বরফের নীচ থেকে জেগে উঠছে অক্ষত প্রাণী
৭ জুন ২০১৪বরফ গলে চলায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অনেক জীবাশ্ম বেরিয়ে পড়ছে৷ বিজ্ঞানীদের কাছে এ সব গুপ্তধনের মতো৷ ১৯৯১ সালে হিমবাহের মধ্যে ‘ও্যৎসি'-র আবিষ্কার ছিল বিশাল এক চমক৷ প্রায় ৫,৩০০ বছর আগে এই শিকারি জীবিত ছিল৷ তার শুকনা জমাট শরীর এতকাল বরফের নীচে চাপা ছিল৷ ‘ও্যৎসি'-র সঙ্গে পাওয়া যন্ত্রপাতি দেখে প্রাগৈতিহাসিক যুগের এই আবিষ্কারের গুরুত্ব আরও স্পষ্ট হয়ে গেছে৷
বরফের নীচে এমন ঐশ্বর্যের অনুসন্ধান অত্যন্ত জরুরি৷ বরফ গললে ও তার নীচের জমির জমাট ভাব কেটে গেলে এই কাজে সাফল্যের হার বেড়ে যায়৷ তখন গবেষকরা একেবারে অক্ষত জীবজন্তুও পেয়ে যান৷ যেমন ‘লিউবা' নামের প্রায় ৪২,০০০ বছর বয়স্ক ম্যামথ৷ সাইবেরিয়ার উত্তরে বিলুপ্ত এই প্রজাতির একটি শিশুর মরদেহ পাওয়া গিয়েছিল৷ তার শরীরের জিন বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা এই প্রজাতির উত্থান ও পতন সম্পর্কে তথ্য পেতে চান৷
রুশ গবেষকরা আরও এক ধাপ এগিয়ে গবেষণাগারে কৃত্রিম উপায়ে আবার এই ‘উলি ম্যামথ' সৃষ্টি করার পরিকল্পনা করছেন৷ ক্লোন করা ম্যামথ? নৈতিকতার মানদণ্ডে বিষয়টি বিতর্কিত, এ ক্ষেত্রে সাফল্যও অনিশ্চিত৷ বরফে জমাট মাটির তলায় বিলুপ্ত প্রাণীদের ক্ষুদ্র সংস্করণের অভাব নেই৷ বরফ গলার পর সেগুলির পুনরুজ্জীবনও অসম্ভব নয়৷
যেমন একটি ভাইরাস৷ মার্সেই শহরের গবেষকরা এর নাম রেখেছেন ‘পাইথোভাইরাস'৷ প্রায় ৩০,০০০ বছর ধরে সেটা বরফে জমাট মাটির নীচে বন্দি ছিল৷ এখন একটি অ্যামিবার মধ্যে সেটিকে আবার জীবন্ত করে তোলা হয়েছে৷
বরফের মধ্যে জমাট এই সব নিদর্শন মানবজাতির আদি ইতিহাস সম্পর্কেও অনেক তথ্য সরবরাহ করে৷ শত্রুর মোকাকিলা করতে মানুষ তখন কী ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতো, সে বিষয়ে আরও জানা যায়৷
মানুষ সহ বিভিন্ন প্রজাতির সৃষ্টির রহস্য, জীবনের রহস্য এখনো বরফের স্তরের নীচে লুকিয়ে রয়েছে৷ এই চমকপ্রদ বিশ্বে যে আরও কত বিস্ময় লুকিয়ে রয়েছে, কে জানে!