বাংলাদেশে সাংবাদিকতা
৩ জুন ২০১২বাংলাদেশের গণমাধ্যম কর্মিদের ওপর পুলিশের নির্যাতনের ঘটনা নতুন কিছু নয়৷ তবে গত কিছুদিন ধরে এই মাত্রাটা যেন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে৷ এই ব্যাপারে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আই-এর সহকারী বার্তা সম্পাদক হাফসা হোসাইন বললেন, ‘‘যেখানে রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে নিরাপত্তা দেওয়ার সেখানে রাষ্ট্রীয় বাহিনীই যদি হামলা চালায়, তাহলে সাংবাদিক কেন কোন মানুষই আর নিজেদের নিরাপদ বলে মনে করবে না৷''
সরকারের উচ্চ মহল থেকে গণমাধ্যম নিয়ে বিরুপ মন্তব্যের কারণে পুলিশও এখন লাগামছাড়া, এমনটি বললেন আরেক বেসরকারি চ্যানেল ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর ইলিয়াস হোসেন, ‘‘এতগুলো ঘটনার পর এগুলোকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলার সুযোগ আর নেই৷ যাঁরা বিরোধী দলে থাকেন তাঁরা সবসময় সাংবাদিক বান্ধব পরিবেশের পক্ষে কথা বলেন৷ কিন্তু তারা সরকারে গেলেই তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে যায়৷ সাংবাদিকরা যা ঘটছে তা তুলে ধরলে তাঁরা মনে করেন সরকারের সমালোচনা করা হচ্ছে৷ এই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারক মহলের নেতিবাচক মন্তব্য দেখা যায় গণমাধ্যমকে নিয়ে৷''
সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ইন্টারনেটে ফেসবুক সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রতিকী প্রতিবাদ দেখা যাচ্ছে৷ সাংবাদিক হাফসা হোসাইনের মতে, প্রতিকার না পেয়েই সাংবাদিকরা এখন ইন্টারনেটকে বেছে নিয়েছেন৷ তার ভাষায়, ‘‘একের পর এক এতগুলো ঘটনা ঘটলো তার কোন কিছুরই কিন্তু সুরাহা হয়নি৷ যেমন সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডের পর এত প্রতিবাদ হলো, কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা সেই ব্যাপারে কোন কিছুই জানতে পারিনি৷ তাই আমার মনে হয়, অনেকটা নিরুপায় হয়েই সাংবাদিকরা এখন সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোতে তাঁদের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন৷''
তবে এতসব প্রতিকূলতা সত্বেও সাংবাদিকদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হবে, যেমনটি বললেন সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা যারা এই পেশায় আছি এক ধরণের চ্যালেঞ্জ নিয়েই এই পেশায় এসেছি৷ তাই চারপাশে হতাশা সত্বেও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মানসিকতা থাকার কারণে আমি এখনও আশাবাদী৷ হয়তো সরকার কিংবা প্রশাসনের হুঁশ ফিরবে৷''
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়