‘বর্ণবাদের দেশে’ বৈষম্যের দেয়াল ভাঙা নারী
৯ মার্চ ২০২১সমাজে বৈষম্য আছে এবং সে কারণে স্বপ্ন পূরণ করা যাবে না- এমন যাদের বিশ্বাস, তাদের নিয়মিত ডেকে ডেকে পরামর্শ দেন রেফিলওয়ে৷ বৈষম্য যদি সফল হওয়ার অদম্য বাসনাকে আটকাতে পারতো, তাহলে তো সাত ভাই-বোনের একজন হয়ে তিনি সাউথ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ পাইলট হতে পারতেন না৷ একে তো সাধারণ কৃষ্ণাঙ্গ পরিবারের সন্তান, তার ওপর নারী, তার জন্য এতটা পথ পেরিয়ে হেলিকপ্টার পাইলট হওয়া এক অর্থে অসম্ভবই ছিল৷ রেফিলওয়ে লেডওয়াবা বলেন, ‘‘আপনি নারী এবং কৃষ্ণাঙ্গ নারী, আপনার জন্য তো সব কাজই দ্বিগুণ কঠিন৷ সঠিক মানুষকে খুঁজে না পেলে আপনি (আলবার্ট) আইনস্টাইন হলেও তো কিছু করতে পারবেন না৷’’
রেফিলওয়ে লেডওয়াবার সৌভাগ্য যে স্কুলের লেখাপড়ার ঋণ পরিশোধ করতে কেভিন ক্রুর প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিলেন এবং সেই কাজটা তার ভীষণ ভালো লেগেছিল৷ এক শ্বেতাঙ্গ সহকর্মী বলেছিলেন, রেফিলওয়ের ভালো পাইলট হওয়ার সম্ভাবনা আছে৷ রেফিলওয়ে শুধু তেলের খরচ দিতে পারলেই তাকে প্রশিক্ষণ দেবেন – এমন আশ্বাসও দিয়েছিলেন তিনি৷
২০০৫ সালে সেই সুযোগটা এলো৷ ডারবানের সরকারি স্কুলে হেলিকপ্টার চালানোর প্রশিক্ষণ শুরু হলো৷ কিন্তু স্নায়ুর চাপ সামলাতে পারছিলেন না৷ মনে হতো, ককপিটে পাশে কোনো পুরুষ না থাকলে কোনো নারীর পক্ষে একা হেলিকপ্টার ওড়ানো অসম্ভব৷
প্রশিক্ষণ বাদ দিয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনাও করতে শুরু করেছিলেন৷ তখনই এগিয়ে আসেন আরেক শ্বেতাঙ্গ সহকর্মী৷ তিনি বললেন, প্রশিক্ষণ বাদ দেয়া ঠিক হবে না, দেয়াল ভাঙার চেষ্টা আরো তীব্র করতে হবে৷ তার অনুপ্রেরণায় তীব্র চেষ্টা করেই রেফিলওয়ে লেডওয়াবা এখন সাউথ আফ্রিকার পুলিশের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ হেলিকপ্টার চালক৷ সনদপ্রাপ্ত প্রশিক্ষকও তিনি৷ গার্ল ফ্লাই প্রোগ্রাম ইন সাউথ আফ্রিকা (জিএফপিএ) নামের একটি প্রতিষ্ঠানটও আছে তার৷ সেই প্রতিষ্ঠানের কাজই হলো নারীদের হেলিকপ্টারের ডানায় ভেসে আকাশে উড়তে শেখানো৷
এসিবি/কেএম (রয়টার্স)