1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাকি ইন্টারভিউ, ডোমের চাকরি চান বায়োটেকের এমএসসি

১ সেপ্টেম্বর ২০২১

ডোমের চাকরি পাওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন বায়োটেকনলজিতে এমএসসি পাস। কলকাতার ঘটনা।

https://p.dw.com/p/3zl7O
কলকাতা মেডুক্যাল কলেজ ও হাসাপাতালে ডোমের চাকরি চান বায়োটেকনলজিতে এমএসসি। ছবি: DW/P. Samanta

লিখিত পরীক্ষায় পাস করে গেছেন। প্র্যাকটিক্যাল হয়ে গেছে। এবার ইন্টারভিউতে উতরে গেলেই ডোমের চাকরি পেয়ে যাবেন বায়োটেকনলজিতে স্নাতকোত্তর প্রার্থী। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ বা নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে ডোমের চাকরি পাওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন তিনি।

কিন্তু বায়োটেকনলজির মতো বিষয়ে এমএ পাস করেও ডোমের চাকরি নেবেন কেন? কারণ, হাতে চাকরি নেই। কিছুদিন ভুবনেশ্বরে আইআইটি-র ল্যাবে অস্থায়ীভাবে কাজ করেছিলেন। সেই কাজও আর নেই। বেঙ্গালুরু বা হায়দরাবাদে গেলে ফার্মাসিউটিক্যালে চাকরি হতে পারে। কিন্তু করোনাকালে সেখানে গিয়ে চাকরি খোঁজা সম্ভব হচ্ছে না তার পক্ষে। অন্য কোনো চাকরি পাচ্ছেন না। তাই বাড়ির মানুষদের কাছ থেকে লুকিয়ে ডোমের চাকরির জন্য আবেদন করেছেন এবং পেলে লুফে নেবেন তিনি।

কলকাতার এই ঘটনাই করোনাকালে চাকরির বাজারের অবস্থা সম্পর্কে চোখ খুলে দেয়ার পক্ষে যথেষ্ট। করোনা ও তার জেরে যখন লকডাউন শুরু হয়, তখন থেকে মানুষের চাকরি হারানোর পালা শুরু। যত সময় এগিয়েছে, ততই কোটি কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছেন। দ্বিতীয় ঢেউ কেটে যাওয়ার পর এখন অনেক রাজ্যের অবস্থা অনেকটাই স্বাভাবিক। সবকিছু খুলে গেছে। মোদী সরকারের দাবি, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত বৃদ্ধির হার ২০ দশমিক এক শতাংশ। গতবছর এই সময় মাইনাসে ছিল। তাই বিজেপি প্রচার শুরু করে দিয়েছে, মোদীর নেতৃত্বে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং ভারতের ইতিহাসে সব চেয়ে বেশি বৃদ্ধি হয়েছে এপ্রিল থেকে জুন কালখণ্ডে।

কিন্তু বাস্তব ছবি তো সেকথা বলছে না। না হলে বায়োটেকনলজিতে এমএ পাস করে কেন ডোমের চাকরিরর জন্য আবেদন করতে হচ্ছে? সরকারের প্রধান আর্থিক উপদেষ্টা সুব্রমণ্যম, নীতি আয়োগের  রাজীব কুমার, অমিতাভ কান্তরা বলছেন, বৃদ্ধির হার আরো বাড়বে। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও বলছেন, অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু সাবেক প্রধান পরিসংখ্যানবিদ প্রণব সেন বলেছেন, সরকারের আয় বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু খরচ কম হয়ে গেছে।

বাস্তব ছবি বলছে, ডোমের লিখিত পরীক্ষায় পাস করার পর ৩৭জনকে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়েছিল। ৩৬ জন এসেছিলেন। তার মধ্যে অনেকেই এমএ পাস। একজন বাংলায়, একজন এডুকেশনে। এই পদের জন্য অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনো জানলেই চলে। মোট ছয়জন ডোমকে নেয়া হবে। তার মধ্যে এমএ পাস প্রার্থীরা কি চাকরি পাবেন? প্রার্থীরা জানিয়েছেন, তারা চাকরি পাবেন কি না জানেন না, তবে পেলেই করবেন। আর কী কাজ করতে হবে, সে সম্পর্কে তাদের ধারণা আছে। ফলে সব জেনেশুনেই তারা আবেদন করেছেন। চাকরি পেলে না নেয়ার প্রশ্নই উঠছে না। বাজারে চাকরি দুষ্প্রাপ্য।

অর্থনীতি আবার ঝলমল করছে, বাউন্স ব্যাক করেছে বলে যে প্রচার চলছে, তার সঙ্গে এই বাস্তব ছবি খাপ খাচ্ছে কি?

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, আনন্দবাজার)