয়েক হাজার সরকারি কর্মীর পদ ছেঁটে ফেলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি৷ শুক্রবার এক সরকারি মুখপাত্র বলেন, দেশের অর্থনীতিকে ঢেলে সাজাতে সরকার পরিকল্পিত সংস্কার প্রক্রিয়া থেকে বিচ্যুত হবে না৷ তিনি আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রচেষ্টার অভিযোগ আনেন৷ মাক্রোঁ প্রশাসনের এই অবস্থানের প্রেক্ষাপটে আন্দোলনের তীব্রতা কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷

ফ্রান্সের দুর্বল অর্থনীতির সংস্কারের লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছেন, জনসাধারণের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছে৷ বিশেষ করে স্বল্প আয়ের কর্মীদের মনে চরম অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হচ্ছে৷ মাক্রোঁ শুধু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ধনীদের স্বার্থরক্ষা করছেন, এমন এক ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে৷ এমন অবস্থায় গত নভেম্বর মাসে দেশজুড়ে স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ শুরু হয়৷ কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এর নেতৃত্ব দেয়নি৷ বিক্ষোভকারীদের গায়ে হলুদ জ্যাকেটই হয়ে ওঠে আন্দোলনের প্রতীক৷

এমন আচমকা প্রতিরোধের মুখে  প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ কিছুটা পিছিয়েএসে কিছু ‘জনদরদি' পদক্ষেপ ঘোষণা করেন৷ অবসরপ্রাপ্তদের জন্য করের ক্ষেত্রে ছাড় ও দরিদ্রতম শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি তিনি জ্বালানির উপর বাড়তি করের পরিকল্পনাও বাতিল করেন৷ ফলে সংস্কারের প্রক্রিয়া কিছুটা ধাক্কা খায়, সরকারি কোষাগারে প্রায় ১,০০০ কোটি ইউরোর ঘাটতি দেখা দেয়৷ কিন্তু তাতেও বিক্ষোভের মাত্রা কমার কোনো লক্ষণ দেখা না যাওয়ায় মাক্রোঁ আবার কড়া অবস্থান নিচ্ছেন৷ লাগাতার হিংসাত্মক বিক্ষোভের ফলে পর্যটন ও বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষতি হচ্ছে বলে সরকার অভিযোগ করছে৷

বর্তমান সংকট কাটাতে সংলাপের প্রস্তাব দিচ্ছে সংস্কারপন্থি এক শ্রমিক সংগঠন৷ বিরোধী দলগুলিও বিক্ষোভকারীদের দাবি বিবেচনার জন্য চাপ দিচ্ছে৷ তবে সরকার এখনো সেই ডাকে সাড়া দিচ্ছে না৷

এসবি/এসিবি (রয়টার্স, ডিপিএ)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য