বর্ণিল ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা
বিশ্বের সবচেয়ে বড় বইমেলা কোনটি? অন্তত যদি বাণিজ্যের হিসেব কষা হয়, তাহলে এক বাক্যে তা ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা৷ এর যেমন আছে সাড়ে পাঁচশ’ বছরের ইতিহাস, তেমনি বই প্রকাশকদের এমন মিলনমেলা আর কোথাও নেই৷
ইতিহাস
ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলার ইতিহাস সাড়ে পাঁচশ’ বছরের৷ ১৪৫৪ সালে প্রথম ফ্রাঙ্কফুর্টের পাশে মাইনৎসে স্থানীয় বইবিক্রেতারা একটি মেলা করেন৷ তবে আধুনিক ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা শুরু হয় ১৯৪৯ সালে৷ এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় বইয়ের বাণিজ্য মেলা৷ একশ’রও বেশি দেশ থেকে হাজার হাজার বই প্রকাশক এখানে অংশ নেন৷
ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা ২০১৮
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক ঘোষণাপত্র প্রকাশের ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ বছর ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় জোর দেয়া হয় মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার ওপর৷ ফ্রাঙ্কফুর্ট বাণিজ্য মেলা অঙ্গনে আয়োজিত এই মেলা চলে ১০ থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত৷
উদ্বোধন
এবারের মেলার উদ্বোধন করেন জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার৷ তিনি তাঁর বক্তব্যে বর্তমানে বিশ্বের এই টালমাটাল সময়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দেন৷
লিঙ্গ সমতা
এবারের উদ্বোধনী পর্বে ‘গেস্ট অব অনর’ ছিলেন নাইজেরিয়ার লেখক চিমামান্ডা এনগোজি৷ বই শিল্পে আরো লিঙ্গ সমতা আনার ওপর জোর দেন তিনি৷
জর্জিয়ার সংস্কৃতি
প্রতি বছর যে কোনো একটি দেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতির ওপর স্পটলাইট থাকে৷ যেমন, এবার ছিল জর্জিয়ার ওপর৷
বই বাণিজ্য
এই মেলার বিশেষত্ব হলো, এখানে সাধারণভাবে বইয়ের বিকিকিনি হয় না৷ তবে বই সত্ত্ব কেনা-বেচা হয়৷ চুক্তি হয় অনুমতি বা লাইসেন্সের৷ তাই মেলার প্রথম তিনদিনই রাখা হয় প্রকাশক ও বই ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের জন্য৷
সাধারণ দর্শনার্থী
সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য শেষ দু’দিন খুলে দেয়া হয় মেলার দ্বার৷ এই দু’দিন বইপ্রেমীরা এসে দেখতে পারেন কোন কোন দেশ থেকে কী ধরনের বই এসেছে বা আসছে৷ এছাড়া প্রতিবাদের মঞ্চ হিসেবেও অনেকে ব্যবহার করেন এই মেলাকে৷
আলোচনা পর্ব
সাহিত্য, সময়ের আলোচিত বিষয়, বইয়ের টেকসই ব্যবসা - এমন নানা বিষয় নিয়ে আলোচনাও চলে পুরো মেলা জুড়ে৷
দেখা হবে তাঁদের সঙ্গেও
মেলা ঘুরছেন, হঠাৎ করে হয়তো চোখে পড়বে এমন একজন কবির, যিনি তাঁর কবিতা শুনিয়ে মুগ্ধ করে চলেছেন শ্রোতা-পাঠকদের৷ আবার কোথাও কোনো বিখ্যাত প্রচ্ছদ আঁকিয়ের সঙ্গেও দেখা হয়ে যেতে পারে৷ এছাড়া সাহিত্যের নানা অঙ্গনের মানুষেরাও আসেন এখানে৷
যেমন খুশি সাজো
অনেকেই এই দু’দিন নানা রঙ-বর্ণের সাজ পোশাকে আসেন মেলায়৷ শিশুদের জন্যও মেলায় থাকে বিশেষ আকর্ষণ৷ কেউ কেউ কমিক বইয়ের জনপ্রিয় চরিত্র হয়েও উপস্থিত হন৷
বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব
প্রতিবারের মতো এবারো বাংলদেশের উপস্থিতি ছিল৷ প্রকাশকদের সংগঠন এবং জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশনা সমিতির আলাদা আলাদা স্টল ছিল৷ এছাড়া বেসরকারি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অমিকন ব্যক্তিগত উদ্যোগে এখানে তাদের স্টল নিয়ে আসে৷
ছিল ডয়চে ভেলেও
‘যে একশ’টি জার্মান বই পড়া উচিত’ এমন একটি দোভাষী (জার্মান থেকে ইংরেজি) প্রকল্প হাতে নিয়েছে ডয়চে ভেলে৷ এই প্রকল্পের উদ্বোধন পর্বটি এবারের ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলাতেই হলো৷