1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলায় এসে রাজ্যপালের বাংলায় হাতেখড়ি

পায়েল সামন্ত কলকাতা
২৬ জানুয়ারি ২০২৩

পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণী রাজ্যপাল নেবেন বাংলার পাঠ। আজ তার হাতেখড়ি। রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের সখ্য হিসেবে দেখা হচ্ছে এই পর্বকে। তবে ভিন্নমতও আছে৷

https://p.dw.com/p/4MkC4
Westbengalen I neu ernannter Gouverneur, C. V. Ananda Bose
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের পদে নিযুক্ত হয়ে সি ভি আনন্দ বোস বাংলা শেখার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন।ছবি: Payel Samanta/DW

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের পদে নিযুক্ত হয়েছেন সি ভি আনন্দ বোস। তিনি দক্ষিণ ভারতের কেরালা রাজ্যের মানুষ। তার মাতৃভাষা মালায়লম। ইংরেজি ও হিন্দিতে স্বচ্ছন্দ বোস তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করতে পারতেন নতুন ভাষা না শিখেই। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্ব নিয়ে তিনি বাংলা শেখার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন।

অ-আ-ক-খ পাঠ নেওয়ার সূচনা হিসেবে রাজ্যপাল সরস্বতী পুজোর দিনটি বেছে নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাজভবন প্রাঙ্গণে হাতেখড়ি পর্ব। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতের তালিকায় রয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও।

বাংলা ভাষা নিয়ে নিজের উৎসাহ আগেই প্রকাশ করেছেন বোস। গত মাসে একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমি বাংলায় বই লিখতে চাই। বাংলার সাহিত্য-সংস্কৃতির সঙ্গে আমি অনেকদিনই পরিচিত।“ রাজ্যপাল অনুবাদে রবীন্দ্রনাথের রচনা পড়েছেন, এ কথাও জানিয়েছেন “কাবুলিওয়ালা“ গল্পের প্রসঙ্গ টেনে।

শুধু তাই নয়, তিনি মনেপ্রাণে বাঙালি, এমন মন্তব্যও করেছেন রাজ্যপাল। তার বাবা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ভক্ত হওয়ায় তার নামের সঙ্গে “বোস“ জুড়েছে, এই কথাও জানিয়েছেন তিনি। ধীরে ধীরে ভাঙা বাংলাতেই কথা বলার ইচ্ছেপ্রকাশ করেছেন।

সৌহার্দ্যের পরিবেশ তৈরি করছেন নতুন রাজ্যপাল: নীলাদ্রি বন্দ্যোপাধ্যায়

এসবের পরিপ্রেক্ষিতে আপাত ভাবে রাজভবনের অনুষ্ঠানের কোনো রাজনৈতিক তাৎপর্য থাকার কথা নয়। কিন্তু বিজেপি নেতাদের একটা অংশ তা মনে করছেন না। স্বপন দাশগুপ্তের বক্তব্য, “বাংলা শেখার মধ্যে রাজনৈতিক বার্তা রয়েছে। হাতেখড়ির মাধ্যমে কি বোঝানো হচ্ছে বাংলার শিক্ষা ক্ষেত্রে সব ঠিকঠাক চলছে? পুরো শিক্ষা দপ্তর জেলে। তাই হাতেখড়ি একটা অবান্তর ব্যাপার৷’’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিজেপি নেতাদের একাংশ রাজ্য-রাজ্যপালের ঘনিষ্ঠতা ভালো চোখে দেখছেন না। বোসের বিরুদ্ধে আগেই উষ্মা প্রকাশ করেছেন বিরোধী দলনেতা। বিশেষত যেখানে বোসের পূর্বসূরি জগদীপ ধনখড় রাজ্যের কঠোর সমালোচক ছিলেন।

এ কারণেই বিজেপির এই অংশ হাতেখড়িকে রাজ্যের সম্পর্কে রাজ্যপালের নরম মনোভাব হিসেবে দেখছে। যদিও রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ রাজভবনের মুখাপেক্ষী থাকতে রাজি নন। তিনি কার্যত স্বপনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েই বলেছেন, “রাজভবনের দিকে তাকিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়’’

তৃণমূল এ নিয়ে বিজেপিকে বিঁধেছে। দলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বিজেপিকে বাংলার শত্রু আখ্যা দিয়েছেন। তাঁর মন্তব্য, “রাজ্যপাল বাংলা ভাষাকে ভালবাসেন, এতে বিজেপির গা জ্বলছে। রাজ্যপাল বাংলা শিখতে চাইলে তো তাকে উৎসাহিত করা উচিত’’

বিজেপির মধ্যে এ নিয়ে কোনো বিরোধ দেখছেন না বিজেপি নেতা, অধ্যাপক বিমলশঙ্কর নন্দ। তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, “বিজেপি চায় নজর থাকুক রাজ্যের জ্বলন্ত সমস্যায়। এ নিয়ে স্বপন দাশগুপ্তের সঙ্গে দিলীপ ঘোষের বিরোধ নেই’’

বোস রাজভবনে আসার পর রাজ্য-রাজ্যপালের সম্পর্কে তিক্ততা কমে আসছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকদের একাংশ। নীলাদ্রি বন্দ্যোপাধ্যায় ডয়চে ভেলেকে বলেন, “আনন্দ বোস রাজনীতির মানুষ নন, তিনি সফল আমলা। দুই পক্ষের মধ্যে যে বিদ্বেষের বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল, তার বদলে সৌহার্দ্যের পরিবেশ তৈরি করছেন নতুন রাজ্যপাল’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য