বাংলাদেশ ক্রিকেটে ট্রল
বাংলাদেশের অনেক ক্রিকেটার বিভিন্ন সময়ে ট্রলের শিকার হয়েছেন৷ ক্রিকেট খেলা অনেক জনপ্রিয় হওয়ায় সামাজিক মাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে পছন্দ করেন সমর্থকরা৷
চিকিৎসকদের ট্রলের শিকার মাশরাফি
২০১৯ সালে নড়াইলের আধুনিক সদর হাসপাতালে গিয়ে মাশরাফি চার চিকিৎসককে অনুপস্থিত পান৷ এরপর রোগী সেজে তিনি এক চিকিৎসককে ফোন করলে ঐ চিকিৎসক পরে এসে চিকিৎসা নিতে বলেন৷ এরপর নিজের পরিচয় দিয়ে ওই চিকিৎসককে মাশরাফি বলেন, ‘‘এখন যদি হাসপাতালে সার্জারির প্রয়োজন হয়, তাহলে সেই রোগী কী করবে?’’ এই ঘটনায় চিকিৎসকদের একটি অংশের ট্রলের শিকার হয়েছিলেন মাশরাফি৷ পারলে তাকে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়ে দেখাতেও বলেন কেউ কেউ৷
সাকিবের অরেঞ্জ জুস মন্তব্য
২০১৪ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ভালো করতে পারেনি৷ প্রথম আলোকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সাকিব পরে বলেছিলেন, ‘‘টি-টোয়েন্টির জন্য সবচেয়ে বেশি টাকা পায় কারা? গেইল, ডি ভিলিয়ার্স—কী পাওয়ার ওদের খেলায়! জাতিগতভাবেই আমরা শারীরিকভাবে ওদের চেয়ে পিছিয়ে৷ জন্মের পর থেকে আমরা খাই সবজি খিচুড়ি...নরম করে রান্না করা৷ আর ওরা ছোটবেলা থেকে অরেঞ্জ জুস খায়৷’’ এই মন্তব্য নিয়ে পরে অনেক ট্রল হয়েছিল৷
ট্রলের শিকারও তামিম
২০১৫ বিশ্বকাপটা ভালো কাটেনি তামিমের৷ তাই সেই সময় অনেক ট্রলের শিকার হতে হয়েছে তাকে৷ একটা ট্রল ছিল এরকম, ‘ম্যাগী নুডুলস সিদ্ধ হওয়ার আগেই তামিম আউট’৷ এসব ঘটনায় ভীষণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন তামিম৷ এক পর্যায়ে বিশ্বকাপ চলার সময় অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাকটিভেট করে রাখতেও বাধ্য হয়েছিলেন৷ তামিমের স্ত্রীকেও গভীর রাতে ফোন করে গালিগালাজ করা হয়েছিল৷
মুশফিকের আয়না
চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার কাছে হারার পর মুশফিক বলেন, ক্রিকেটারদের সমালোচনা যারা করেন, তাদের উচিত আগে আয়নায় নিজের মুখ দেখে নেওয়া৷ এরপর থেকে সামাজিক মাধ্যমে কেউ তাকে ‘আয়নাবাজ’ আবার কেউ ‘আয়নাপুরুষ’ নামে ডাকা শুরু করে৷ এর আগেও বিভিন্ন সময় মুশফিককে নিয়ে ট্রল হয়েছে৷
ক্যাচ মিস করায় তোপের মুখে লিটন
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ঐ ম্যাচ দুটো ক্যাচ ধরতে পারেননি লিটন দাস৷ দলের পরাজয়ের অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করে সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনা ও ট্রলের শিকার হয়েছেন তিনি৷ এটা করতে গিয়ে অনেকে ধর্মের বিষয়টিও টেনে এনেছেন৷ এছাড়া একদিনের ম্যাচে লিটনের করা চার শতকের তিনটি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হওয়ায়ও অতীতে তাকে নিয়ে ট্রল হয়েছে৷
‘ইমরুল ব্রো’
২০১৯ সালে ভারত সফরে দুই টেস্টে ইমরুল কায়েসের স্কোর ছিল ৬, ৬, ৪ ও ৫৷ সেই সময় ফেসবুকে তাকে নিয়ে অনেকে ট্রল করেছিলেন৷ অবশ্য ঐ সফরের আগে থেকেই তাকে ফেসবুকে ‘ইমরুল ব্রো’ নামে ডাকা হচ্ছিল৷ এ প্রসঙ্গে পরে প্রথম আলোকে তিনি বলেছিলেন, ‘‘অনেক ক্রিকেটার আছে যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে নষ্ট হয়ে গেছে৷ চাপ নিতে পারেনি৷ আমি বলব, যদি আপনারা দেশের ভালো চান, দয়া করে এসব বন্ধ করুন৷’’
গতিদানব
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন মিডিয়াম পেসার ছিলেন৷ কিন্তু সামাজিক মাধ্যমে তাকে ‘গতিদানব’ বলে ট্রল করা হয়৷ এ প্রসঙ্গে গত আগস্ট মাসে কালের কণ্ঠকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি মনে করি, যারা এগুলো বলে তারা ক্রিকেটটাই কম বোঝে বেসিক্যালি৷’’
‘মি. ইন্টারফেয়ারার’
দলে কাকে রাখা হবে, টসে জিতলে কী নিতে হবে ইত্যাদিসহ বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রায় সব বিষয়েই সিদ্ধান্ত দেন নাজমুল হাসান পাপন৷ সেজন্য সমালোচনার পাশাপাশি তাকে নিয়ে ট্রল হয়েছে৷ তাকে ডাকা হয় মি. ইন্টারফেয়ারার নামে৷ এক পর্যায়ে সেসব কাজ থেকে একটু দূরে সরে গিয়েছিলেন বিসিবি সভাপতি৷ পরে গত ফেব্রুয়ারিতে আবারও আগের রূপে ফেরার কথা জানিয়েছিলেন তিনি৷ তা না হলে নাকি বাংলাদেশের ক্রিকেটের ক্ষতি হচ্ছিল!
বিসিবি সভাপতির ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট
এ বছরের শুরুতে বিসিবি সভাপতির নামে ফেসবুকে কয়েকটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে সেসব থেকে ট্রলের ঝড় বয়ে গিয়েছিল৷ আইপিএল খেলতে সাকিবের ছুটি নেওয়া, নাসির হোসেনের বিয়েসহ কিছু ঘটনায় ঐসব আইডি থেকে নানা রকম স্ট্যাটাস ও মন্তব্য পোস্ট করা হয়েছিল৷ পরে বিষয়টি বিসিবির চোখে পড়লে সেগুলো বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হয়৷