1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বঙ্গোপসাগরে চার দেশের নৌ-মহড়া শুরু

৩ নভেম্বর ২০২০

অ্যামেরিকা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের যৌথ নৌ-মহড়া শুরু হলো মঙ্গলবার। চীন আগেই এর বিরোধিতা করেছিল।

https://p.dw.com/p/3knKl
ছবি: imago/StockTrek Images

ভারতের মালাবার উপকূলে শুরু হয়ে গেল নৌসেনার মহড়া। ভারত, অ্যামেরিকা, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার নৌসেনা একসঙ্গে এই মহড়ায় অংশগ্রহণ করেছে। এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনকে টক্কর দিতেই এই মহড়ার আয়োজন হয়েছে বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের।

কয়েক সপ্তাহ আগে জাপানে মিলিত হয়েছিল ভারত, অ্যামেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপান। বর্তমান পরিস্থিতিতে এশিয়া প্যাসিফিকে চীনের শক্তি কমাতে কী কী কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া যায়, মূলত সে বিষয়েই আলোচনা হয়েছিল তাদের মধ্যে। ওই বৈঠকের তীব্র বিরোধিতা করেছিল চীন। চীন বিবৃতি জারি করে জানিয়েছিল, আন্তর্জাতিক কূটনীতির নিয়ম লঙ্ঘন করে ওই বৈঠকের আয়োজন হয়েছে। কিন্তু চারটি দেশই চীনের হুমকিকে যে গুরুত্ব দেয়নি, মঙ্গলবার শুরু হওয়া মালাবার মহড়া তারই প্রমাণ।

ভারত এবং অ্যামেরিকা দীর্ঘদিন ধরেই একসঙ্গে নৌ মহড়ায় অংশ নেয়। ১৩ বছর আগে অস্ট্রেলিয়া শেষ এই যৌথ মহড়ায় অংশ নিয়েছিল। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, অস্ট্রেলিয়ার রয়্যাল নেভি এই মহড়া থেকে বিরত থেকেছিল কারণ, চীনের চাপ কাজ করেছিল তাদের উপর। দীর্ঘদিন পর তারা এ বছর এই মহড়ায় যোগ দিল।

ভারতীয় সেনা সূত্র ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছে, মূলত দুইটি ভাগে এই মহড়ার আয়োজন হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে চারটি দেশ মহড়ায় অংশ নেবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরব সাগরে মহড়া অনুষ্ঠিত হবে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে। ভারতীয় নৌসেনা, ইউএস নেভি, জাপান মেরিটাইম সেল্ফ ডিফেন্স ফোর্স এবং রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান নেভির যুদ্ধ জাহাজ পৌঁছে গিয়েছে বঙ্গোপসাগরে। গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়্যার, লং রেঞ্জ ফ্রিগেটস, এমএইচ ৬০ হেলিকপ্টার, ইন্টিগ্রাল এসএইচ ৬০ হেলিকপ্টার দেখা যাবে এই মহড়ায়। সাবমেরিন, এয়ার কেরিয়ার জাহাজ সহ বিভিন্ন আধুনিক যুদ্ধজাহাজ নিয়ে এসেছে প্রতিটি দেশ।

ভারতের পক্ষ থেকে এই মহড়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন রিয়ার অ্যাডমিরায়ল সঞ্জয় বাৎসায়ন। ভারতীয় নৌসেনাও সমস্ত আধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করবে এই মহড়ায়।

ভারতীয় সেনার সাবেক লেফটন্যান্ট জেনারেল উৎপল ভট্টাচার্য আগেই ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছিলেন, এটি রুটিন মহড়া হলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতি বিচার করলে এ বছর এর গুরুত্ব অপরিসীম। যে ভাবে জাপান এবং অস্ট্রেলিয়া এই মহড়ায় যোগ দিয়েছে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উৎপলবাবুর বক্তব্য, ''এশিয়া প্যাসিফিকে চীনের পিপলস আর্মি নেভির ক্ষমতা অপরিসীম। চীন বিপুল পরিমাণ অস্ত্র খরচ করেছে নৌবাহিনীর জন্য। বলা যায়, এশিয়া প্যাসিফিকে, বিশেষ করে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের একাধিপত্য রয়েছে। অ্যামেরিকা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারত এক জোট হয়ে সেই ক্ষমতাকেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। এবারের মালাবার মহড়া তাই এত গুরুত্বপূর্ণ।''

বস্তুত, যে ভাবে চারটি দেশ মিলে মালাবার মহড়া শুরু করেছে, তার বিরোধিতা করেছে চীন। এর ফলে আন্তর্জাতিক শক্তির ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে চীন। অন্য দিকে, সর্বশেষ ভারত-অ্যামেরিকা টু প্লাস টু বৈঠকেও চীনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ শক্তি গড়ে তোলার আলোচনা হয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে অ্যামেরিকার পররাষ্ট্র এবং প্রতিরক্ষা সচিবের। তার পরেই মালাবার মহড়া আন্তর্জাতিক মহলে অন্য বার্তা বহন করছে।

এসজি/জিএইচ (পিটিআই, এএনআই)