1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্বচ্ছতা আনবে থ্রিডি মডেল

মার্টিন রিবে / এসবি২ আগস্ট ২০১৪

জার্মানিসহ অনেক দেশে বড় বড় নির্মাণ প্রকল্প নিয়ে বিতর্ক বেড়ে চলেছে৷ জার্মান বিজ্ঞানীরা এমন এক সমাধানসূত্র প্রস্তুত করছেন, যার সাহায্যে এলাকার নাগরিকদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রকল্পের বিভিন্ন ত্রুটি আগেভাগেই দূর করা যাবে৷

https://p.dw.com/p/1Cmsr
ছবি: 741 Projektentwicklung

নাগরিকদের অংশগ্রহণে নির্মাণ প্রকল্প

নতুন বিমানবন্দর, রেল স্টেশন, বায়ুশক্তি কেন্দ্র বা বিদ্যুৎ লাইন বসানোর মতো বড় প্রকল্প নিয়ে আজকাল বিশাল বিতর্ক ও বড় আকারের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দেখা যাচ্ছে৷ এই ধরনের বিরোধের প্রধান কারণ প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগের অভাব৷ গ্রামে বা শহরে কোনো বড় প্রকল্পের পরিকল্পনা কী ভাবে নাগরিকদের কাছে আরও স্বচ্ছ ও বোধগম্য করে তোলা যায়, তা নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন ফ্রাউনহোফার ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা৷

এর জন্য তাঁরা নতুন হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার তৈরি করেছেন, যার মাধ্যমে বাস্তবের আদলে এক ত্রিমাত্রিক ভার্চুয়াল জগত গড়ে তোলা যায়৷ এভাবে অনেক বিরোধ আগেভাগেই মিটিয়ে ফেলা সম্ভব বলে মনে করেন তাঁরা৷ ফ্রাউনহোফার ইন্সটিটিউটের ড. ইওয়াখিম রিক্স বলেন, ‘‘নাগরিকদের অংশগ্রহণ, তাদের পর্যাপ্ত তথ্য দেওয়া, তাদের আইডিয়া কাজে লাগানোর সুযোগ তৈরি করাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য৷ ফলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়ায় তারাও শামিল হতে পারে৷ প্রকল্প তাদের কাছে আরও গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে পারে৷''

গবেষকদের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো পরিকল্পনার পর্যায়ে যে পরিমাণ তথ্য সৃষ্টি হয়, তা কম্পিউটারে ভরা৷ তবে সেই তথ্য ডিজিটাল রূপে থাকায় এবং ইনস্টিটিউটের নিজস্ব সার্ভার পার্কের কল্যাণে এখন শুধু অ্যালগোরিদম নিয়েই ভাবতে হয়৷ গবেষকরা এমন সব থ্রিডি মডেল তৈরি করেছেন, যেগুলি বাস্তব বিশ্বের প্রায় অবিকল নকল৷ গবেষকরা দুই ধরনের তথ্য আলাদা করছেন৷ ফ্রাউনহোফার ইন্সটিটিউটের মিশায়েল ক্রেমার বলেন, ‘‘একদিকে রয়েছে জিওবেসিস ডেটা, যা মূলত কোনো সাইটের মডেল কিংবা বিমান বা স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি৷ তার সঙ্গে রয়েছে মানচিত্র, জমির ব্যবহার সংক্রান্ত তথ্য, বায়ুশক্তি কেন্দ্র বা বিদ্যুৎ লাইনের মতো প্রকল্পের সিমুলেশন ডেটা ইত্যাদি৷''

এই সব তথ্য তুলে ধরা হয় এক বিশেষ ‘মাল্টি টাচ টেবিল' ও বড় পর্দায়৷ টেবিলটির মাপ ১.৮০ মিটার বাই ১ মিটার৷ ছোট গ্রুপ মিটিং বা নাগরিক সমাবেশে আলোচনার জন্য এটি ব্যবহার করা যায়৷ বিশেষজ্ঞদের দল, বায়ুশক্তি কেন্দ্রের মালিক ও নাগরিকরা সমস্যা ও তার বিকল্প নিয়ে আলোচনা করতে পারেন৷ টেবিলটি অনেকটা বিশাল স্মার্টফোনের মতো, যা চালাতে বিশেষ বিদ্যাবুদ্ধির দরকার নেই৷

ফ্রাংকফুর্ট শহরের কাছে এক বায়ুশক্তি পার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা হচ্ছে৷ বিজ্ঞানীরা আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছেন, কী ভাবে টার্বাইনগুলি ঠিক কোথায় বসানো হবে৷ পরিকল্পনায় কোনো ত্রুটি থাকলে সঙ্গে সঙ্গে তা দেখা যায়৷ যেমন টার্বাইন ও বসতির মধ্যে ন্যূনতম দূরত্ব বজায় না রাখা হলে৷ তখন টার্বাইন সরিয়ে দিতে হবে৷ গোটা প্ল্যান-ও স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপডেট হয়ে যাবে৷

নাগরিকদের অভিযোগ থাকলেও দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখানো সম্ভব৷ যেমন কোনো বাসিন্দা যদি বলেন যে তাঁর নিজের বা প্রতিবেশীর বাড়ির উপর টার্বাইনের ছায়া পড়ছে, তখন সেই ভুল দ্রুত শুধরে নেওয়া যায়৷ ড.রিক্স বলেন, ‘‘সব তথ্য একত্র করাই হলো লক্ষ্য, যাতে সংঘাতের সব সম্ভাবনাই স্পষ্ট হয়ে যায়৷ কিন্তু সঙ্গে সমাধানসূত্রও দিতে হবে৷ আমাদের বিশ্বাস, প্রকল্প শেষ হলে পরিস্থিতি ঠিক কেমন হবে সেটা আগেভাগে দেখাতে পারলেই সংঘাতের সম্ভাবনা কমে যায়৷ অযৌক্তিক আপত্তি আগেই দূর করা যায়৷''

ছোট আকারের নির্মাণ প্রকল্পের ক্ষেত্রেও নাগরিকদের এভাবে শামিল করা সম্ভব৷ সরকারি পরিকল্পনার সঙ্গে আকাশ থেকে তোলা ছবি ও জিওডেটা সমন্বয় করতে হয়৷ মিশেল ক্রেমার বলেন, ‘‘নির্মাণের এলাকা ভবিষ্যতে গোটা অঞ্চলের পরিপ্রেক্ষিতে কেমন দেখতে হবে, তা আমরা দেখাতে পারি৷ এলাকার বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে সেই প্রকল্প কেমন দেখতে হবে, তাও আমরা সিমুলেট করতে পারি৷''

ভবিষ্যতে অনলাইন পরিষেবার ক্ষেত্রেও এমন ভিশুয়ালাইজেশন-এর মাধ্যমে নাগরিকদের অংশগ্রহণের সুযোগ সম্ভব হবে৷ ড. রিক্স বলেন, ‘‘পরের ধাপে এই প্রযুক্তি ইন্টারনেটেও সম্ভব করে তোলা হবে বলে আমাদের ধারণা৷ তখন সরাসরি নাগরিকদের কাছে প্রশ্ন রাখা যাবে, তাদের শামিল করা যাবে৷ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তারা সরাসরি মন্তব্য করতে পারবে৷''

কম্পিউটার প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে নাগরিকরা এমন প্রকল্পের ক্ষেত্রে আরও গুরুত্ব অনুভব করবেন বলে বিজ্ঞানীরা আশা করছেন৷ সে ক্ষেত্রে যুক্তি-নির্ভর আলোচনাও সম্ভব হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য