1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘নতুন রূপে’ বাংলাদেশ

মারুফ আহমদ২৪ জুন ২০১৩

‘ক্রাউডসোর্সড ট্র্যাভেল’-এর অনলাইনে ‘পজিটিভ লাইট’ প্রকল্পের ওয়েবসাইট প্রথম থেকেই আলোকচিত্র শিল্পী ও ভ্রাম্যমাণ লেখকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে৷ এ বছর ‘পজিটিভ লাইট’ বই আকারে এসেছে৷ বাংলাদেশকে ‘নতুন রূপে’ দেখানো হয়েছে সেখানে৷

https://p.dw.com/p/18urk
ছবি: Aklas Uddin

বিশেষ করে প্রতিভাবান আলোকচিত্র শিল্পীদের বাংলাদেশকে একটি নতুন দৃষ্টিতে দেখার এই পরিকল্পনা দারুণ উৎসাহিত করেছে৷ মাত্র ৪৫ দিনের মধ্যে প্রায় ১৩৫ জন শিল্পী ৭০০টিরও বেশি ছবি পাঠিয়েছেন৷ মানুষ, জীবনযাত্রা, সমাজ, সংস্কৃতি ও ইতিহাস ভিত্তিক ছবিগুলোতে ফুটে উঠেছে বাংলাদেশের এক অন্য চেহারা৷ ইতিবাচক বাংলাদেশের এই চেহারা দেশের বাইরের অনেকেই চেনেনা বা দেখেননি, কারণ পশ্চিমা বিশ্বের মানুষ, বাংলাদেশের বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, দারিদ্র্য, পোশাক কারখানায় আগুন – এসবের সাথেই পরিচিত৷ কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ যে জীবনকে অসাধারণ সহজভাবে গ্রহণ করতে পারে, বিপর্যয়কে মোকাবেলা করতে পারে স্বাভাবিকভাবে, তা অনেকেই জানেন না৷ ‘পজিটিভ লাইট' গ্রন্থে তা-ই তুলে ধরা হয়েছে খুব সুন্দরভাবে৷

যেমন মোহাম্মদ নাহিয়ান বিন খালেদের এক দরিদ্র হকারের প্রতিকৃতি৷ সেখানে পরিতৃপ্ত হাসির উজ্জ্বল এক মুখমণ্ডল৷ দারিদ্রতা তাঁকে আটকে রাখতে পারেনি৷ সাদা-কালো হওয়ার ফলে এই আলোকচিত্র বিষয়টি আরো গভীরতা পেয়েছে৷ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়৷ মোঃ আকলাস উদ্দিনের ছবি ‘বিশ্ব ইজতেমা'৷ প্রথম দৃষ্টিতে মনে হয় বিশাল এক মানুষের ঝাঁক, কিন্তু তারপরই নজরে পড়ে একটি রেল গাড়ি৷ ইঞ্জিনের সামনে, পাসে ও ট্রেনের ছাদে অসংখ্য মানুষ৷ তাই ট্রেনটি প্রায় দেখাই যাচ্ছে না৷ খুব খেয়াল করলে দেখবেন একটা মনুষের মুখেও কিন্তু বিরক্তির ছাপ নেই৷ ওয়াহিদ আদনানের ‘দ্য রেসলার' বা কুস্তিগিরও বেশ আকর্ষণীয়৷ ষোড়শ শতাব্দীর ঐতিহ্যবাহী বলি খেলা৷ চট্টগ্রাম অঞ্চলে ভীষণ জনপ্রিয় এ খেলায় খেলোয়াড়ের গায়ে-হাতে আঁকা রঙিন লিপিফলক, পশ্চিমের কুস্তিগিরদের গায়ের ট্যাটুর কথা মনে করিয়ে দেয়৷ হুজ্জাতুল মুসালিন অপুর ‘হ্যাপি হোলি' ছবিতে গাঢ় রঙের ব্যবহারে এক প্রৌঢ় দম্পতির হাস্যোজ্জ্বল মুখে দেখা গেছে সুখের প্রতিফলন৷

বাংলাদেশের নিসর্গ নিয়ে বেলিন্ডা ম্যাগিটের ‘মনসুন ক্লাউড'-ও খুব উল্লেখযোগ্য৷ প্রথম দৃষ্টিতে মনে হয় দক্ষ হাতে আঁকা একটি জলরং৷ বর্ষাকালীন নীল আকাশে মেঘের খেলা৷ নদীর দিগন্তে পড়ছে তার ছায়া আর সেই সাথে প্রতিফলিত হয়েছে অসাধারণ আলোকচ্ছটা৷ উদয়ন ঘোষের একটি ছবিও দৃষ্টি কাড়ে৷ এসব আলোকচিত্র অষ্টাদশ শতাব্দির নিসর্গ চিত্র শিল্পী কাসপার ডেভিড ফ্রিডরিশের কথা মনে করিয়ে দেয়৷ তিনি কি দেখেছিলেন বাংলার এই অপরূপ রূপ?

কিছু ছবিতে বহু বছরের ইতিহাসও তুলে ধরা হয়েছে৷ আল নাহিয়ানের ছবিতে এক বিশাল গাছের শেকড় আষ্টেপৃষ্টে ধরে রেখেছে বহু বছরের পুরনো কীর্তিপাশা রাজবাড়ি৷ একইভাবে রেনে পেপমিলারের ছবিতে বটমূল আলিঙ্গন করে রেখেছে প্রাচীন এক শিব মন্দিরকে৷ এছাড়াও ঐতিহ্যবাহী বহু দিক প্রতিফলিত হয়েছে ‘পজিটিভ লাইট' গ্রন্থে৷ ‘পজিটিভ লাইট' ঝকঝকে ছাপার একটি বই, এমন ছাপার জন্য দৃক প্রকাশনার প্রশংসা করতেই হয়৷ এ গ্রন্থ পর্যটকদের বাংলাদেশের প্রতি হয়ত অনেক বেশি আগ্রহী করে তুলবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য