আত্মহত্যা
১২ সেপ্টেম্বর ২০১২মনোবিজ্ঞানী মেহতাব খানম মনে করেন মানুষের এতটা আত্মঘাতী হওয়ার জন্য প্রযুক্তিও দায়ী৷
সোমবার ছিল আন্তর্জাতিক আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস৷ সচেতনতা বাড়িয়ে মানুষকে জীবনমুখী রাখার জন্য বিশেষ কিছু কর্মসূচী নেয়া হয় এ দিনে৷ ছোট পরিসরে হলেও কিছু কর্মসূচি বাংলাদেশেও পালিত হয়েছে৷ আলোচনায় এসেছে একটি খবর – ঝিনাইদহ জেলার মানুষের আত্মহত্যার প্রবণতা৷
৪০ বছরে ৩২ হাজার মানুষের আত্মহত্যা করেছেন সেখানে, আরো ৫০ হাজার মৃত্যুকে বরণ করার চেষ্টায় ব্যর্থ না হলে সংখ্যাটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াতো! ঝিনাইদহ পুলিশ অবশ্য রেকর্ডে এ সংখ্যা রাখেনি৷ তাঁদের রেকর্ড বলছে, ১৯৮৮ সাল থেকে সে অঞ্চলে ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু' বরণ করেছেন মোট ১৫ হাজার ১৯৮ জন৷ সার্বিক চিত্র তুলে আনার কাজটি করেছে ঝিনাইদহের সোসাইটি ফর ভলান্টারি অ্যাকটিভিটিজ (শোভা)৷ আত্মহত্যা বিষয়ক এ গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির দেয়া তথ্য অনুযায়ী এ বছরের প্রথম ৬ মাসে ওই জেলায় আত্মহত্যা করেছে ১৫০ জন মানুষ৷
চিকিৎসাসেবা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির কারণে সে অঞ্চলে আত্মহত্যার হার কমছে৷ তারপরও প্রবণতটা কিন্তু দুশ্চিন্তার পর্যায়েই রয়েছে৷ মানুষের নিজেকে শেষ করে দেয়ার মূল কারণগুলো বলতে গিয়ে মেহতাব খানম শুরুতে দায়ী করলেন প্রযুক্তির উন্নতিকে৷ ‘‘প্রযুক্তির উন্নতির কারণে মানুষের বাইরের জগৎ ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে, আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছে মানুষ, তাই সামান্য কোনো বিপর্যয়েও নিজের কষ্ট কারো সঙ্গে ভাগাভাগি না করে ধরছে আত্মধংসের পথ৷''
এ ছাড়া আবেগপ্রবণতা, আর্থিক সঙ্কটের কথাও বলেছেন তিনি৷ ডয়েচে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষিকা আরো বলেছেন, বাংলাদেশে আত্মহত্যার প্রবণতা মেয়েদের মাঝে, বিশেষ করে বিবাহিত মেয়েদের মাঝেই বেশি৷ এ প্রবণতাকে দূরে রাখার উপায়? এ ক্ষেত্রে একটা শব্দের ওপরই জোর দিয়েছেন মেহতাব খানম – আত্মবিশ্বাস৷ সত্যিই তো, আত্মিবশ্বাসী মানুষ আত্মহননের পথ বেছে নেবে কেন!
সাক্ষাৎকার: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন