1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বিপ্লব

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৩ জানুয়ারি ২০১৬

বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে রীতিমতো বিপ্লব ঘটে গেছে৷ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব অনুয়ায়ী বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক তিন কোটি ১২ লাখ৷ প্রতিদিন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গড়ে লেনদেন হয় প্রায় ৫০০ কোটি টাকা৷

https://p.dw.com/p/1HcT8
Bangladesch Frau Handy Smartphone Kommunikation
ছবি: DW/A. Islam

[No title]

বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং চালু হয় ২০১০ সালে৷ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ২৮টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের অনুমোদন নেয়৷ এর মধ্যে ১৯টি ব্যাংক মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে৷ বেসরকারি ব্যাংকগুলোর অনুমোদনের ভিত্তিতে সাড়ে পাঁচ লাখেরও বেশি এজেন্ট এভাবে নগদ টাকা লেনদেনের কাজ করছেন৷ বাংলাদেশ ব্যাংকয়ের হিসাব অনুযায়ী এখন প্রতিমাসে গড়ে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়৷ গত বছরের নভেম্বর মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে রেকর্ড ১৪ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে৷

বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের প্রবৃদ্ধি বোঝার জন্য একটি উদাহরণই যথেষ্ট৷ গত বছরের অক্টোবরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক ছিল তিন কোটি৷ মাত্র এক মাসে, অর্থাৎ নভেম্বরে গ্রাহক ১২ লাখ বেড়ে দাঁড়ায় তিন কোটি ১২ লাখ যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০ ভাগ৷ গত দু'বছর ধরেই চলছে এমন অবিশ্বাস্য হারের গ্রাহক বৃদ্ধি৷

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সুবিধা হলো এ ধরনের ব্যাংকিং সেবা পেতে আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের প্রয়োজন হয়না৷ মোবাইল ফোন থাকলে যে কেউ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন আর টাকা লেনদেন করতে পারেন বাংলাদেশের যে কোনো স্থান থেকে৷ তাঁকে ব্যাংকের কোনো শাখায় যেতেও হয় না৷ যাঁরা মোবাইল ফোনের কল রিচার্জ বা ‘ফ্লেক্সিলোড' করেন, তাঁরাই অ্যাকাউন্ট খুলে দেন৷ মোবাইল ফোন নম্বরটিই গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট নম্বর৷ এই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই অন্য কোনো মোবাইল ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে পারেন গ্রাহক৷

নগদ টাকা তুলতে মাঝখানে থাকেন একজন এজেন্ট৷ তাঁরা মূলত ছোট ব্যবসায়ী৷ এই এজেন্টরা ব্যাংকের কাছ থেকে লাইসেন্স নিয়ে নিজের দোকান ঘরেই ব্যাংকিং সেবা দান শুরু করেন৷ অর্থাৎ মোবাইল ব্যাংকিং মানুষের সময় বাঁচিয়ে দিয়েছে, কমিয়েছে ভোগান্তি৷ এ কারণেই এ পদ্ধতি এত দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে৷

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘যাঁরা অল্প অর্থের লেনদেন করেন, তাঁদের জন্য প্রচলিত ব্যাংক একাউন্ট একটি ঝামেলা এবং খরচের বিষয়৷ মেবাইল ব্যাংকিং কাজটা সহজ করে দিয়েছে৷ তাঁদের ব্যাংক মানে তাঁদের মোবাইল ফোন৷ তাঁদের খরচ এবং সময় দু’টোই বেঁচে যাচ্ছে৷ তাই মেবাইল ব্যাংকিং বাংলাদেশে বিস্ময়কর গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে৷''

জাতীয় অর্থনীতিতেও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের অগ্রগতির প্রভাব পড়ছে জানিয়ে খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ আরো বলেন, ‘‘এতে অর্থনীতি, বিশেষ করে ’ইনক্লুসিভ’ অর্থনীতি লাভবান হচ্ছে৷ বিরাট এক জনগোষ্ঠীকে বিকল্প এক ব্যাংকিংয়ের আওতায় আনা যাচ্ছে৷''

তবে মোবাইল ফোন ব্যাংকিংয়ে এখন কিছুটা কড়াকড়ি আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক৷ আগে গ্রাহকের বাইরেও এজন্টের মাধ্যমে অনেকেই আর্থিক লেনদেন করতেন৷ তাতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে৷ তাছাড়া এখন একবারে পাঁচ হাজার টাকার কেশি লেনদেন করলে গ্রাহকের ছবিও লাগে৷ আর অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলে জাতীয় পরিচয় পত্রের প্রয়োজন হয়৷ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতারণা এবং জঙ্গি অর্থ লেনদেনের অভিযোগ পাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক গত আগস্টে এই ব্যবস্থা নিয়েছে৷

তবে খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ জানালেন, ‘‘যে কোনো ব্যবস্থায়ই ঝুঁকি আছে৷ আমরা সমীক্ষা করে দেখেছি, মেবাইল ব্যাংকিংয়ে এখনো বড় ধরনের কোনো অনিয়ম বা অঘটন ঘটেনি৷''

জানা গেছে, মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসেসে গ্রহকদের পছন্দের সেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে অর্থ স্থানান্তর (পিটুপি), নগদ জমা (ক্যাশ ইন) এবং নগদ উত্তোলন (ক্যাশ আউট)৷ মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসেস ব্যবহার করে বেতন-ভাতা প্রদান, ইউটিলিটি বিল পরিশোধের প্রবণতাও বাড়ছে৷

আপনি কি মোবাইল ব্যাংকিং করে থাকেন? জানান আপনার অভিজ্ঞতা, নীচে মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য