বাংলাদেশে মেছো বিড়াল হত্যার দায়ে জরিমানা
৩ ডিসেম্বর ২০২১মৌলভীবাজারের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ২০২০ সালের নভেম্বরে মেছো বিড়ালটি মামুনের বাড়ির পুকুরের মাছ খেয়ে ফেলে৷ মামুনের তা নজরে পড়লে তিনি সহযোগীদের নিয়ে মেছো বিড়ালটিকে হত্যা করেন৷ মেছো বিড়ালটিকে হত্যার একটি ভিডিও সে সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে৷
এ ঘটনায় বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ফরেস্টার মো. আনিসুজ্জামান বাদী হয়ে রাজনগর থানায় বন আইনে মামলা করেন৷ ঘটনাটি তদন্তের পর ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পুলিশ বন আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়৷ প্রায় এক বছর পর মামুনকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা হিসেবে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে আদালত৷
বন বিভাগের বন মামলা পরিচালক জুলহাস উদ্দিন জানিয়েছেন, আদালতে মামুন মিয়া তার দোষ স্বীকার করেছেন৷
বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ অনুযায়ী মেছো বিড়াল হত্যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ ৷ এর আগে সাপ, বানর হত্যার ঘটনায় আদালতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সাজা দেওয়া হয়েছে বলে জানান শ্রীমঙ্গলের বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম৷ তিনি বলেন, ‘‘মৌলভীবাজারে মেছো বিড়াল হত্যা নিয়ে কোনো মামলায় এই প্রথম জরিমানা করা হয়েছে, যা আগামীতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে উদাহরণ হয়ে থাকবে৷”
শ্রীমঙ্গলের বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সিতেশ রঞ্জন দেব বলেন, ‘‘এ অঞ্চলে ‘মেছো বিড়ালকে' মানুষ ‘মেছো বাঘ' বলে৷ বাঘ নামটা শুনলে মানুষের মধ্যে ভয় চলে আসে৷ এদের দেখলে ভয় পেয়ে মেরে ফেলতে চায়৷ এই মেছো বিড়ালের প্রিয় খাবার হচ্ছে মাছ৷ সে কারণে নামের সাথে মেছো শব্দটি সংযুক্ত৷’’
রাজনগরের কাউয়াদিঘি হাওর, শ্রীমঙ্গল ও মৌলভীবাজারে হাইল হাওর এবং কুলাউড়া, জুড়ি ও বড়লেখায় হাকালুকি হাওরের উপরের অংশ ক্রমশ ভরাট হয়ে গ্রামে গঞ্জে জলাশয় কমে যাওয়ায় এসব প্রাণীর খাদ্যের তালিকা থেকে মাছ কমে গেছে৷ ফলে প্রাণীরা খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে গিয়ে পোষা প্রাণী ধরে খায়৷ এতে অনেক সময় মানুষের তাড়া খেয়ে প্রাণীরা মারা যায় বলে জানান সিতেশ রঞ্জন দেব৷
এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)