1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বনজঙ্গলের ভার্চুয়াল মডেল

মারিয়া লেসার/এসবি১৯ আগস্ট ২০১৫

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর বুকে বনজঙ্গলের চরিত্র বদলে যাচ্ছে৷ পৃথিবী ও মহাকাশ থেকে তা পর্যবেক্ষণ করছেন বিজ্ঞানীরা৷ এই পরিবর্তনের খুঁটিনাটি বুঝতে উদ্যোগ নিচ্ছেন জার্মান বিজ্ঞানীরা৷

https://p.dw.com/p/1Dp0c
Pflaumenbaum
ছবি: imago/blickwinkel

বিচ গাছের বনে বিপদের ছায়া৷ হাইনরিশ জাতীয় পার্ক গোটা ইউরোপের সবচেয়ে বড় ‘ডেসিডুয়াস' জঙ্গল৷ মাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউটের বায়ো-জিয়োকেমিস্টরা জানতে চান, সেখানকার মাটিতে কতটা কার্বন রয়েছে৷ ইয়েনা শহরে মাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউটের মার্কুস রাইশস্টাইন বলেন, ‘‘এখন যা দেখা যাচ্ছে, তাতে গাছপালার তুলনায় মাটিতেই কার্বনের মাত্রা বেশি৷ আমাদের অনুমান, গত ১০ বছরে মাটিতে কার্বনের পরিমাণ দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ বেড়ে গেছে৷''

এর পরিমাণ প্রায় ৩ লক্ষ কোটি টন৷ কিন্তু কার্বন চিরকাল মাটিতে থাকে না৷ মাশরুম ও ব্যাকটেরিয়া গাছের পাতা ও শিকড় প্রক্রিয়াকরণ করে৷ ফলে কিছুটা করে কার্বন আবার রিলিজ করে৷ এমনিতে এটা কোনো সমস্যা নয়৷ কিন্তু মানুষ বায়ুমণ্ডলে যে কার্বন ডাই-অক্সাইড সৃষ্টি করে, তার ফলে তাপমাত্রা বেড়ে চলেছে৷ মাইক্রো-অরগ্যানিজম আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং আরও কার্বন রিলিজ হয়৷

ল্যাবে মাটির স্যাম্পেল পরীক্ষা করা হচ্ছে৷ পোড়ানোর সময় বোঝা যায় মাটিতে কতটা কার্বন ডাই-অক্সাইড রয়েছে৷ তরলের মধ্যে অরগ্যানিক কার্বনের অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়৷

বিজ্ঞানীরা আরও অনেক কিছু পরিমাপ করেন৷ যেমন দিনের কোন সময় গাছের পাতা সক্রিয়ভাবে সালোকসংশ্লেষ পদ্ধতি চালায় এবং এই কাজে তারা বায়ুমণ্ডল থেকে কতটা কার্বন ডাই-অক্সাইড ব্যবহার করে৷ রাইশস্টাইন বলেন, ‘‘বনজঙ্গল ও বায়ুমণ্ডলের মধ্যে অ্যাসিমিলেশনের দিকে আমরা নজর দিচ্ছি৷ এটা অনেকটা মানুষের ফুসফুসের ক্রিয়া মাপার মতো বিষয়৷ আমরা গ্যাসগুলির কম্পোজিশন খতিয়ে দেখছি, মানুষের ক্ষেত্রে যাকে ব্লাড কাউন্ট বলা হয়৷ এভাবে আমরা পৃথিবীর বুকে সব সম্ভাব্য ক্রিয়াগুলির দিকে নজর দিচ্ছি – বিশেষ করে ইকো সিস্টেম ও বায়ুমণ্ডলের মধ্যে৷''

তারপর বিচ গাছের বন থেকে সংগৃহীত তথ্য নিয়ে অনেক অঙ্ক করতে হয়৷ বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তের মনিটারিং স্টেশন এবং পর্যবেক্ষক স্যাটেলাইট থেকে তথ্যও কাজে লাগানো হয়৷ এর ফলে কিছু মডেল সৃষ্টি হয়৷ রাইশস্টাইন বলেন, ‘‘রং যত সবুজ, তত বেশি সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া চলছে৷ আমাদের এখানে সেটা সাধারণত গ্রীষ্মেই ঘটে – জুন, জুলাই, আগস্ট মাসে৷ এশিয়ার মতো অঞ্চলে সেটা বর্ষার উপর অনেকটা নির্ভর করে৷ আবহাওয়া যখন শুষ্ক হয়ে ওঠে, তখন সালোকসংশ্লেষও কমে যায়৷ তারপর বর্ষা ও তার পরের মাসগুলিতে আর্দ্রতা বাড়লে সালোকসংশ্লেষও আবার বেড়ে যায়৷''

বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে গবেষকরা অনেক তথ্য সংগ্রহ করেছেন৷ কিন্তু পৃথিবীতে জলবায়ু পরিবর্তন ঘটে চলেছে৷ বনজঙ্গলের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের কী প্রভাব পড়ছে এবং ঘনঘন আবহাওয়ার ফারাক আরও তীব্র হতে থাকলে কী ঘটে, তার আরও নিখুঁত পূর্বাভাষ দেবার চেষ্টা চলছে৷ তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেও বনজঙ্গল তা মোটামুটি সামলে নিতে পারে৷ তবে ঘনঘন খরা দেখা দিলে সেটা বড় বিপদের কারণ হতে পারে৷ রাইশস্টাইন বলেন, ‘‘ধরে নেওয়া যেতে পারে, যে নির্দিষ্ট কিছু প্রজাতি এর ফলে অন্যদের তুলনায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ তখন কিছু প্রজাতির গাছ জঙ্গল থেকে উধাও হয়ে যাবে, আবার কিছু নতুন প্রজাতি যোগ হবে৷ অতএব ভবিষ্যতে গাছপালার ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তনের জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে৷''

এই জঙ্গল হয়ত কোনো এক সময় এখনকার তুলনায় অনেক বদলে যাবে৷ বিজ্ঞানীরাও হয়ত আগেভাগেই তার পূর্বাভাষ দিতে পারবেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান