‘বরিস জনসনের জুয়ার কারণে আজ এই অবস্থা’
২৪ নভেম্বর ২০২০আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন চলতি সপ্তাহের শেষেই ইইউ ও ব্রিটেনের মধ্যে বোঝাপড়া সম্পর্কে আশা প্রকাশ করেছেন৷ তিনি রাজনৈতিক সদিচ্ছাকেই সাফল্যের চাবিকাঠি হিসেবে তুলে ধরেন৷ ইইউ মধ্যস্থতাকারীরা অবশ্য বলছেন যে মৌলিক মতপার্থক্য এখনো দূর হয় নি৷ সোমবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনা আবার শুরু হবার পরেও গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না৷ প্রধান ইইউ মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে বলেন, হাতে খুব কম সময় এবং মৌলিক মতপার্থক্য সত্ত্বেও দ্বিপাক্ষিক চুক্তির লক্ষ্যে জোরালো উদ্যোগ চালু আছে৷
আগামী ১লা জানুয়ারি ব্রিটেন পাকাপাকিভাবে ইইউ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে৷ দুই পক্ষের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত না হলে বিশেষ করে ব্রিটেনের অর্থনীতি মারাত্মক ধাক্কা খাবে বলে প্রায় সব বিশেষজ্ঞই একমত৷ ব্রিটেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি ব্রেক্সিটের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, করোনা মহামারির তুলনায় ব্রেক্সিটের প্রভাব অনেক বেশি হবে৷ সংসদের ট্রেজারি সিলেক্ট কমিটির সদস্যদের সামনে তিনি নিজের পূর্বাভাষ তুলে ধরেন৷
১লা জানুয়ারির পর দুই পক্ষের মধ্যে বাধাহীন বাণিজ্য চালু রাখার লক্ষ্যে বোঝাপড়ায় আরও বিলম্ব হলে চুক্তি অনুমোদনের সময় নিয়েও দুশ্চিন্তা বাড়ছে৷ ২৭টি ইইউ সদস্য দেশ ও ইউরোপীয় পার্লামেন্ট চুক্তি অনুমোদন না করলে সেটি ১লা জানুয়ারি কার্যকর হতে পারবে না৷ করোনা সংকট ও বড়দিনের ছুটির ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে৷ সোমবার ইইউ পার্লামেন্টের কয়েকজন সদস্য এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন৷ তাঁরা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে টালবাহানার জন্য দায়ী করেন৷ পার্লামেন্টের শক্তিশালী বাণিজ্য কমিশনের প্রধান জার্মানির ব্যার্ন্ট লাঙে এক টুইট বার্তায় বিলম্বের কথা স্মরণ করে দিয়ে লেখেন, চূড়ান্ত খসড়া ছাড়া ইইউ পার্লামেন্টের পক্ষে সেটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে খতিয়ে দেখা প্রহসন হয়ে দাঁড়াবে৷ বরিস জনসনের জুয়া খেলার কারণে পরিস্থিতি এতদূর গড়িয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন৷
মোটকথা ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ও একাধিক দেশের জাতীয় সংসদ বিতর্ক ছাড়া ব্রিটেনের সঙ্গে সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ‘রাবার স্ট্যাম্প' মার্কা অনুমোদন নাও দিতে পারে৷ সম্ভবত ২৮শে ডিসেম্বর ইইউ পার্লামেন্টে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হবে৷ সেইসঙ্গে ব্রেক্সিট চুক্তির শর্ত ভেঙে জনসন সরকারের বিতর্কিত আইনও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের আপত্তির কারণ হতে পারে৷ ব্রিটেন সেই আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া বন্ধ না করলে ইইউ পার্লামেন্টে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান নিতে পারে৷ সে ক্ষেত্রে ১লা জানুয়ারি চুক্তি কার্যকর না হলে চরম পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে৷ ভবিষ্যৎ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও ব্রিটেনের সেই আইনের বিরোধিতা করায় ইইউ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, এপি, এএফপি)